ধৃত ভুয়ো চিকিৎসক

স্থানীয় ও প্রশাসনিক সূত্রে খবর, বাঁশথুপি গ্রামে শলাইডাঙা প্রাইমারি স্কুলের পাশে বেশ কয়েক বছর ধরে চেম্বার খুলে গ্রামবাসীদের চিকিত্সা করছেন আবদুর রহমান। চেম্বারের সঙ্গে বড়সড় একটি ওষুধের দোকানও রয়েছে।

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

মালদহ শেষ আপডেট: ২২ জুলাই ২০১৭ ০১:৫৬
Share:

ধৃত: আবদুর রহমানকে নিয়ে আসছে পুলিশ। নিজস্ব চিত্র

একটি ব্লাড কালেকশন সেন্টার খোলা এবং ওষুধের দোকান ও চেম্বারকে ভাল করে সাজাতে স্বামী বিবেকানন্দ কর্মসংস্থান প্রকল্পে ঋণ পেতে তিনি আবেদন করেছিলেন। সেই আবেদনের ভিত্তিতে শুক্রবার ইন্টারভিউ নেন খোদ জেলাশাসক। অভিযোগ, সেখানে তিনি নিজেকে ডাক্তার হিসেবেই পরিচয় দেন ও একটি সার্টিফিকেটও দেখান। আর সেই ‘ভুয়ো’ সার্টিফিকেটে দেখানোর অভিযোগের জেরেই এ দিন সন্ধ্যায় নিজের চেম্বার থেকে গ্রেফতার হলেন সেই ডাক্তার।

Advertisement

সিল করে দেওয়া হয় চেম্বার কাম ওষুধের দোকান। এ ঘটনা মালদহ জেলার গাজোলের শলাইডাঙা গ্রাম পঞ্চায়েতের বাঁশথুপি গ্রামের। গাজোল থানার পুলিশ জানিয়েছে, ধৃতের নাম আবদুর রহমান (৪৩)। বাড়ি বাঁশথুপি গ্রামেই। মালদহ সদরের অতিরিক্ত মুখ্য স্বাস্থ্য আধিকারিকের অভিযোগের ভিত্তিতে তাঁকে গ্রেফতার করা হয়েছে। পুলিশ সুপার অর্ণব ঘোষ বলেন, ওই ব্যক্তিকে গ্রেফতার করে তদন্ত শুরু করা হয়েছে। শনিবার তাঁকে আদালতে তোলা হবে।

স্থানীয় ও প্রশাসনিক সূত্রে খবর, বাঁশথুপি গ্রামে শলাইডাঙা প্রাইমারি স্কুলের পাশে বেশ কয়েক বছর ধরে চেম্বার খুলে গ্রামবাসীদের চিকিত্সা করছেন আবদুর রহমান। চেম্বারের সঙ্গে বড়সড় একটি ওষুধের দোকানও রয়েছে। ডাক্তার হিসেবে একটি সাইনবোর্ডও ঝুলিয়েছিলেন। তবে ভুয়ো ডাক্তার নিয়ে রাজ্য জুড়ে একের পর এক তথাকথিত ডাক্তার গ্রেফতারের জেরে সেই সাইনবোর্ডের লেখা তুলে দেওয়া হয়।

Advertisement

এ দিকে, সেই চেম্বার ও ওষুধের দোকানকে ঢেলে সাজা এবং সেখানেই একটি ব্লাড কালেকশন সেন্টার খুলতে তিনি স্বামী বিবেকানন্দ কর্মসংস্থান প্রকল্পে আড়াই লক্ষ টাকা ঋণ পেতে কয়েক মাস আগে গাজোল বিডিও অফিসে আবেদন করেন। গাজোলের একটি সমবায় ব্যাঙ্কের নামও তিনি আবেদন পত্রে লিখেছিলেন। ঝাড়াই-বাছাইয়ের পর সরকারি সেই ঋণ অনুমোদনের ব্যাপারে শুক্রবার ছিল ইন্টারভিউ। ঘটনাচক্রে ওই সমবায় ব্যাঙ্কের জেলা শাখার প্রশাসক খোদ মালদহের জেলাশাসক কৌশিক ভট্টাচার্য এবং এ দিন তিনি সেই ইন্টারভিউ নেন। অভিযোগ, সেখানে আবদুর রহমান নামে ওই ব্যক্তি নিজেকে ডাক্তার বলে পরিচয় দেন। তাঁর সার্টিফিকেট দেখতে চাইলে একটি সার্টিফিকেটও দেখান। সন্দেহ মনে হওয়ায় মোবাইলে সেটির ছবি তুলে জেলাশাসক জেলার মুখ্য স্বাস্থ্য আধিকারিক দিলীপ কুমার মণ্ডলকে তদন্ত করতে বলেন। মুখ্য স্বাস্থ্য আধিকারিক সেই সার্টিফিকেট ‘ভুয়ো’ বলে জানাতেই জেলাশাসক তাঁকে পদক্ষেপের নির্দেশ দেন।

এ দিন বিকেলেই মালদহ সদরের অতিরিক্ত মুখ্য স্বাস্থ্য আধিকারিক নারায়ণচন্দ্র দাস, গাজোলের ব্লক স্বাস্থ্য আধিকারিক সুজন অধিকারী ও গাজোল থানার পুলিশ সেই চেম্বার কাম ওষুধের দোকানে হানা দেন। সে সময় তিনি জাঁকিয়ে ‘প্র্যাকটিস’ করছিলেন। মুখ্য স্বাস্থ্য আধিকারিক বলেন, ইন্ডিয়ান কাউন্সিল অব অল্টারনেটিভ মেডিসিনের নামে তাঁর কাছে যে সার্টিফিকেট রয়েছে, সেটি ভুয়ো। লাইসেন্স ছাড়াই চলছে ওষুধের দোকান। ওই চেম্বার কাম ওষুধের দোকানও সিল করে দেওয়া হয়েছে। জেলাশাসক বলেন, ইন্টারভিউয়ের সময় ডাক্তারির সার্টিফিকেট দেখেই আমার সন্দেহ হয়েছিল। জেলা স্বাস্থ্য দফতরকে পদক্ষেপ করতে বলি। ধৃত অবশ্য জানিয়েছেন, তিনি জেলার অন্য হাতুড়ে ডাক্তারদের মতোই সেখানে চিকিত্সা করেন।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন