গৌড়বঙ্গে বহু অনিয়ম, ক্ষুব্ধ পড়ুয়া

বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষের উদাসীনতা ও গাফিলতির ফল ভুগতে হচ্ছে পড়ুয়াদের। উপাচার্য স্বাগত সেন বলেন, “আমি দায়িত্ব নেওয়ার আগেই ফলাফল প্রকাশিত হয়েছিল।’’

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

মালদহ শেষ আপডেট: ৩০ জানুয়ারি ২০১৮ ০২:৩১
Share:

ছবি: সংগৃহীত

পরীক্ষা দেওয়া সত্ত্বেও অনুপস্থিত দেখানো হয়েছে পরীক্ষার্থীকে। এমনকী, বদলে গিয়েছে বিষয়ও। শুধু তাই নয়, গ্রেস নম্বর দিয়ে ঢালাও ভাবে পাশ করানো হয়েছে ছাত্র-ছাত্রীদের। গৌড়বঙ্গ বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রথম এবং দ্বিতীয় বর্ষের ফলাফল নিয়ে তদন্তে নেমে এমনই তথ্য উঠে আসায় হতচকিত তদন্ত কমিটির প্রতিনিধিরা।

Advertisement

এমন ঘটনা প্রকাশ্যে আসতেই ক্ষোভ ছড়িয়েছে ছাত্র-ছাত্রীদের মধ্যে। তাঁদের দাবি, ভুলে ভরা ফলাফল প্রকাশিত হয়েছে। তাছাড়া আবশ্যিক বাংলায় গড়ে নম্বর দেওয়া হয়েছে। তাঁদের ক্ষোভ, বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষের উদাসীনতা ও গাফিলতির ফল ভুগতে হচ্ছে পড়ুয়াদের। উপাচার্য স্বাগত সেন বলেন, “আমি দায়িত্ব নেওয়ার আগেই ফলাফল প্রকাশিত হয়েছিল। তবে কিছু পরীক্ষার্থী ফলাফল নিয়ে অসন্তোষ প্রকাশ করে অভিযোগ জানিয়েছিল। সেই অভিযোগের ভিত্তিতে কমিটি গড়ে তদন্ত চলছে।” পরীক্ষার্থীদের পূনর্মূল্যায়ণের ফলাফল সপ্তাহখানেকের মধ্যে প্রকাশের চেষ্টা চলছে বলে জানিয়েছেন তিনি।

গত, ২৮ নভেম্বর গৌড়বঙ্গ বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রথম ও দ্বিতীয় বর্ষের ফলাফল প্রকাশিত হয়। ফলাফল প্রকাশ নিয়ে ছাত্রছাত্রীরা লাগাতার ঘেরাও আন্দোলন চালিয়েছিল। আন্দোলনের জেরে পরীক্ষা শেষ হওয়ার প্রায় তিন মাসের মাথায় ফলাফল প্রকাশ হয়। তারপরেও ফলাফল নিয়ে অসন্তোষ প্রকাশ করে ফের ঘেরাও আন্দোলন শুরু করে পড়ুয়ারা। অভিযোগ, ভুলে ভরা ফলাফল প্রকাশ করা হয়েছে। অধিকাংশ পরীক্ষার্থীকে গড়ে নম্বর দেওয়া হয়েছে। শুধু তাই নয়, একাধিক পরীক্ষার্থীর বিষয় বদলে দেওয়ারও অভিযোগ ওঠে। এমনকী, বহু পরীক্ষার্থী বিভিন্ন বিষয়ে শূন্যও পেয়েছে।

Advertisement

এই পরিস্থিতির মধ্যেই উপাচার্য পদ থেকে ইস্থফা দেন গোপালচন্দ্র মিশ্র। তাঁর পরিবর্তে গৌড়বঙ্গ বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্যের দায়িত্ব পান কলকাতা বিশ্ববিদ্যালয়ের পদত্যাগী সহকারী উপাচার্য স্বাগত সেন। তিনি দায়িত্ব নেওয়ার পরই ফলাফল নিয়ে আট সদস্যের একটি তদন্ত কমিটি গঠন করেন। সেই কমিটিকে পুরো ঘটনাটি খতিয়ে দেখে রিপোর্ট পেশের নির্দেশ দেন তিনি। সেই তদন্তেই এ সব তথ্য উঠে এসেছে।

জানা গিয়েছে, গড়ে নম্বর দেওয়ার সঙ্গেই নিয়ম ভেঙে বহু পরীক্ষার্থীকে গ্রেস নম্বর দিয়ে পাশ করানো হয়েছে। এক থেকে আট নম্বর পর্যন্ত গ্রেস নম্বর দেওয়া হয়েছে। কর্তৃপক্ষের দাবি, পরীক্ষা কমিটির বৈঠক বা এক্সজিকিউটিভ কাউন্সিলের বৈঠকেও বিষয়টি জানানো হয়নি। ফলে কীভাবে গ্রেস নম্বর দেওয়া হল তা নিয়ে প্রশ্ন উঠেছে। তদন্ত কমিটির এক প্রতিনিধি বলেন, “স্নাতক বা স্নাতকোত্তরের ক্ষেত্রে প্রয়োজনে গ্রেস নম্বর দেওয়া যায়। তবে প্রথম ও দ্বিতীয় বর্ষে এমন নিয়ম নেই।” পুরো বিষয়টি খতিয়ে দেখে প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ করা হবে বলে জানিয়েছেন স্বাগতবাবু।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন