বাগডোগরায় অহলুওয়ালিয়া। ছবি: সন্দীপ পাল
সকালে মোর্চা এবং গ্রেটার নেতাদের পাশে ডেকে নিয়ে রাজনৈতিক চাপ। বিকেলে, বাম মেয়র এবং সভাধিপতির ‘অভিযোগ’ শুনে রাজ্যকে বরাদ্দ টাকার খরচ নিয়ে রিপোর্ট চেয়ে প্রশাসনিক চাপ। কেন্দ্রীয় প্রতিমন্ত্রীর শপথ নেওয়ার পরে প্রথম নিজের সাংসদ এলাকায় এসে রাজ্যের ওপরে রাজনৈতিক-প্রশাসনিক দুই চাপ রাখার কৌশলে হাঁটলেন সুরিন্দ্র সিংহ অহলুয়ালিয়া।
এ দিন দুপুর সাড়ে বারোটা নাগাদ বিমান থেকে নামেন দার্জিলিঙের বিজেপি সাংসদ। সংসদ বিমানবন্দর থেকে বের হতেই চারদিক থেকে ঘিরে ধরেন গোর্খা জনমুক্তি মোর্চা এবং গ্রেটার কোচবিহার পিপলস অ্যাসোসিয়েশনের কর্মী-সমর্থকরা। তাঁর সামনেই শুরু হয় কখনও গোর্খাল্যান্ডের দাবিতে স্লোগান, কখনও গ্রেটার কোচবিহার রাজ্যের নামে জয়ধ্বনি। এই ঘটনায় অস্বস্তিতে পড়ে যান সমতলের বিজেপি নেতা-কর্মীরা। ভিড় থেকে কিছুটা সরেও দাঁড়াতে দেখা যায়। শেষে অহলুওয়ালিয়াই হাত নেড়ে দুই দলকে থামতে অনুরোধ করেন। এ দিন মন্ত্রীর সঙ্গেই দিল্লি থেকে বাগডোগরা ফেরেন মোর্চা সভাপতি বিমল গুরুঙ্গ। বিমানবন্দরে মন্ত্রীকে স্বাগত জানাতে উপস্থিত ছিলেন গ্রেটারের নেতা অনন্ত রায়।
গোর্খাল্যান্ড সহ পৃথক রাজ্যের নানা দাবিতে সাংসদ অহলুওয়ালিয়ার অবস্থান নিয়ে সমতলের রাজনীতিতে বির্তক রয়েছে। অহলুওয়ালিয়া অবশ্য বলেছেন, ‘‘গোর্খাল্যান্ডের দাবি গুরুঙ্গদের মূল স্লোগান। আমি কাউকে থামাতে পারি না।’’ এ দিন গুরুঙ্গকে দিল্লি থেকে সঙ্গে নিয়ে ফিরেছেন কেন্দ্রীয় প্রতিমন্ত্রী। গ্রেটারের নেতা অনন্ত রায়কেও পাশে ডেকে নিয়েছেন একই সমীকরণে। মন্ত্রী হিসেবে প্রথম বার উত্তরবঙ্গের মাটিতে পা রেখে দুই সংগঠনকেই কাছে ডেকে রাজ্যের ওপরে রাজনৈতিক চাপ তৈরির চেষ্টা করলেন এই নেতা।
অন্যদিকে, এ দিন বিকেলে জেলার উন্নয়ন বিষয়ক কমিটি ‘দিশা’র প্রথম বৈঠক হয়েছে। এখানে কেন্দ্রীয় প্রকল্পেও রাজ্য পুরসভা এবং মহকুমা পরিষদকে অর্থ বরাদ্দ করছে না বলে অভিযোগ করেন শিলিগুড়়ির মেয়র অশোক ভট্টাচার্য এবং মহকুমা পরিষদের সভাধিপতি তাপস সরকার। অহলুওয়ালিয়া বলেন, ‘‘এমনটা বাঞ্ছনীয় নয়। সংবিধান মেনেই কাজ করতে হয়। কেন্দ্রীয় প্রকল্পে জেলায় কোথায় কী বরাদ্দ হয়েছে তা জানতে চাওয়া হয়েছে।’’
বৈঠকের শেষে কেন্দ্রীয় মন্ত্রীর পাশে বসে সাংবাদিক বৈঠকও করেছেন অশোকবাবুরা। তবে বৈঠকের পরে অবশ্য রাজনৈতিক ভাবে দূরত্ব বজায় রেখে মোর্চা-গ্রেটারের সঙ্গে কেন্দ্রীয় মন্ত্রীর ঘনিষ্ঠতা প্রসঙ্গে অশোকবাবু বলেন, ‘‘উনি (সাংসদ) বরাবরই পাহাড়ে এক সমতলে অন্য কথা বলেন। যে আগুন নিয়ে খেলছেন, পরে ওই আগুনেই হাত পুড়বে।’’
কেন্দ্রীয় মন্ত্রী হয়ে প্রথমবার অহলুয়ালিয়ার জেলায় আসা প্রসঙ্গে রাজ্যের পর্যটন মন্ত্রী গৌতম দেব বলেন, ‘‘ কেন্দ্রীয় মন্ত্রীর সামনে বিচ্ছিন্নতার স্লোগান উঠল, তিনি তা প্রশ্রয় দিলেন এর থেকে দুর্ভাগ্যজনক কিছু হয় না।’’