কোকরাঝাড়ে জঙ্গি হামলার জেরে অসম সীমানার আলিপুরদুয়ার জেলার কুমারগ্রাম, কামাখ্যাগুড়ি, বারবিশা, শামুকতলা সহ গোটা এলাকার বাসিন্দাদের মধ্যে আতঙ্ক ও উদ্বেগ ছড়িয়ে পড়ে। এই সমস্ত এলাকা থেকে প্রতিদিন কয়েকশো মানুষ ব্যবসার কাজে অসমে যান। কোকরাঝাড়ের বিভিন্ন প্রান্তে বিভিন্ন সামগ্রী বিক্রি করে রাতে বাড়ি ফিরে আসেন। অনেক পরিবারের লোকজনই কোকরাঝাড়ে রয়েছেন। তাঁরা টিভিতে জঙ্গি হামলার খবর দেখে আতঙ্কিত হয়ে পড়েন। প্রিয়জনদের খবর নিতে শুরু করেন।
কুমারগ্রামের বাসিন্দা প্রদীপ দে। প্রতিদিনের মত শুক্রবার কোকরাঝাড় গিয়েছেন ব্যাগ বিক্রি করতে। জঙ্গি হানার খবর পেয়ে তাঁর ভাই বিকাশ আতঙ্কিত হয়ে পরেন। পরে দাদাকে টেলিফোন করে জানতে পারেন তিনি অক্ষত রয়েছেন। বিকাশবাবু জানালেন ‘‘এভাবে প্রাণ হাতে নিয়ে দাদাকে আর অসমে ব্যবসা করতে যেতে দেব না।’’
শামুকতলা এলাকার বাসিন্দা প্রাথমিক শিক্ষক বিপ্লব দেবনাথের বৌদি শিপ্রাদেবী তাঁর দুই ছেলে মেয়েকে নিয়ে কোকরাঝাড়ের বড়বাজার এলাকায় থাকেন।
বিপ্লববাবু জঙ্গি হানার খবরে উদ্বিগ্ন হয়ে পড়েন। টেলিফোনে তাদের সঙ্গে কথা বলে জানতে পারেন তারা ভাল আছেন। শিপ্রাদেবী টেলিফোনে বলেন, ‘‘জঙ্গি হামলার খবরে আমি আতঙ্কিত হয়ে পড়েছিলাম। মেয়ে তানিশা তখন কলেজে। ছেলে স্কুলে। কী করব ভেবে পাচ্ছিলাম না। কিছুক্ষণের মধ্যে ওরা বাড়ি ফিরে আসার পর স্বস্তি পাই। স্বামীর এখানে ব্যবসা ছিল।
তাঁর মৃত্যুর পর ছেলে মেয়ের পড়াশোনার জন্য এখানে রয়েছি। এমন আতঙ্ক নিয়ে কি ভাবে থাকব সেটা ভেবে কুল পাচ্ছি না।’’
বারবিশা ব্যবসায়ী সমিতির সম্পাদক কার্তিক সাহা বলেন, ‘‘এই এলাকা থেকে প্রতিদিন তিন থেকে চারশো ব্যবসায়ী অসমে ব্যবসা করতে যান। অসমের ব্যবসায়ী এবং সাধারণ মানুষ বারবিশা কামাখ্যাগুড়িতে কেনাকাটা করতে আসেন। এর ফলে এলাকার ব্যবসায় ক্ষতির আশঙ্কা রয়েছে। আমরা নিরাপত্তার অভাব বোধ করছি।’’ সন্ধ্যায় পুলিশের সঙ্গে বৈঠকে নিরাপত্তা জোরদার করার দাবি জানিয়েছেন তাঁরা।