অনন্ত রায়
গ্রেটারের কোচবিহারের নেতা অনন্ত রায়ের কাজকর্ম নিয়ে স্পষ্ট সন্দেহ প্রকাশ করে মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের কাছে তদন্তের আর্জি পাঠাল কামতাপুর প্রোগ্রেসিভ পার্টি (কেপিপি)। সোমবার কেপিপি-র সাত সদস্যের একটি প্রতিনিধি দল উত্তরবঙ্গের এডিজি নটরাজন রমেশবাবুর সঙ্গে দেখা করে ওই স্মারকলিপি দেন। তাতে রাজবংশী ভাষার স্বীকৃতির দাবির পাশাপাশি অনন্তবাবুর বিরুদ্ধে তদন্ত দাবি করা হয়েছে। কেপিপি-র অভিযোগ, ‘‘স্বঘোষিত ধর্মগুরু সেজে ধর্মীয় ফতোয়া জারি করে রাজবংশী সমাজকে ‘ভুল পথে’ চালাতে চাইছে অনন্তবাবু।’’ সমাজে ‘বিভাজন’ তৈরি, অবৈধ কাজকর্মের অভিযোগও অনন্ত রায়ের বিরুদ্ধে তুলেছে কেপিপি। গ্রেটার কোচবিহারের তরফে অবশ্য পাল্টা দাবি করে জানানো হয়েছে, কেপিপির তোলা যাবতীয় অভিযোগ ভিত্তিহীন এবং উদ্দেশ্যপ্রণোদিত।
এ দিন দুপুরে কেপিপি নেতারা সাংবাদিকদের জানান, তাঁদের প্রথম অভিযোগ, নগেন্দ্র ওরফে অনন্ত রায় নিজের নামের সঙ্গে মহারাজ জুড়ে স্বঘোষিত ধর্মগুরু হয়ে সাধারণ রাজবংশীদের প্রতারণা করছেন। অভিযোগ দুই, তিনি সমাজে নানা ধর্মীয় ফতোয়া জারি করেছেন। তার জেরে রাজবংশী সমাজে অস্থিরতা তৈরি হয়েছে এবং সম্প্রীতি নষ্ট হচ্ছে। কোচবিহার রাজবাড়ির আদলে প্রাসাদ তৈরি করে সাধারণ বাসিন্দাদের থেকে অবৈধ ভাবে টাকা তুলে বিলাসবহুল কর্মকাণ্ড চালাচ্ছেন বলেও অনন্তবাবুর বিরুদ্ধে অভিযোগ তোলা হয়েছে। প্রাসাদের ভিতরে ঠিক কী হচ্ছে, তা নিয়ে তদন্তও দাবি করেছে কেপিপি।
কেপিপি-র সাধারণ সম্পাদক উত্তম রায়ের অভিযোগ, ‘‘ধর্মের নামে প্রতিদিন টাকা তোলা হচ্ছে। সাধারণ রাজবংশীদের প্রতারণা করছে অনন্তবাবু ওরফে নগেন্দ্র রায়।’’ কেপিপির সভাপতি অতুল রায় অবশ্য স্মারকলিপি দেওয়া অথবা সাংবাদিক বৈঠক, কোনটিতেই উপস্থিত থাকেননি। পারিবারিক কারণে তিনি ব্যস্ত ছিলেন বলে দাবি করা হয়েছে। পরে অতুলবাবু বলেন, ‘‘সংবিধান বহির্ভূত ভাবে অনন্ত রায় ওরফে নগেন্দ্র রায় রাজবংশীদের ধর্মীয় আচার আচরণে বাধা তৈরি করছে। প্রশাসন এখনই পদক্ষেপ না করলে বিপজ্জনক পরিস্থিতি তৈরি হবে।’’
সোমবার অনন্তবাবুর সঙ্গে মোবাইলে যোগাযোগ করা যায়নি। গ্রেটার কোচবিহার পিপলস অ্যাসোসিয়েশনের সভাপতি নির্মল রায় পাল্টা বলেন, ‘‘কে কোন উদ্দেশ্য নিয়ে কী কথা বলছে, তা আমরা জানি না। অনন্তবাবু আমাদের মহারাজা। সমাজের অত্যন্ত শ্রদ্ধেয়। তাঁর সম্পর্কে যা অভিযোগ তোলা হয়েছে তা পুরোপুরি ভিত্তিহীন।’’
রাজবংশী সংগঠনের নেতাদের একাংশের দাবি, গ্রেটার কোচবিহারের কিছু নেতা সামাজিক এবং রাজনৈতিক বিষয়ের মধ্যে ধর্ম জুড়ে দিয়ে পুরো সম্প্রদায়কে নিজেদের দিকে টানতে চাইছে। সে কারণেই উদ্বিগ্ন হয়ে পড়েছে অন্য সংগঠনগুলি। তাই প্রশাসনিক হস্তক্ষেপই চাইছেন কেপিপি নেতারা।