মাতৃসদনে বেশি টাকা দাবি, ক্ষোভ রায়গঞ্জে

পুরসভা পরিচালিত মাতৃসদনের বিরুদ্ধেই রোগীদের কাছ থেকে অতিরিক্ত টাকা আদায়ের অভিযোগ উঠল। চিকিত্সাধীন দুই প্রসূতির পরিবারের দাবি, তাঁদের ছুটি দেওয়ার সময়ে চিকিত্সার খরচের বিল না দিয়ে বেশি টাকা চাওয়া হয়েছে।

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

রায়গঞ্জ শেষ আপডেট: ২৩ সেপ্টেম্বর ২০১৬ ০৩:১৩
Share:

রায়গঞ্জ হাসপাতালে বিক্ষোভ। নিজস্ব চিত্র।

পুরসভা পরিচালিত মাতৃসদনের বিরুদ্ধেই রোগীদের কাছ থেকে অতিরিক্ত টাকা আদায়ের অভিযোগ উঠল। চিকিত্সাধীন দুই প্রসূতির পরিবারের দাবি, তাঁদের ছুটি দেওয়ার সময়ে চিকিত্সার খরচের বিল না দিয়ে বেশি টাকা চাওয়া হয়েছে।

Advertisement

বৃহস্পতিবার দুপুরে ওই অভিযোগকে কেন্দ্র করে উত্তেজনা ছড়ায় হাসপাতাল চত্বরে। ওই দুই প্রসূতির পরিবারের লোকেদের বিল দেওয়া ও চিকিত্সার খরচ কমানোর দাবিতে এ দিন হাসপাতাল চত্বরে বিক্ষোভ দেখান যুব তৃণমূলের একদল সদস্য। প্রায় এক ঘণ্টা বিক্ষোভ চলার পরে হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ দুই প্রসূতির চিকিত্সার খরচ কম নেওয়ার আশ্বাস দিলে পরিস্থিতি স্বাভাবিক হয়। তবে শেষ পর্যন্ত অবশ্য হাসপাতালের তরফে দুই প্রসূতির পরিবারের লোকেদের বিল না দিয়েই চিকিত্সার খরচ নেওয়া হয় বলে অভিযোগ। যুব তৃণমূলের তরফে এই বিষয়ে পুরসভার প্রশাসক তথা রায়গঞ্জের মহকুমাশাসকের কাছে লিখিত অভিযোগ জানানো হয়েছে।

মহকুমাশাসক থেণ্ডুপ নামগিয়েল শেরপা বলেন, ‘‘অভিযোগ খতিয়ে দেখা হচ্ছে। হাসপাতালের কোনও আধিকারিক বা কর্মীর বিরুদ্ধে অভিযোগ প্রমাণিত হলে আইনানুগ ব্যবস্থা নেওয়া হবে।’’

Advertisement

হাসপাতাল সূত্রের খবর, প্রসব যন্ত্রণা শুরু হওয়ায় সোমবার দুপুরে রায়গঞ্জের রুনিয়া এলাকার বাসিন্দা আলপনা বর্মন ও করণদিঘির মনিপাড়া এলাকার বাসিন্দা দীপালি দাস নামে দুই প্রসূতি হাসপাতালে ভর্তি হন। রাতে অস্ত্রোপচারের মাধ্যমে আলপনাদেবী পুত্রসন্তান ও দীপালিদেবী কন্যাসন্তান প্রসব করেন। এ দিন সকালে তাঁদের ছুটি দিয়ে দেন হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ।

আলপনাদেবীর স্বামী পেশায় চাষি লালমোহন বর্মনের অভিযোগ, হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ চিকিত্সার খরচ বাবদ তাঁর কাছে ১১ হাজার টাকা দাবি করেন। দীপালিদেবীর স্বামী পেশায় দিনমজুর অজয় দাসের অভিযোগ, একই সময়ে হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ তাঁর স্ত্রীর চিকিত্সার খরচ বাবদ তাঁর কাছে ১২ হাজার ৫০০ টাকা দাবি করেন। তাঁদের অভিযোগ, কিছুক্ষণ পরেই হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ লালমোহনবাবুর কাছে ১৫ হাজার ও অজয়বাবুর কাছে ১৩ হাজার ৬০০ টাকা দাবি করেন। ওই টাকা না দিলে তাঁদের স্ত্রীদের ছুটি দেওয়া হবে না ও চিকিত্সার খরচের কোনও বিল দেওয়া হবে না বলে হাসপাতালের তরফে জানিয়ে দেওয়া হয়। এরপরেই তাঁরা স্থানীয় যুব তৃণমূল নেতাদের দ্বারস্থ হন। যুব তৃণমূলের আন্দোলনের চাপে এরপর হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ লালমোহনবাবুর কাছ থেকে পূর্ব নির্ধারিত ১১ হাজার ও অজয়বাবুর কাছ থেকে ১২ হাজার ৫০০ টাকা নেন।

যুব তৃণমূলের রায়গঞ্জ শহর কার্যকরী সভাপতি প্রদীপ্ত রায়চৌধুরী ও সাধারণ সম্পাদক মিঠুন বাঁশফোরের দাবি, দীর্ঘ দিন ধরে হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ প্রসূতিদের পরিবারের লোকেদের বিল না দিয়ে তাঁদের কাছ থেকে বেআইনি ভাবে চিকিত্সার খরচ বাবদ বেশি টাকা আদায় করছেন।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
আরও পড়ুন