ফরমাস খাটা বন্ধ

ব্রিটিশ আমল থেকেই এমন প্রথা ভারতীয় রেলে চলছে বলে দাবি। এ বার রেল বোর্ড নির্দেশ দিয়ে এই প্রথা বন্ধ করতে উদ্যোগী হয়েছে।

Advertisement

অনির্বাণ রায়

শিলিগুড়ি শেষ আপডেট: ০৮ জানুয়ারি ২০১৮ ০৬:১০
Share:

প্রতীকী ছবি।

রেল লাইনে নজরদারি করা যাঁদের কাজ, মাঝেমধ্যে তাঁদের ‘সাহেব’দের বাজারের ব্যাগও বইতে হয়। কর্তাদের আবাসনে বাজার পৌঁছে দেওয়া, ফাই-ফরমাস খেটে দেওয়ার জন্যও গ্যাংম্যানদের ডাক পড়ে বলে রেলের অন্দরে চর্চা রয়েছে। ব্রিটিশ আমল থেকেই এমন প্রথা ভারতীয় রেলে চলছে বলে দাবি। এ বার রেল বোর্ড নির্দেশ দিয়ে এই প্রথা বন্ধ করতে উদ্যোগী হয়েছে।

Advertisement

ইংরেজ আমলে চালু থাকা এই প্রথা কোনও ভাবেই বরদাস্ত করা হবে না বলে রেল বোর্ডের চেয়ারম্যান স্পষ্ট নির্দেশ দিয়েছেন। সেই সঙ্গে গুরুত্বপূর্ণ পরিদর্শনের পরে পানভোজনের পার্টিও চলবে না বলে জানানো হয়েছে। রেল কর্তাদের স্ত্রীদের ‘ওয়েলফেয়ার’ সমিতি রয়েছে। সেই সমিতিগুলোর অনুষ্ঠানেও রাশ টেনেছে রেলবোর্ড। আধিকারিকদের একাংশের দাবি, রেলের বন্ধে ঢুকে পড়া অনিয়ম দূর করতেই এমন উদ্যোগ।

বছরখানেক আগে কাটিহার বিভাগে পরিদর্শনে এসেছিলেন উত্তর পূর্ব সীমান্ত রেলের তৎকালীন জেনারেল ম্যানেজার। রেল লাইন পরিদর্শনে গিয়ে গ্যাংম্যানদের সঙ্গেও কথা বলে ক্ষোভ প্রকাশ করেন। কয়েকজন গ্যাংম্যান নিজেদের কাজ এবং কত ক্ষণ কাজ করতে হয় সে সম্পর্কে যথাযথ জানাতেই পারেননি। খোঁজ নিয়ে জেনারেল ম্যানেজার জানতে পারেন তাঁরা এতদিন পাঁচ রেল কর্তার আবাসনে কাজ করেছেন। পরিদর্শনের জন্য তড়িঘড়ি তাঁদের রেল লাইনে পাঠানো হয়েছে। যেহেতু রেলে এমন প্রথাই চলে এসেছে সে সবয় কোনও পদক্ষেপই নেওয়া হয়নি। নিউ জলপাইগুড়ি বিভাগের পদস্থ এক রেল কর্তার কথায়, ‘‘লাইন দেখভালের জন্য কত জন কর্মী প্রয়োজন ঠিক সে সংখ্যই গ্যাংম্যান নেওয়া হয়। অধিকাংশ জায়গায় গ্যাংম্যানের সংখ্যা কম। তারপরেও যদি বড় সাহেবদের আবাসনে গ্যাংম্যানদের পাঠানো হয় তবে নজরদারির কাজ হবে কী করে।’’

Advertisement

রেল বোর্ডের নির্দেশ পেয়ে কাটিহার বিভাগ থেকেও সব গ্যাংম্যানদের লাইনে ফিরিয়ে আনার প্রক্রিয়া শুরু হয়েছে। কোনও রেল কর্তার বাড়ির কাজ গ্যাংম্যানদের করতে দেখা গেলে সেই কর্তার বিরুদ্ধেই পদক্ষেপ করা হবে বলে জানানো হয়েছে। নিউ জলপাইগুড়ি স্টেশনের পাশেই রয়েছে রেলের বিলাসবহুল অতিথি নিবাস। যে কোনও পরিদর্শনের পরে সেখানেই খানাপিনার পার্টি বসাটা দস্তুর। সরকারি সূচিতে তার উল্লেখ্যও থাকে। কর্মীদের একাংশের অভিযোগ, পাটির আয়োজনে টাকা অপচয় যেমন হয় তেমনই নানা বেসরকারি এজেন্সিকেও ডাকা হয়। রেল বোর্ডের নির্দেশে আপাতত সবেতেই দাঁড়ি।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন