অভিযান: মাটিগাড়ায় প্রশাসনিক বৈঠকে পর্যটনমন্ত্রী গৌতম দেব, জেলাশাসক জয়সী দাশগুপ্ত প্রমুখ। নিজস্ব চিত্র
মহকুমার মাটিগাড়া ব্লক সহ বিভিন্ন জায়গায় রেশন ব্যবস্থা নিয়ে অনিয়ম ও দুর্নীতির অভিযোগ উঠেছে। সেই প্রসঙ্গ উঠে এল বুধবার মাটিগাড়া ব্লকের প্রশাসনিক বৈঠকেও। ব্লক অফিসে এদিন বৈঠকের পর পর্যটনমন্ত্রী গৌতম দেব অবিলম্বে দার্জিলিংয়ের জেলাশাসক জয়সী দাসগুপ্তকে নিয়ে একটি আলাদা বৈঠক করে সমস্যার সমাধান করতে বলেছেন। বৈঠকে হাজির ছিলেন শিলিগুড়ি মহকুমা পরিষদের সভাধিপতি তাপস সরকারও। তাঁর দাবি, নজরদারি নেই বলেই বিভিন্ন জায়গায় রেশন পাচ্ছেন না মানুষ। জেলা প্রশাসন সূত্রের খবর, সপ্তাহখানেকের মধ্যে এবং খাদ্য ও গণবণ্টন নিয়ে একটি আলাদা বৈঠক হওয়ার কথা। সেখানে নিজে থাকার কথা মন্ত্রীর। চাল এবং কেরোসিন যা প্রাপ্য গ্রাহকদের তাই দিতে হবে ডিলারদের। আগামী বৈঠকে একথাই তাঁদের বলা হবে।
মন্ত্রী বলেন, ‘‘আমরা রেশন বণ্টন নিয়ে কিছু অভিযোগ পেয়েছি। ডিজিটাল কার্ডের কেরোসিন তেল সব জায়গায় পৌঁছচ্ছে না। তা নিয়ে অবিলম্বে জেলাশাসককে দেখতে বলা হয়েছে।’’ মন্ত্রী দাবি, অন্য উন্নয়নের কাজ ঠিক থাকলেও খাদ্য দফতরের অবস্থা মহকুমার কয়েকটি জায়গায় খারাপ। কথা প্রসঙ্গে এদিনের বৈঠকে উঠে আসে রেশনের কথা। সভাধিপতি তাপস সরকার বলেন, ‘‘এক একটি পরিবারকে রাজ্য সরকার দু’টাকা দরে চাল দিচ্ছে। কিন্তু সেগুলি এক অংশের রেশন দোকান থেকে দেওয়া হচ্ছে না বলে নানা জায়গা থেকে অভিযোগ উঠছে।’’ বিশেষ করে চা বাগান এলাকাগুলিতে এই সমস্যা আরও তীব্রতর। পরিবার পিছু বরাদ্দ মতো পর্যান্ত কেরোসিন মিলছেই না। চিনি এমনিতেই অনিয়মিত আসে। তারপরেও অনেক পরিবার পাচ্ছে না বলে অভিযোগ।
ডিজিটাল রেশন কার্ড যাদের রয়েছে, তাঁদের দু’টাকা কেজি দরে চাল পাওয়ার কথা। অন্ত্যোদয় যোজনায় পরিবার পিছু মাসে ৩৫ কেজি করে খাদ্যশষ্য এবং আরও বাকি চারটি শ্রেণির প্রাপকদেরও মাসে একটি করে বরাদ্দ রয়েছে। কিন্তু সব শ্রেণিতেই এই সমস্যা থাকছে বলে দাবি করা হয়েছে বৈঠকে। কেন হচ্ছে না ব্যবস্থা? জেলা খাদ্য নিয়ামক সুভাশিস পালিত বলেন, ‘‘খারাপ চালের সমস্যা কিছু জায়গায় ছিল। সেগুলি মিটিয়ে ফেলতে চেষ্টা করেছি। তাছাড়াও, যে সব ডিলারদের বিরুদ্ধে এরকম অভিযোগ ওঠে তাঁদের বিরুদ্ধে এফআইআরও দায়ের করা হয়। এটা নিয়মিত ভাবে করা হয়। আবারও সমস্যা হলেই আমরা ব্যবস্থা নেব।’’ মহকুমায় ৩৪১টি রেশন দোকান রয়েছে। তার মধ্যে একটি বড় অংশেই এই সমস্যা চলছে বলে দাবি মহকুমা পরিষদের পদাধিকারীদের। তবে বৈঠকের পরেই এভিযোগ ধরে ধরে রেশন ডিলারদের বিরুদ্ধে অভিযানে নামতে পারে প্রশাসন। এরকমই ইঙ্গিত মিলেছে এদিনের বৈঠক থেকে। রেশন ডিলারদের সঙ্গে যোগাযোগ করা সম্ভব হয়নি।