এই গাছ কাটা ঘিরেই বিতর্ক। দীপঙ্কর ঘটকের তোলা ছবি।
বন দফতরের অনুমতি না নিয়ে স্কুলের পুরানো ১৪টি গাছ কেটে শ্যালকের কাছে বিক্রির অভিযোগ উঠল প্রধান শিক্ষকের বিরুদ্ধে।
সোমবার ময়নাগুড়ির পানবাড়ি ভবানী হাইস্কুলে ঘটনাটি ঘটে। মঙ্গলবার খবর পেয়ে স্কুলের প্রাক্তন ছাত্র এবং অভিভাবকরা প্রধান শিক্ষককে ঘেরাও করে বিক্ষোভ দেখান। পরে বন দফতরের কর্তারা বেআইনিভাবে গাছ কেটে বিক্রি করার অভিযোগে ঘটনার তদন্তে নেমে কিছু কাঠ বাজেয়াপ্ত করেন। জলপাইগুড়ির ডিএফও বিদ্যুৎ সরকার বলেন, “নিজেদের ইচ্ছেমত গাছে কেটে বিক্রি করা যায় না। ঘটনা খতিয়ে দেখে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়া হবে।”
স্কুল সূত্রে জানা গিয়েছে, মোট ১৪টি গাছ কেটে মাত্র ৫৭ হাজার টাকায় বিক্রি করা হয়েছে। অভিভাবকদের অভিযোগ, গাছগুলির বাজার দাম প্রায় ২ লক্ষ টাকা। বন দফতরের অনুমতি না নিয়ে গাছ কেটে প্রধান শিক্ষক তাঁর কাঠ ব্যবসায়ী শ্যালকের কাছে বিক্রি করেন। কেটে ফেলা গাছ সোমবার প্রধান শিক্ষকের কাঠ ব্যবসায়ী শ্যালক নিয়ে যান। মঙ্গলবার সকাল থেকে ওই ঘটনা নিয়ে হইচই শুরু হলে তিনি পালিয়ে যান। সকাল ১২টা নাগাদ ক্ষুব্ধ ছাত্র অভিভাবকরা প্রধান শিক্ষককে ঘেরাও করেন। দুটো পর্যন্ত আন্দোলন চলে।
গাছ বিক্রির অভিযোগ অস্বীকার করেননি স্কুলের প্রধান শিক্ষক দীনেশ সিংহ। তিনি জানান, ৩০ জানুয়ারি স্কুল পরিচালন সমিতির সভায় আলোচনা করে পুরনো বিপজ্জনক অবস্থায় থাকা গাছগুলি কেটে বিক্রি করে স্কুল বাড়ি মেরামতের সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়। এজন্য টেন্ডার ডাকা হয়। তিনি বলেন, “টেন্ডারে বেশি দর দিয়ে একজন সেটা কিনেছেন। ঘটনাচক্রে তিনি আমার আত্মীয়। এখানে দুর্নীতির কিছু নেই।” গাছ কাটার আগে কেন বন দফতরের আনুমতি নেওয়া হয়নি? স্কুল পরিচালন সমিতির সম্পাদক আনন্দ মণ্ডল এই নিয়ে বলেন, “যে ব্যবসায়ী গাছ কিনেছেন তাঁর দায়িত্ব। তিনি কী করেছেন, সেটা বলতে পারব না।”
স্কুলের প্রাক্তন ছাত্র মৃন্ময় রায়, বিকাশ বর্মণ জানান, সোমবার সন্ধ্যায় গাছগুলি নিয়ে যায় ব্যবসায়ী। সকালে ঘটনাটি জানার পরে বন দফতরের সঙ্গে কথা বলেন। দুপুর নাগাদ বন কর্তারা স্কুলে গিয়ে খোঁজ নেন। কেটে নিয়ে যাওয়া গাছের খোঁজে ব্যবসায়ীর বাড়িতে তল্লাশি হয়। সামান্য কিছু কাঠ মিললেও বেশিটাই বাইরে পাচার করে দেওয়া হয়েছে।