দিল্লি থেকে ফিরতেই তাঁকে ঘিরে উচ্ছ্বাসের বাঁধ ভাঙল এত দিন পরিচিতির আড়ালে থাকা ছোট্ট গ্রামটায়। রাষ্ট্রপতির হাত থেকে জাতীয় শিক্ষকের সম্মান নিয়ে ঘরে ফেরা অমলকুমার রায়ের গর্বে ঝলমল করছে স্কুল বাড়িটাও। আদিবাসী প্রধান ওই স্কুলের প্রিয় ছাত্রদের আধুনিক সুযোগ সুবিধা থেকে অনেক দূরে থাকা এই এলাকার মানুষগুলোর স্বতঃস্ফূর্ত ভালবাসা, সম্মান পেয়ে তখন চোখে জল অমলবাবুর। গলাও খানিকটা ধরে এসেছে।
দক্ষিণ দিনাজপুরের তপন ব্লকের দাড়ালহাট হাইস্কুলের প্রধান শিক্ষক অমলকুমার রায়। এ বার শিক্ষক দিবসের দিন ৫ সেপ্টেম্বর জেলা থেকে তিনিই রাষ্ট্রপতির হাত থেকে জাতীয় শিক্ষকের সম্মান পান। পাশাপাশি রাজ্য সরকারের তরফে তাঁকে শিক্ষারত্ন পুরস্কারও দেওয়া হয়।
প্রিয় প্রধান শিক্ষকের জোড়া সম্মানের খবরে স্কুলের পড়ুয়া থেকে অভিভাবক এবং শিক্ষামহলে খুশির হাওয়া ছিলই। এ দিন নিজের স্কুলে সম্মান ও সংবর্ধনার আপ্লুত অমলবাবু। তিনি বলেন, ‘‘জাতীয় শিক্ষকের পুরস্কার পাব কোনও দিন ভাবিনি। সব সময় ছাত্র, অভিভাবকদের পাশে থাকার চেষ্টা করেছি।’’ তাঁকে সম্মান জানাতে অনুষ্ঠান মঞ্চে হাজির ছিলেন বিধায়ক তথা উত্তরবঙ্গ উন্নয়ন দফতরের প্রতিমন্ত্রী বাচ্চু হাঁসদা।
বুধবার তিনি ফিরবেন বলে সকাল থেকে দাড়ালহাট হাইস্কুলের ছাত্রছাত্রী থেকে অভিভাবক এবং শিক্ষকেরা বর্ণাঢ্য অনুষ্ঠানের আয়োজন করেন। দুপুরে অমলবাবু এলাকায় নামতেই গোটা গ্রামের কয়েকশো মানুষ তাঁকে ছেঁকে ধরেন। বাচ্চুবাবু বলেন, ‘‘পিছিয়ে পড়া এলাকার পড়ুয়াদের স্কুলের অঙ্গনে সামিল করে অমলবাবু কেবল তাদের শিক্ষাচর্চায় ব্রতী করেননি। সামাজিক শিক্ষাদানেও তিনি অনবদ্য।’’
১৮ সেপ্টেম্বর ১৯৮৪ সালে তপন হাইস্কুল থেকে অমলবাবু শিক্ষকতা শুরু। এর পর উত্তরবঙ্গ বিশ্ববিদ্যালয় থেকে পিএইচডি ডিগ্রি লাভ। গত ৩ বছর ধরে জেলায় উচ্চ মাধ্যমিক পরীক্ষা সমূহের কনভেনর হিসেবেও তিনি কাজ করে চলেছেন।