টানাটানি: বিজেপি নেত্রীর সঙ্গে পুলিশের ধস্তাধস্তি। নিজস্ব চিত্র
শিশু খুন ও ধর্ষণের ঘটনাকে ঘিরে বিজেপি, সিপিএম এবং তৃণমূলের রাজনৈতিক তরজা পুরো মাত্রায় শুরু হয়ে গেল।
রবিবার মেয়র সিপিএম নেতা অশোক ভট্টাচার্য এলাকায় গিয়েছিলেন। সোমবার ওই এলাকায় গিয়ে অশান্তি, গোলমালের জন্য সিপিএম-বিজেপিকেই দায়ী করেন মন্ত্রী তথা জেলা তৃণমূল সভাপতি গৌতম দেব। তাঁর অভিযোগ, ‘‘শহরকে অশান্ত করার চক্রান্ত চলছে। সিপিএম-বিজেপির এই ক্ষেত্রে জোট হয়েছে। থানার সামনে আগুন জ্বালিয়ে, পুলিশকে মেরে রাজনীতি করা হচ্ছে। শিলিগুড়ির মানুষ এসব চায় না।’’ তার পরেই হুমকির সুরে মন্ত্রী বলেন, ‘‘আমরা পরিবারটির পাশে থেকে আইনি লড়াইয়ে থাকব। যদি রাজনৈতিকভাবে রাস্তায় নামি, তখন আর কেউ থাকতে পারবে না। আগুন নিয়ে খেলে হাত পুড়বেই।’’
বাসিন্দাদের দাবি, বিধায়ক অশোকবাবু ও মন্ত্রী গৌতমবাবু নিজের নিজের অবস্থান থেকে পরিবারটির পাশে থাকার কথা বলেছেন। তেমনই, একে অপরকে দোষারোপ করছেন। কিন্তু স্থানীয়রা রাজনীতি চাইছেন না। সকলেই চান শিশু খুনের বিচার।
মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়কে এদিন চিঠি দিয়ে অভিযুক্তদের শাস্তির দাবি তুলেছেন মেয়র অশোকবাবু। তিনি বলেন, ‘‘অভিযুক্তের মা তো শাসক দলের নেত্রী। অভিযুক্তদের আড়াল করতে পুলিশ এলাকাবাসীদের হুমকি, লাঠিচার্জ, ধরপাকড় করেছে। মুখ্যমন্ত্রী ৫ ফেব্রুয়ারি শিলিগুড়ি আসছেন। আমি ওঁকে চিঠি লিখে শহরের মহিলাদের নিরাপত্তা সুনিশ্চিত করতে বলেছি।’’
জ্যোতিনগর ৪৪ নম্বর ওয়ার্ডের অধীনে। এলাকাটি বরাবর সিপিএমের দখলে। গত বিধানসভা ভোটেও বামেরা ‘লিড’ পেয়েছিলেন। সম্প্রতি মিশ্র ভাষাভাষির এলাকায় বিজেপিও সংগঠন গড়ার চেষ্টা শুরু করেছে। ঘটনার প্রথমদিন থেকে থানায় স্মারকলিপি, মিছিল করেছে দল। ডিএসও তরফে এলাকায় পোস্টার সাঁটা হয়েছে। দুপুরে এলাকার কিছু ছাত্রছাত্রীর মিছিল করে ভক্তিনগর থানায় গিয়ে দোষীদের গ্রেফতারের দাবি তোলেন। সন্ধ্যায় বাড়িটির সামনে মোমবাতি জ্বালিয়ে দোষীর কঠোর শাস্তির দাবি তোলেন শহরের কিছু বাসিন্দা।
সোমবার রাজ্য বিজেপি দফতর থেকে ধর্মতলা পর্যন্ত মিছিল করে বিজেপি-র মহিলা মোর্চা। ধর্মতলায় পৌঁছে ওয়াই চ্যানেলে যাওয়ার পথে পুলিশ তাদের আটকালে ডোরিনা ক্রসিংয়ে প্রায় ১৫ মিনিট পথ অবরোধ করে তারা। তখনই পুলিশের সঙ্গে তাদের ধস্তাধস্তি হয়। গণ্ডগোলে মহিলা মোর্চার রাজ্য সভানেত্রী লকেট চট্টোপাধ্যায়ের শাড়ি ছিঁড়ে যায়। পুলিশ লকেট-সহ মহিলা কর্মীদের গ্রেফতার করে। পরে ছাড়া পেয়ে হেয়ার স্ট্রিট থানায় পুলিশের বিরুদ্ধে অভিযোগ জানান মহিলা মোর্চার নেতৃত্ব।