তৃণমূলের প্রার্থী হওয়ার জন্য হুড়োহুড়ি দার্জিলিঙে

একটা সময়ে সমতলের কোনও দল পাহাড়ের পুরভোটে প্রার্থী দিতে চাইলে লোক খুঁজতেই মনোনয়নের সময় ফুরিয়ে যেত। সেই দার্জিলিঙেই এখন তৃণমূলের প্রার্থী হওয়ার জন্য হুড়োহুড়ি।

Advertisement

কিশোর সাহা

শিলিগুড়ি শেষ আপডেট: ২৫ এপ্রিল ২০১৭ ০২:৪৯
Share:

নেতৃত্বে: পাহাড়ে দলীয় কর্মীদের সঙ্গে অরূপ বিশ্বাস। নিজস্ব চিত্র

একটা সময়ে সমতলের কোনও দল পাহাড়ের পুরভোটে প্রার্থী দিতে চাইলে লোক খুঁজতেই মনোনয়নের সময় ফুরিয়ে যেত। সেই দার্জিলিঙেই এখন তৃণমূলের প্রার্থী হওয়ার জন্য হুড়োহুড়ি। একে অন্যকে মনোনয়ন তুলে নেওয়ার জন্য চাপাচাপি, নেতাদের ধরাধরি, এমন নানা কাণ্ড চলছে পাহাড়ের ৪ পুরসভাতেই।

Advertisement

তাই ভোটপ্রার্থী হতে অত্যুৎসাহীদের আবেগে রাশ টানতে সোমবার দুপুর থেকে রাত পর্যন্ত পাহাড়ে চষে বেড়ালেন দুই মন্ত্রী অরূপ বিশ্বাস ও গৌতম দেব। তৃণমূলকে ঘিরে পাহাড়ে উদ্দীপনা দেখে খুশি হলেও দুই মন্ত্রীর গলায় সতর্কতার সুর। দুজনেরই বক্তব্য, ‘‘পাহাড়ে উন্নয়নের নামে কারা নয়ছয় করে চলেছে সেটা পাহাড়বাসী বুঝে গিয়েছেন। মুখ্যমন্ত্রী দিনের পর দিন পাহাড়ে এসে লাগাতার কাজ করে বলেই পাহাড়বাসী উদ্দীপ্ত। আমরা কর্মীদের বলসেছি, আত্মতুষ্টির অবকাশ নেই। আরও বেশি করে বাড়ি বাড়ি প্রচারে যেতে হবে।’’

তৃণমূল সূত্রের খবর, পর্যটন মন্ত্রী গৌতম দেব ‘ক্যাম্প’ করে ফেলেছেন দার্জিলিঙে। তবে উত্তরবঙ্গ উন্নয়ন মন্ত্রী রবীন্দ্রনাথ ঘোষ ও আলিপুরদুয়ারের বিধায়ক সৌরভ চক্রবর্তী ও সেখানকার সভাধিপতি মোহন শর্মা যথাক্রমে কার্শিয়াং, মিরিক ও কালিম্পঙে প্রায় রোজই যাচ্ছেন। আগামী ২ মে থেকে টানা তিন দিন পাহাড়ে পুরভোটের প্রচারে থাকবেন তৃণমূলের যুব নেতা তথা সাংসদ অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়। তিনি রোড শো, জনসভা করবেন পাহাড়ের চার পুর এলাকায়।

Advertisement

দলীয় সূত্রেই জানা গিয়েছে, সোমবার সকালেই অভিষেক পাহাড়ের চার পুরসভার ব্যাপারে বিশদে খোঁজখবর নিয়েছেন। সেখানকার যুব সম্প্রদায়ের চাহিদা-হতাশা নিয়ে খুটিনাটি খবর নিয়েছেন। তৃণমূলের দার্জিলিং জেলা সভাপতি তথা পর্যটন মন্ত্রী বলেন, ‘‘পাহাড়বাসীর মধ্যে দিদিকে (মুখ্যমন্ত্রী) ঘিরে উন্মাদনা রয়েছে। দিদি পাহাড়ে শান্তি ফিরিয়েছেন। উন্নয়ন শুরু করেছেন। তাতে আরও গতি আসবে ভেবে অনেকেই আশাণ্বিত।’’

কিন্তু, পাহাড়ে তৃণমূলের প্রার্থী হতে এত হুড়োহুড়ি কেন? পাহাড়ের রাজনীতিকদের একাংশের ব্যাখ্যা, মূলত জিএনএলএফ, মোর্চা থেকে নেতাদের নিয়েই তৃণমূল পাহাড়ে পায়ের তলার মাটি কিছুটা শক্ত করেছে। ওই নেতারা পাহাড়ের ভোটের হাওয়া কিছুটা হলেও বোঝেন।

সে কারণেই কিছু আসনে প্রার্থী হতে ঠেলাঠেলি শুরু হয়েছে। একটা আসনে ২-৩ জন দাবিদার তো সব জায়গাতেই। কার্শিয়াঙে ৭ নম্বর ওয়ার্ডে ৯ জন তৃণমূলের প্রার্থী হতে চান। তাই দার্জিলিং, কালিম্পং, কার্শিয়াং ও মিরিক মিলিয়ে অন্তত ৩০টি আসনে নির্দল হিসেবে মনোনয়ন জমা দিয়েছেন অত্যুৎসাহীরা। কোথাও আবার জোট সঙ্গী হয়েও জিএনএলএফ প্রার্থী দিয়েছে তৃণমূলের বিরুদ্ধে।

তবে গোর্খা জনমুক্তি মোর্চার কেন্দ্রীয় কমিটির নেতারা বিষয়টিকে কটাক্ষ করেছেন। কেন্দ্রীয় কমিটির নেতা বিনয় তামাঙ্গ বলেছেন, ‘‘টাকা ছড়িয়ে কাজ হাসিলের চেষ্টা হচ্ছে বলেই হুড়োহুড়ি পড়তে পারে।’’ তাঁর সংযোজন, ‘‘পাহাড় কিন্তু গোর্খাল্যান্ডের দাবির প্রশ্নে এখনও একমত সেটা আবারও বোঝা যাবে।’’

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন