হোমে গেল পিঙ্কির কন্যা

মঙ্গলবার বিকালে রায়গঞ্জ জেলা সংশোধনাগার চত্বরে মহিলা বন্দিদের শৌচাগারের পিছনের দেওয়ালে থাকা একটি লোহার হুক থেকে গলায় গামছার ফাঁস লাগানো অবস্থায় পিঙ্কি মজুমদার (২৫) নামে ওই বধূর দেহ উদ্ধার করা হয়।

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

রায়গঞ্জ শেষ আপডেট: ১৬ জুন ২০১৭ ০২:০২
Share:

বিধ্বস্ত: জলপাইগুড়িতে পিঙ্কির বাবা-মা। নিজস্ব চিত্র

স্বামী খুনে অভিযুক্ত বিচারাধীন বধূর মৃতদেহ নেবেন না তাঁর শ্বশুরবাড়ির সদস্যরা। এমন কী তাদের দেড় বছরের শিশুকন্যার দায়িত্ব নিতেও অস্বীকার করল তারা।

Advertisement

মঙ্গলবার বিকালে রায়গঞ্জ জেলা সংশোধনাগার চত্বরে মহিলা বন্দিদের শৌচাগারের পিছনের দেওয়ালে থাকা একটি লোহার হুক থেকে গলায় গামছার ফাঁস লাগানো অবস্থায় পিঙ্কি মজুমদার (২৫) নামে ওই বধূর দেহ উদ্ধার করা হয়। ওই দিন দেড় বছরের মেয়েকে সংশোধনাগারের মহিলা ওয়ার্ডে ঘুম পাড়িয়ে রেখে নিখোঁজ হয়ে গিয়েছিলেন পিঙ্কি।

পিঙ্কির শ্বশুরবাড়ি ডালখোলার শিকারপুর এলাকায়। বাপের বাড়ি জলপাইগুড়ির কোতোয়ালি থানার ইন্দিরা কলোনিতে। বুধবার রায়গঞ্জ জেলা হাসপাতালে পিঙ্কির মৃতদেহের ময়নাতদন্ত হয়। জেলা পুলিশ সুপার অমিতকুমার ভরত রাঠৌর ও সংশোধানাগারের সুপারিনটেনডেন্ট সুপ্রকাশ রায় এ দিনও দাবি করেছেন, মানসিক অবসাদের জেরে পিঙ্কি আত্মঘাতী হয়েছেন। পরিবারের কেউ দায়িত্ব নিয়ে রাজি না হওয়ায় ইসলামপুর মহকুমা আদালতের নির্দেশে এ দিন পিঙ্কির শিশুকন্যাকে জেলা শিশু কল্যান সমিতির হাতে তুলে দিয়েছেন সংশোধনাগার কর্তৃপক্ষ।

Advertisement

সমিতির চেয়ারম্যান অসীম রায় বলেন, ‘‘শিশুটিকে রায়গঞ্জের বোগ্রামে প্রশাসন নিয়ন্ত্রিত একটি হোমে রাখা হয়েছে। পরবর্তীতে পিঙ্কিদেবীর শ্বশুর বা বাপের বাড়ির আত্মীয়রা যদি শিশুটিকে নেওয়ার জন্য আবেদন জানায় তবে তার সুরক্ষা খতিয়ে দেখে উপযুক্ত পদক্ষেপ করা হবে।’’

পুলিশ জানিয়েছে, পারিবারিক বিবাদের জেরে পেশায় ব্যবসায়ী স্বামী অপূর্ব মজুমদারকে কুপিয়ে খুনের অভিযোগে গত ১১ জুন শ্বশুরবাড়ি থেকে পিঙ্কিকে গ্রেফতার করে পুলিশ। ইসলামপুরের মুখ্য বিচারবিভাগীয় আদালতের নির্দেশে সেই থেকে জেল হেফাজতে ছিলেন তিনি। একদিন ইসলামপুর মহকুমা সংশোধনাগারে থাকার পর ১২ জুন থেকে রায়গঞ্জ জেলা সংশোধনাগারে ছিলেন পিঙ্কি। পিঙ্কির শ্বশুর নির্মল মজুমদার কয়েক বছর আগে মারা গিয়েছেন। বর্তমানে শ্বশুরবাড়িতে পিঙ্কির দেওর অরূপ মজুমদার ও শাশুড়ি সরলা মজুমদার রয়েছেন।

পেশায় কৃষক অরূপবাবু বলেন, ‘‘বৌদি আমার দাদাকে খুন করেছে। তাই ওর মৃতদেহ বা ওর মেয়ের কোনও দায়িত্ব আমরা নেব না বলে পুলিশকে জানিয়ে দিয়েছি। ওর বাপের বাড়ির লোকেরা মৃতদেহ সত্কার করে শিশুটির দায়িত্ব নিক।’’

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন