এটিএম বন্ধ, তবু অপেক্ষা দিনভর

সোমবার সকাল থেকেই বন্ধ ছিল অধিকাংশ এটিএম পরিষেবা। কোথাও এটিএম-এর সাটার বন্ধ। কোথাও সাটার খোলা থাকলেও ‘নো ক্যাশ’ বোর্ড লাগানো। বহু মানুষ তাতে অসুবিধায় পড়েছেন। তবু পরে যদি খোলে সেই আশায় দুপুর পর্যন্ত এটিএমের সামনে অপেক্ষা করেন অনেকে। কিন্তু এটিএম না খোলায় এ দিন টাকা পাননি।

Advertisement

নিজস্ব প্রতিবেদন

শেষ আপডেট: ১৫ নভেম্বর ২০১৬ ০২:২২
Share:

এটিএমের লাইন এসেছে জাতীয় সড়কে। গা ঘেঁষে পেরোচ্ছে গাড়ি। ঝুঁকি নিয়েই অপেক্ষায় সকলে। ধূপগুড়িতে। — রাজকুমার মোদক

সোমবার সকাল থেকেই বন্ধ ছিল অধিকাংশ এটিএম পরিষেবা। কোথাও এটিএম-এর সাটার বন্ধ। কোথাও সাটার খোলা থাকলেও ‘নো ক্যাশ’ বোর্ড লাগানো। বহু মানুষ তাতে অসুবিধায় পড়েছেন। তবু পরে যদি খোলে সেই আশায় দুপুর পর্যন্ত এটিএমের সামনে অপেক্ষা করেন অনেকে। কিন্তু এটিএম না খোলায় এ দিন টাকা পাননি।

Advertisement

শিলিগুড়ির বাঘা যতীন পার্ক লাগোয়া এলাকায় একটি রাষ্ট্রায়ত্ত ব্যাঙ্কের এটিএম খোলা থাকলেও টাকা মেলেনি। আলপনা মুখোপাধ্যায়, গঙ্গাসাগর মণ্ডল, শুভঙ্কর মণ্ডলদের মতো বাসিন্দারা তাই এটিএম-এ টাকা তুলতে এসে খালি হাতে ফিরেছেন। সুমিত পাল বলেন, ‘‘১০ নভেম্বর ৪ হাজার টাকা বদলেছি। তা দিয়ে কয়েকদিন চলেছে। এখন টাকা নেই। তাই সমস্যায় পড়েছি।’’ সোমবার ব্যাঙ্কও বন্ধ ছিল।

রবিবার বিকেলের পর থেকে ইসলামপুরের একটি এটিএম-ও কাজ না করায় বিপাকে পড়তে হয়ছে বাসিন্দাদের। ৫০০ ও হাজার টাকার নোট বাতিল ঘোষণার পরই রবিবার ইসলামপুরের বেসরকারি ব্যাঙ্ক ও একটি রাষ্ট্রায়ত্ত ব্যাঙ্কের এটিএম কিছু ক্ষণের জন্য চললেও পরে তা বন্ধ হয়ে যায়। দুর্ভোগ বাড়ে মানুষের।

Advertisement

সোমবার আলিপুরদুয়ার জেলার প্রতিটি এটিএমের সামনে গ্রাহকদের লম্বা লাইন দেখা যায়। টাকা না পেয়ে গ্রাহকদের মধ্যে রীতিমতো ক্ষোভ দেখা দেয়।
জেলায় মোট ৮২ টি এটিএম রয়েছে। এদিন প্রতিটি এটিএমে টাকা না থাকার নোটিস ঝুলিয়ে দেওয়া হয়।

মালদহেও একই অবস্থা। বিকেলের দিকে মালদহ শহরের কে জে সান্যাল রোডে একটি বেসরকারি ব্যাঙ্কের এটিএম খুললেও তাতে এতই কম টাকা ঢোকানো হয়েছিল যে তিন ঘন্টার মধ্যেই টাকা শেষ হয়ে যায়। তারপর শহরের আর কোনও এটিএমই খোলেনি। এ ছাড়া জেলার বাকি ২০৪টি এটিএমই বন্ধ ছিল।

তবে এটিএম খুলতে পারে এই আশায় সকাল থেকে রাত পর্যন্ত কয়েক হাজার মানুষ হন্যে হয়ে ঘুরেছেন। এ দিন সন্ধ্যেয় ইংরেজবাজার ব্লকের কাজিগ্রামের বাসিন্দা রাজু সরকার বলেন, ‘‘গতকাল শুনেছিলাম যে কে জে স্যান্যাল রোডে থাকা একটি বেসরকারি ব্যাঙ্কের এটিএমে টাকা মিলেছে। সেই আশাতে এদিন বাইকের তেল পুড়িয়ে এসেছিলাম। কিন্তু হতাশ হয়ে ফিরতে হল। মাঝখান থেকে তেলের টাকা গেল।’’ রবীন্দ্র অ্যাভিনিউয়ের একটি এটিএমের সামনে দাঁড়িয়ে থাকা ৬০ বছরের বৃদ্ধ দীনেন অগ্রবাল বলেন, ‘‘বাড়িতে বাজার করার মতো খুচরো টাকা নেই।’’

মালদহের ব্যাঙ্ক সমূহের লিড ডিস্ট্রিক্ট ম্যানেজার রবীন্দ্র নাথ শর্মা বলেন, দ্রুত সমস্যা মেটানোর চেষ্টা চলছে।

জলপাইগুড়িতেও সোমবার কোন এটিএম কাউন্টারে টাকা ছিল না। জলপাইগুড়ি সদর হাসপাতালের চিকিৎসক সুবীর মল্লিক এদিন সকালে টাকা তুলতে স্টেশনপাড়ার একটি কাউন্টারে যান। তাঁর অভিজ্ঞতায় তিনি বলেন, “আমি সেখানে টাকা না পেয়ে শহরের প্রায় সবকটি কাউন্টারে মটোর সাইকেলে করে ঘুরে আসি। কোথাও টাকা পাইনি।” বাসিন্দাদের অভিযোগ এটিএম কাউন্টারে টাকা তোলার পরিমান সরকার থেকে বাড়িয়ে দিলেও টাকার অভাবে এটিএম কাউন্টার বন্ধ থাকায় জলপাইগুড়ি শহরের বাসিন্দারা সেই সুবিধা ভোগ করতে পারেননি।

রায়গঞ্জ থানা এলাকায় ৫০টি এটিএম রয়েছে। তার মধ্যে এ দিন সকালে বেশিরভাগ এটিএম খুললেও দুপুরের পর বেশিরভাগ এটিএমে টাকা ফুরিয়ে যায়।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন