বিমল গুরুংয়ের আমলে পাহাড়ে জিটিএ-র অধীনে হওয়া একাধিক নিয়োগ নিয়ে তদন্ত শুরু করল দার্জিলিং জেলা প্রশাসন। অভিযোগ সেইসব নিয়োগ আইন না মেনে হয়েছে। প্রশাসনের একটি সূত্র জানাচ্ছে, এরকম নিয়োগের সংখ্যা দু’শোরও বেশি। ওই নিয়োগ তালিকায় গুরুংয়ের কয়েকজন আত্মীয়ের নাম আছে বলে জানা গিয়েছে।
দার্জিলিঙের জেলাশাসক জয়সী দাশগুপ্ত বলেন, ‘‘ফাইল ঘাটতে গিয়ে প্রচুর গড়মিল পাওয়া গিয়েছে। আইন না মেনে অনেককে চাকরি দিয়ে দেওয়া হয়েছে। প্রতিটি নিয়োগের বৈধতা খতিয়ে দেখা হচ্ছে। তদন্ত করে উর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের কাছে রিপোর্ট পাঠান হবে।’’ জিটিএ-র তত্ত্বাবধায়ক কমিটির চেয়ারম্যান বিনয় তামাং বলেন, ‘‘প্রশাসন তদন্ত করে দেখুক। আইন অনুসারে ব্যবস্থা হবে। বেআইনি কাজ মানা হবে না।’’
২০১৩-২০১৫ সালের মধ্যে ওই নিয়োগগুলো হয়েছে বলেই প্রশাসনিক সূত্রে জানা গিয়েছে। জেলা প্রশাসনের এক আধিকারিক জানিয়েছেন, আইসিডিএস, প্রাথমিক শিক্ষক, স্বাস্থ্য কর্মী ও জিটিএ-র বিভিন্ন বিভাগে নিয়োগগুলো হয়েছে। যাঁদের নিয়োগ হয়েছে তাঁদের বেশিরভাগই কাজ না করেই মাসের পর মাস বেতন তুলছেন বলে অভিযোগ। হাজিরার খাতায় মাসের পর মাস তাঁদের কোনও স্বাক্ষর নেই। কিছু ক্ষেত্রে বিজ্ঞপ্তি না দিয়ে নিয়োগ হয়েছে বলেও জানান আধিকারিকরা। জেলাশাসক বলেন, ‘‘তদন্তে গিয়ে অনেককে কর্মস্থলে পাওয়া যায়নি।’’
বদলি নিয়েও আইন ভাঙার অভিযোগ উঠেছে। জেলা প্রশাসনের একটি বিশেষ দল নিয়োগ ও বদলি নিয়ে তদন্ত করছে। জেলাশাসক নিজে বিষয়টি তদারকি করছেন। এর আগেও শিক্ষক নিয়োগ নিয়ে দীর্ঘ দিন পাহাড়ে আন্দোলন হয়েছে। জিএনএলএফের সাধারণ সম্পাদক নীরজ জিম্বা বলেন, ‘‘শুধু বিমল গুরুংয়ের বিরুদ্ধে নয়। সেসময় প্রশাসনের আধিকারিক যাঁরা ছিলেন। তাঁদের ভূমিকাও দেখা উচিত। আমরা উচ্চপর্যায়ের নিরপেক্ষ তদন্ত এবং দোষীদের কঠোর শাস্তি চাইছি।’’ যদিও এই অভিযোগ নিয়ে গুরুংপন্থীদের কোনও বক্তব্য জানা যায়নি। রাজ্য সরকারের সবুজ সংকেত পেলে লোকসভা ভেটের আগে জিটিএ-র নির্বাচন হতে পারে বলে আভাস দিয়েছেন জেলাশাসক। ভোটের জন্য তাঁরা যে প্রস্তুত সেটা জানিয়েছেন বিনয় তামাংও।