শকুন বাঁচাতে নজর চাষের ওষুধে

রবিবার শিলিগুড়ির দীনবন্ধু মঞ্চের রামকিঙ্কর হলে সচেতনতা শিবিরে এ কথা জানান হিস্ট্রি সেসাইটির অ্যাসোসিয়েট ডাইরেক্টর সচিন রানাডে।

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

শিলিগুড়ি শেষ আপডেট: ০২ সেপ্টেম্বর ২০১৯ ০৪:৪৬
Share:

সভা: সচেতন করতে। নিজস্ব চিত্র

প্রজনন কেন্দ্রে জন্মানো শকুন ছাড়া হবে স্বাভাবিক পরিবেশে। তার আগে চাষের কাজে ব্যবহৃত ওষুধ শকুনের উপর কতটা ক্ষতিকর প্রভাব ফেলছে তা যাচাই করতে চায় মুম্বই ন্যাচরাল হিস্ট্রি সোসাইটি। দেশের মধ্যে রাজাভাতাখাওয়াতে প্রথম শকুন সংরক্ষণ ও প্রজনন কেন্দ্র হয়েছে। সেখানে বড় হয়ে ওঠা লুপ্তপ্রায় প্রজাতির প্রায় ১৩০টি শকুনকে স্বাভাবিক পরিবেশে ছাড়ার প্রস্তুতি শুরু হয়েছে। কিন্তু পরিবেশে শকুনের পক্ষে ক্ষতিকারক ‘ডাইক্লোফেনাক’ ওষুধের প্রভাব থেকে গেলে ওই পাখিগুলোকে আর বাঁচানো যাবে না বলে মনে করছেন বিজ্ঞানীরা।

Advertisement

রবিবার শিলিগুড়ির দীনবন্ধু মঞ্চের রামকিঙ্কর হলে সচেতনতা শিবিরে এ কথা জানান হিস্ট্রি সেসাইটির অ্যাসোসিয়েট ডাইরেক্টর সচিন রানাডে। তিনি জানান, পরিবেশের অবস্থা বোঝার জন্য প্রথমে হিমালয়ান প্রজাতির ৬টি শকুনকে ওই কেন্দ্র থেকে ছেড়ে দেখা হবে সেগুলোর কোনও ক্ষতি হচ্ছে কি না। কোথায় তারা খাবার সংগ্রহ করতে যাচ্ছে, নজর রাখা হবে তাতে। এইসব তথ্য সংগ্রহের জন্য প্রতিটি শকুনের গায়ে ২০ গ্রাম ওজনের প্লাটফর্ম ট্রান্সমিটার টার্মিনাল (পিটিটি) লাগানো থাকবে। সেই যন্ত্রের এক একটির দাম প্রায় সাত লক্ষ টাকা।

এ দিনের কর্মসূচির উদ্যোক্তা ছিল বন দফতর, মুম্বই ন্যাচরাল হিস্ট্রি সোসাইটি, হিমালয়ান নেচার অ্যান্ড ফাউন্ডেশন সোসাইটি। তাদের তরফে জানানো হয়েছে, এক সময় কয়েক কোটি শকুন থাকলেও হোয়াইট ব্যাকড শকুন, লং বিল্ড শকুন এবং স্লেন্ডার বিলড শকুন ৯৯.৯ শতাংশ কমে গিয়েছে। ‘ডাইক্লোফেনাক’ প্রজাতির ওষুধের প্রভাবেই এরকম হয়েছে বলে জানাচ্ছেন পরিবেশপ্রেমীরা। গবাদি পশুর চিকিৎসায় এই ধরনের ওষুধ ব্যবহার করা হয়ে থাকে। ওই পশু মারা গেলে সেটির দেহ কোথাও ফেলে রাখলে শকুন তা খায়। যার ফলে শকুনের দেহে যায় ওই ওষুধ। বিজ্ঞানীরা জানাচ্ছেন, শকুনের বৃক্কে সমস্যা তৈরি করে ওই ওষুধ। সারা দেশে পশু চিকিৎসায় এই ওষুধের ব্যবহার নিষিদ্ধ হয়েছে। তবুও প্রত্যন্ত এলাকায় হাতুড়ে চিকিৎসকদের একাংশ পশু চিকিৎসায় তা ব্যবহার করছেন বলে অভিযোগ।

Advertisement

সচিন রানাডে বলেন, ‘‘লুপ্তপ্রায় প্রজাতির শকুন ছাড়ার আগে কেন্দ্রটি থেকে হিমালয়ান প্রজাতির শকুন ছাড়া হবে। সেগুলো বিভিন্ন জায়গায় থেকে উদ্ধার করে কেন্দ্রে বড় করা হয়েছে। আশেপাশের অন্তত ১০০ কিলোমিটার পর্যন্ত শকুন খাবারের উদ্দেশ্যে উড়ে বেড়ায়।’’ এ দিন সভায় উপস্থিত ন্যাফের মুখপাত্র অনিমেষ বসু জানান, লুপ্তপ্রায় প্রজাতির শকুন বাঁচাতে বাসিন্দাদের সচেতন করতে হবে। ৭ সেপ্টেম্বর আন্তর্জাতিক শকুন সচেতনতা দিবসে ফুলবাড়ি এলাকায় প্রচার চালানো হবে। সেখানে মৃত পশুর দেহাবশেষ ফেলার একটি ভাগাড় রয়েছে।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন