অযত্ন: গারুচিরা ইকো-ভিলেজ ট্যুরিজম কেন্দ্রের বর্তমান অবস্থা। ঠিকমতো দেখভাল আর সংস্কারের অভাবে এখন এটি বন্ধ। —নিজস্ব চিত্র।
নেই পানীয় জল। নেই বিদ্যুৎ। ঘরের দরজা-জানালার কাঁচ ভাঙা। জীর্ণ আসবাবপত্র। ছাদ ফেটে চুঁইয়ে পড়ছে বৃষ্টির জল। এমনই বেহাল পরিস্থিতি বীরপাড়ার অদূরে গারুচিরা ইকো-ভিলেজ ট্যুরিজম কেন্দ্রটির।
প্রায় কোটি টাকা খরচ করে বন দফতর ২০০৮ সালে ভুটান পাহাড়ের গা ঘেঁষে তৈরি করেছিল ওই পর্যটন কেন্দ্রটি। কিন্তু উদ্বোধনের বছর দশেকের মধ্যেই অযত্ন ও নজরদারির অভাবে এই হতশ্রী চেহারা নিয়েছে কটেজগুলি। যার জেরে গত বছরের মত এবারও দুর্গাপুজোয় পর্যটকদের জন্য বন্ধ থাকছে ওই পর্যটন কেন্দ্র। উদ্বোধনের পর থেকেই পর্যটকদের জন্য ভুটান থেকে জলের পাইপ লাইন করে জল আসছিল। তবে বারবার হাতির হামলায় ভেঙে গিয়েছে সেই পাইপলাইন।
বিদ্যুৎ-সংযোগও ছিল না প্রথম থেকেই। ফলে পর্যটকদের তেমন পছন্দ হয়নি কটেজগুলি। ওই কটেজে রাত্রিবাসের অভিজ্ঞতা হয়েছিল ধূপগুড়ি হাসপাতালের এক নার্স অভিস্মিতা ঘোষের। তিনি বলেন, ‘‘দূর থেকে দেখলে গারুচিরাকে যতটা সুন্দর বলে ভেবে বসি আমরা, ওই বাংলোতে থাকলেই বোঝা যাবে সেখানে থাকার কষ্টটা। কারণ কটেজের চারপাশে ফেন্সিং নেই। যখন তখন হাতির দল কটেজের সামনে চলে আসে। ঘরগুলিতে ফ্যান বা আলো নেই। পানীয় জল নেই। সেখানে থাকতে গিয়ে গরমে বাচ্চাদের নিয়ে সারা রাত জেগে বসে থাকতে হয়েছে।’’
ওই পর্যটন কেন্দ্র দেখাশোনার দায়িত্বে থাকা স্থানীয় বাসিন্দাদের একটি কমিটির অন্যতম সদস্য রবিলাল কাকাতি বলেন, ‘‘আগে ভিড়ের জন্য কটেজে পর্যটকদের জায়গা দেওয়া যেত না। অথচ সংস্কার না হওয়ায় গত দু’বছর ধরে কটেজ বন্ধ। আমরা বিভিন্ন মহলকে জানিয়েছি। কোনওভাবে কোনও পদক্ষেপ নেই। তবে সামান্য জল–বিদ্যুতের স্থায়ী ব্যবস্থা থাকলে জেলার অন্যতম শ্রেষ্ঠ পর্যটন কেন্দ্র হতে পারত গারুচিরা।’’ বনমন্ত্রী বিনয়কৃষ্ণ বর্মন, ‘‘গারুচিরার বিষয়টি জানি। খুব দ্রুত বন দফতরের আধিকারিকদের সঙ্গে বসে আলোচনা করে সিদ্ধান্ত নেওয়া হবে।’’
স্থানীয় বাসিন্দারা জানাচ্ছেন, কটেজগুলি ঢেলে সাজানো হলে গারুচিরার আকর্ষণে পর্যটকেরা আসবেন। বাংলো থেকে মাত্র দেড় কিলোমিটার দূরেই ভুটান। সন্ধ্যা নামতেই দেখা যায় হাতির দল। এ ছাড়া ভুটানে গিয়ে পাহাড়িপথে ট্রেকিং করে আসা যায়। রয়েছে ভুটানের বুদ্ধমন্দির। তাই সংস্কার করে প্রচার করলে এলাকায় পর্যটনের বিকাশ হতে পারে বলে বাসিন্দারা জানাচ্ছেন।