ধানের চারা বড় হচ্ছে রাস্তাতেই

বাম আমলে জেলাপরিষদের ওই রাস্তাটি তৈরির পর থেকে আজ অবধি সংস্কার হয়নি বলে অভিযোগ। ওই ১২ কিলোমিটার রাস্তা বরাবর রয়েছে সরকারি এবং বেসরকারি পাঁচটি প্রাথমিক স্কুল।

Advertisement

অনুপরতন মোহান্ত

বালুরঘাট শেষ আপডেট: ১৭ নভেম্বর ২০১৭ ০২:০৪
Share:

বিধায়ক তথা উত্তরবঙ্গ উন্নয়ন প্রতিমন্ত্রীর বাড়ির সামনে বেহাল পাকা রাস্তা সংস্কারের দাবিতে বাসিন্দারা পথ অবরোধ করেছেন। তারপরেও কাজ না হওয়ায় দ্বিতীয় দফায় ওই বেহাল রাস্তায় ধানের চারা বুনে দিনভর বিক্ষোভ দেখিয়েছেন। প্রায় দু’মাস আগে বোনা ওই ধানের চারা ওই বেহাল রাস্তার মোড়ে মাথা তুলে দাঁড়িয়েছে। এখনও মেরামতি হয়নি দক্ষিণ দিনাজপুরের তপন ব্লকের ফুলবাড়ি থেকে তপন প্রায় ১২ কিলোমিটার পাকা রাস্তাটি। রাস্তা জুড়ে পিচের চাদর উঠে বড় গর্ত তৈরি হয়েছে। বৃষ্টিতে জল জমে গিয়ে চলাচলের অযোগ্য হয়ে নিত্য দুর্ভোগে পড়ছেন বাসিন্দারা। জেলাপরিষদের অধীনে থাকা ওই রাস্তাটি সংস্কারে বাসিন্দাদের দীর্ঘ দিনের দাবি কেন উপেক্ষিত, তা নিয়ে রাজনৈতিক মহলেও জল্পনা শুরু হয়েছে।

Advertisement

বাম আমলে জেলাপরিষদের ওই রাস্তাটি তৈরির পর থেকে আজ অবধি সংস্কার হয়নি বলে অভিযোগ। ওই ১২ কিলোমিটার রাস্তা বরাবর রয়েছে সরকারি এবং বেসরকারি পাঁচটি প্রাথমিক স্কুল। রাস্তার পাশে রয়েছে দুটি হাইস্কুল, স্বাস্থ্যকেন্দ্র এবং স্থানীয় বিধায়ক তথা উত্তরবঙ্গ উন্নয়ন দফতরের প্রতিমন্ত্রী বাচ্চু হাঁসদার বাড়িও। জেলার বৃহৎ কাঁচা লঙ্কা ও আনাজের হাট বসে ফুলবাড়ি মোড় থেকে ওই রাস্তা ধরে। এলাকাবাসীর অভিযোগ, জেলা পরিষদে একাধিকবার রাস্তা সংস্কারের আবেদন জানিয়ে লাভ হয়নি। খোদ উত্তরবঙ্গ উন্নয়ন প্রতিমন্ত্রীর খাসতালুকে বেহাল হয়ে পড়ে থাকা রাস্তাটি সংস্কার নিয়ে জেলাপরিষদ নেতৃত্বের মধ্যে নিজেদের অনুগত ঠিকাদার নিয়োগ নিয়ে দ্বন্দ্ব শুরু হয়েছে বলে অভিযোগ উঠেছে।

জেলা পরিষদের সভাধিপতি ললিতা টিগ্গা অবশ্য অভিযোগ অস্বীকার করে বলেন, টেন্ডার ঝুলিয়ে দেওয়া হয়েছে। শীঘ্রই প্রক্রিয়া শেষ করে কাজ শুরু হবে। উত্তরবঙ্গ উন্নয়ন প্রতিমন্ত্রী বাচ্চুবাবু অবশ্য বলেন, জেলার সমস্ত বেহাল রাস্তা চিহ্নিত করে সংস্কারের উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে। তপন থেকে ফুলবাড়ির রাস্তাটিও দ্রুত মেরামত করা হবে। শীত চলে এলেও কিন্তু তা শুরু হয়নি বলে বাসিন্দাদের অভিযোগ। স্থানীয় বাসিন্দা, বিজেপির জেলা সাধারণ সম্পাদক মানস সরকার বলেন, বৃষ্টি হলে রাস্তাটি ডোবায় পরিণত হয়। সে সময় পথচারী থেকে যানচালকেরা রাস্তায় চলাচল করতে গিয়ে চরম সমস্যার মধ্যে পড়ে যান। অথচ জেলার একমাত্র মন্ত্রী বাচ্চুবাবু প্রতিনিয়ত ওই রাস্তায় চলাচল করেন।

Advertisement

গত ১২ জুন থেকে ১৮ জুন বাংলার গ্রামীণ সড়ক সপ্তাহ পালনের মধ্যে দিয়ে দক্ষিণ দিনাজপুরে বেহাল রাস্তা মেরামতির সরকারি ঘোষণা হয়। জেলার ৮টি ব্লকের প্রায় ৭৬৭ কিলোমিটার দীর্ঘ রাস্তা সংস্কার, নতুন পাকা রাস্তা তৈরি এবং প্রস্তাবিত রাস্তার শিলান্যাস বাবদ ২৬৭ কোটি ১১ লক্ষ টারা বরাদ্দ করা হয়। অথচ অধিকংশ রাস্তার কাজ শুরু করতে না পারায় বরাদ্দ টাকা ফেরতের আশঙ্কা দেখা দিয়েছে বলে অভিযোগ।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন