ডাক্তারের হাতযশে প্রাণরক্ষা

আবার এক মরণাপন্ন রোগীর সফল অস্ত্রোপচার বালুরঘাট সুপার স্পেশ্যালিটি হাসপাতালে।

Advertisement

অনুপরতন মোহান্ত

বালুরঘাট শেষ আপডেট: ১৯ জানুয়ারি ২০১৯ ০৫:১৫
Share:

পাশে: খাতিজাকে পরীক্ষা করছেন সুবিদ হাসান। বালুরঘাটে। নিজস্ব চিত্র

আবার এক মরণাপন্ন রোগীর সফল অস্ত্রোপচার বালুরঘাট সুপার স্পেশ্যালিটি হাসপাতালে।

Advertisement

পনেরো বছরের খাতিজা বানুর বাড়ি তপন ব্লকের হাসনগরে। এ বছর সে মাধ্যমিক পরীক্ষা দেবে। গত ৯ জানুয়ারি পাড়ার সিমেন্ট বাঁধানো কলতলায় পড়ে গিয়ে পেটে গুরুতর চোট পেয়েছিল সে। অসহ্য যন্ত্রণা নিয়ে তাকে ওই দিন সন্ধ্যা সাড়ে ছ’টায় বালুরঘাট সুপার স্পেশ্যালিটি হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। আল্ট্রা সোনোগ্রাফি করে দেখা যায়, প্লীহা বা স্প্লিন ফেটে রক্তক্ষরণ হয়েছে। সেই রক্ত পেটে জমে। তখন দ্রুত নামছে হিমোগ্লোবিনের মাত্রা। একসময়ে তা দাঁড়ায় ৫.১-এ।

রিপোর্ট দেখে অস্ত্রোপচারের সিদ্ধান্ত নেওয়া হয় শল্য চিকিৎসক সুবিদ হাসান। হাসপাতালের সুপার তপন বিশ্বাস বলেন, ‘‘সেই সময়ে ছাত্রীটির অবস্থা আশঙ্কাজনক ছিল। রক্তচাপ ক্রমশ কমছে। নেমে যাচ্ছে পালস রেট। মেয়েটি নেতিয়ে পড়ছিল। দেরি করার কোনও উপায় ছিল না।’’ এই অবস্থায় অস্ত্রোপচারের কিছুটা ঝুঁকি ছিল, সেটা পরেও মেনে নিয়েছেন সুপার। কিন্তু সুবিদ হাসান আর অপেক্ষা করতে চাননি। চিকিৎসক জগবন্ধু মুর্মু, শীর্ষাণু সাহা ও নার্স অর্পিতা পালের সহায়তায় তিনি অস্ত্রোপচার শুরু করেন।

Advertisement

হাসপাতাল সূত্রে বলা হয়েছে, গত ১০ জানুয়ারি রাত আটটা থেকে টানা আড়াই ঘণ্টা অস্ত্রোপচার করে বাঁচানো হয় মেয়েটিকে। সুবিদ হাসান বলেন, ‘‘ওর পেটে জমে থাকা প্রায় দু’লিটার রক্ত বের করার পাশাপাশি মারাত্মকভাবে জখম প্লীহা কেটে বাদ দিতে হয়। জখম লিভারটি মেরামত করা হয়।’’ তাঁর কথায়, উন্নত ল্যাপ্রোস্কপি যন্ত্র ও হাসপাতালের টিম-ইউনিটিরই সাফল্য এটা। হাসপাতাল সূত্রে জানা গিয়েছে, মেয়েটি এখন সম্পূর্ণ সুস্থ। আজ, শনিবার তাকে ছেড়ে দেওয়া হতে পারে।

সুবিদ হাসানের হাতযশে এই বালুরঘাট হাসপাতালেই গত মাসে সুস্থ হয়ে ওঠেন ষাঁড়ের গুঁতোয় মারাত্মক জখম মনসুর সরকার। তার আগে মোটরবাইক দুর্ঘটনায় যকৃত ফেটে মরণাপন্ন এক যুবককে বাঁচান হাসপাতালের শল্য চিকিৎসকেরা। দশ ইঞ্চির পেরেক খেয়ে ফেলা এক যুবককেও বাঁচিয়েছেন এই হাসপাতালের শল্য চিকিৎসকেরা।

খাতিজা বানুর বাবা খামেদ সরকার পেশায় ছোট চাষি। তিনি বলেন, ‘‘মেয়ে এবারে মাধ্যমিক দেবে। তার আগে এই দুর্ঘটনা! ওকে ফিরে পাব, ভাবতে পারিনি। ডাক্তারবাবুদের কী বলে ধন্যবাদ জানাব, বুঝতে পারছি না।’’

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন