শসা মুড়িতেই কাটল কয়েক ঘণ্টা

সূর্যকমল স্টেশনে দাঁড় করিয়ে দেওয়া হল। পদাতিক এক্সপ্রেস স্টেশনে দাঁড়ালে কী হবে, প্ল্যাটফর্ম ট্রেনটির উপযোগী ছিল না। তার মধ্যে ট্রেনের এসি বন্ধ করে দেওয়া হল।

Advertisement

রাজা বন্দ্যোপাধ্যায়

জলপাইগুড়ি শেষ আপডেট: ২২ মে ২০১৮ ০২:২৬
Share:

অসহায়: রেল অবরোধে থমকে ট্রেন। ছোট সন্তানদের নিয়ে কোচবিহার স্টেশনেই অপেক্ষা বহু যাত্রীর। ছবি: হিমাংশুরঞ্জন দেব।

ডালখোলা ও কানকি স্টেশনের মাঝে দাঁড়িয়ে গেল পদাতিক এক্সপ্রেস। সকাল তখন ৭টা ৪৭। জানালা দিয়ে দেখা গেল স্টেশনের নাম সূর্যকমল। খোঁজ নিয়ে জানা গেল, সূর্যকমল এবং কিসানগঞ্জের মাঝে কানকি স্টেশনে আদিবাসীরা রেল অবরোধ করেছেন। যত ক্ষণ না অবরোধ উঠছে, ট্রেন ছাড়বে না।

Advertisement

সূর্যকমল স্টেশনে দাঁড় করিয়ে দেওয়া হল। পদাতিক এক্সপ্রেস স্টেশনে দাঁড়ালে কী হবে, প্ল্যাটফর্ম ট্রেনটির উপযোগী ছিল না। তার মধ্যে ট্রেনের এসি বন্ধ করে দেওয়া হল। কামরার প্রতিটি ব্লকে একটি করে ছোট ফ্যান। সেই ফ্যান চলল। কিন্তু তাতে চারদিক বন্ধ থাকায় গরমে গুমোট ভাব বেড়ে চলল। যাত্রীদের অনেকেই ট্রেন ছেড়ে বাইরে বার হতে বাধ্য হন। বেলা দশটায় অধিকাংশ কোচের শৌচাগারের জল শেষ হয়ে গেল। যাত্রীরা খোঁজ নিয়ে জানলেন সূর্যকমল স্টেশনের একটু দূরে জাতীয় সড়ক।

যাত্রীদের একটি অংশ ভ্যান রিকশায় জাতীয় সড়কে চলে গেলেন। সেখান থেকে যে যেমন পারেন বাস এবং গাড়ি ধরে শিলিগুড়ির রওনা হলেন। কিন্তু পদাতিক এক্সপ্রেসের যাত্রীদের একটা বড় অংশ ছিলেন পর্যটক। অনেকেরই পাহাড়ে যাওয়ার গাড়ি এবং হোটেল বুক করা আছে। সমস্যায় পড়লেন তাঁরা।

Advertisement

করণদিঘির রসাখোয়ার এক বাসিন্দা বিজয়লাল সিংহ তাঁর স্ত্রীকে নিয়েই যাওয়ার জন্য আলুয়াবাড়ি স্টেশনে গিয়েছিলেন। ট্রেন বন্ধ থাকায় বাসে যেতে হল তাঁকে।

সূর্যকমল স্টেশনে রেল পুলিশ ও সুরক্ষা বাহিনীর কর্মীরা থাকলেও যাত্রীদের সমস্যার সুরাহার কোনও চেষ্টা দেখা যায়নি। খাবার নেই। পানীয জল নেই। শসা, মুড়িই ভরসা করে কয়েক ঘণ্টা কাটাতে হয় যাত্রীদের।

যাত্রীদের ভোগান্তি দেখে এলাকার একটি সামাজিক সংস্থার ইরফান বাদল সঞ্জয় নাসিমরা যাত্রীদের জন্য পানীয় জল নিয়ে হাজির হন। ওই ট্রেনে ফিরছিলেন কলকাতার সুশান্ত অধিকারী। তিনি বললেন, ‘‘ছোট শিশু নিয়ে পরিবারকে নিয়ে চরম সমস্যার মধ্যে পড়তে হয়। ট্রেনে এসি বন্ধ করে দেওয়া হয়। স্টেশনে জলের কোনও ব্যবস্থা নেই। দিনভর ভোগান্তির মধ্যে থাকতে থাকতে দুপুরে এলাকার কিছু যুবক পানীয় জল ব্যবস্থা করেন। শুধু তাই নয় দুপুরে মুড়ির ব্যবস্থা করেন। তাতেই পেটে কিছু পড়ল।’’

কিন্ত যাঁদের সঙ্গে শিশু বা প্রবীণেরা ছিলেন, তাঁরা পড়েন খুব সমস্যায়। অনেকেরই সঙ্গে শিশুদের দেওয়ার মতো পর্যাপ্ত খাবার ছিল না।

সেই সঙ্গে রেলের তরফ থেকে কোনও রকম ব্যবস্থা করা হয়নি বলে অভিযোগ। যাত্রীদের মধ্যে অনেকে বেরিয়ে পড়লেন কেউ ভাড়া গাড়িতে করে। কেউ বাসে করে।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন