এই স্ট্যান্ডই সাজানোর পরিকল্পনা পুরসভার। —নিজস্ব চিত্র।
নির্দিষ্ট বাসস্ট্যান্ড রয়েছে আড়াই দশক ধরে। কিন্তু পরিকাঠামো বলতে কিছুই নেই মালবাজারে। নেই শেড বা আরামপ্রদ যাত্রী প্রতীক্ষালয়। উন্নত শৌচাগার, পানীয় জলের ব্যবস্থাও নেই। দীর্ঘ দিন এই পরিস্থিতিতে শহরবাসীর ক্ষোভ থাকলেও বাসস্ট্যান্ড সংস্কারে উদ্যোগী হননি কেউই। এ বার পুর কর্তৃপক্ষ জানিয়েছেন, তাঁদের উদ্যোগে বাসস্ট্যান্ডের চেহারা আমূল বদলে ফেলার সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে। প্রাথমিক স্তরের কাজও শুরু হয়েছে।
উল্লেখ্য, মালবাজার বাসস্ট্যান্ডটি জলপাইগুড়ি জেলা পরিষদের আওতাধীন জমিতে তৈরি হওয়ায় দীর্ঘ দিন ধরেই বাসস্ট্যান্ড সংস্কারের চেষ্টা করেও পুরসভা জমিজটে আটকে ফের পিছিয়ে এসেছে।
এ বারে মালবাজারে তৃণমূল একক সংখ্যা গরিষ্ঠতায় পুরবোর্ড গঠনের পর বাসস্ট্যান্ড নিয়ে স্থায়ী মীমাংসায় উদ্যোগী হয়। মালবাজারের চেয়ারম্যান স্বপন সাহা জলপাইগুড়ি জেলা পরিষদের কাছে বাসস্ট্যান্ড সংস্কারে পুরসভা উদ্যোগী হবার ইচ্ছা প্রকাশ করে বাসস্ট্যান্ডের জমি লিজ হিসাবে চান।
জলপাইগুড়ি জেলা পরিষদও পুরসভাকে বাসস্ট্যান্ডের জমি লিজ আকারে দিতে সম্মত হয়। গত জুন মাসেই এই আবেদনের ভিত্তিতে জেলাপরিষদের সঙ্গে মালবাজার পুরসভার বাসস্ট্যান্ডের লিজচুক্তি রূপায়িতও হয়ে যায়। বার্ষিক ১ লক্ষ ১২ হাজার টাকার চুক্তিতে জেলা পরিষদ পুরসভাকে বাসস্ট্যান্ড এলাকার এক একর জমি লিজ দিয়েছে বলেও পুরসভা সূত্রের খবর।
এ দিকে লিজচুক্তি সম্পূর্ণ হতেই মালবাজার বাসস্ট্যান্ড নবরূপে সাজিয়ে তোলার কথা ঘোষণা করে পুরসভা। তাদের উদ্যোগে বাসস্ট্যান্ডের খানা খন্দ মেরামত করে প্রাথমিক ভাবে দুরবস্থা কাটানোর চেষ্টা শুরু হয়েছে বলে পুরসভার দাবি।
কী কী থাকবে নতুন ভাবে তৈরি এই বাসস্ট্যান্ডে?
স্বপনবাবু জানান, প্রায় দেড়কোটি টাকা খরচ করে বাসস্ট্যান্ড গড়বে পুরসভা। টেন্ডার প্রক্রিয়া শুরু হয়েছে। বাসস্ট্যান্ডে শেড, উন্নত যাত্রী প্রতীক্ষালয়, আধুনিক মানের শৌচাগার, বিপণন কেন্দ্র, পানীয় জলের পর্যাপ্ত ব্যবস্থা সবই থাকবে। তিনি বলেন, ‘‘আগামী ডিসেম্বর মাসের মধ্যেই আমরা বাসস্ট্যান্ড নির্মাণ সম্পূর্ণ করে ফেলতে পারব বলেই মনে করছি।’’
বাসস্ট্যান্ডে যে বেসরকারি বাসগুলি প্রতিদিন ঢোকে এবং বেরিয়ে যায় তারা এ বার থেকে জেলাপরিষদের বদলে পুরসভাকে বাসস্ট্যান্ড পার্কিং ফি দেবেন বলেও পুরসভার পক্ষ থেকে জানানো হয়েছে। গত বৃহস্পতিবার বাস মালিকদের নিয়ে মালবাজারের মহকুমাশাসকের দফতরে একটি বৈঠকও আয়োজিত হয়। বৈঠকে আধুনিক বাসস্ট্যান্ড নির্মাণে পুরসভার সিদ্ধান্তকে তাঁরা স্বাগতও জানান। মহকুমাশাসক জ্যোতির্ময় তাঁতিও বাসস্ট্যান্ড আধুনিকীকরণের সিদ্ধান্তটি খুবই কার্যকরী বলে জানান। তিনি বলেন, ‘‘দীর্ঘ দিন ধরেই বাসস্ট্যান্ড চত্বরটি বেহাল হয়ে পড়েছিল। এ বারে তা আধুনিক ভাবে গড়ে ওঠায় বাসিন্দারা উপকৃত হবেন।’’