বিহারের অস্ত্রেই কি গোলমাল   

পুলিশের দাবি, আসন্ন পঞ্চায়েত ভোটে এলাকায় গোলমাল বাধাতে এই অস্ত্র ও মদ ব্যবহার করা হতে পারে। 

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

পাঞ্জিপাড়া শেষ আপডেট: ১৯ এপ্রিল ২০১৮ ০৩:০৭
Share:

প্রতীকী ছবি।

এক দিকে বিহার সীমানা, অন্য দিকে বাংলাদেশ সীমান্ত। উত্তর দিনাজপুর জেলার ইসলামপুর মহকুমায় এই পাঞ্জিপাড়া এলাকাটিই এখন পুলিশ-প্রশাসনের কাছে প্রধান মাথাব্যথা। গোয়েন্দা সূত্রে খবর, বিহার থেকে বেআইনি অস্ত্র এই এলাকায় দেদার ঢুকছে। আর ফুলে ফেঁপে উঠছে বেআইনি চোলাই মদের জোগানও। পুলিশের দাবি, আসন্ন পঞ্চায়েত ভোটে এলাকায় গোলমাল বাধাতে এই অস্ত্র ও মদ ব্যবহার করা হতে পারে।

Advertisement

ইসলামপুর মহকুমা মানচিত্রে মুরগির গলার মতো দেখতে, তাই এলাকাটি ‘চিকেন্স নেক’ বলেই পরিচিত। এই মহকুমার, বিশেষ করে পাঞ্জিপাড়ার পূর্ব ও পশ্চিমে যথাক্রমে বাংলাদেশ ও বিহার। এলাকাটি অপরাধীদের যাতায়াতের এলাকা বলেও দীর্ঘদিন ধরে প্রশাসনের মাথাব্যথার কারণ। এক পুলিশকর্তার কথায়, ‘‘এই এলাকাকেই ব্যবহার করে চোপড়ায় অস্ত্র মজুত করছে দুষ্কৃতীরা।’’ মনোনয়ন জমা দেওয়ার সময় থেকে শুরু করে রায়গঞ্জ ও চোপড়ায় সমানে সংঘর্ষ, বোমা-গুলি চলছে। পুলিশ-প্রশাসনের একাংশের বক্তব্য, বাইরে থেকে অস্ত্র না এলে এটা সম্ভব হত না। তাঁদের সন্দেহ, এই অস্ত্রের উৎস বিহারের মুঙ্গের জেলা। সেখান থেকেই ওয়ান শটার, পাইপগানের মতো অস্ত্র ঢুকে পড়ছে এলাকায়। শুধু মনোনয়ন পর্বে গোলমালই নয়, ভোটের সময়ে ইসলামপুর, গোয়ালপোখর ও চাকুলিয়া এলাকায় বড় ধরনের ঝামেলা বাধিয়ে রাখার উদ্দেশ্য নিয়েই এই অস্ত্র জড়ো করা হয়েছে বলে আশঙ্কা খোদ জেলা প্রশাসনেই।

ওই পুলিশকর্তা অবশ্য দাবি করেছেন, নজরদারি চলছে। কিন্তু প্রশ্ন উঠেছে, পুলিশ নজরদারি যদি কড়াই হয়, তা হলে এত অস্ত্র ঢুকছে কী করে? এই নিয়ে পুলিশের কেউই সরাসরি জবাব দিতে চাননি।

Advertisement

তবে অতিরিক্ত জেলা পুলিশ সুপার প্রদীপকুমার যাদব বলেছেন, ‘‘আমরা বেআইনি অস্ত্র উদ্ধারে অভিযান শুরু করেছি।’’ পুলিশের বক্তব্য, এর মধ্যেই কয়েক জন দুষ্কৃতীকে গ্রেফতার করা হয়েছে। উদ্ধার করা হয়েছে বেআইনি বেশ কিছু অস্ত্র।

একই সঙ্গে শুরু হয়ে গেছে চোলাই মদের ব্যবসা। গ্রামের হাটগুলি এর কেন্দ্র। পাঞ্জিপাড়াতে গজিয়ে উঠেছে ভেজাল মদ তৈরির কারখানা। এর আগে এমন একটি কারখানা পুলিশ ও আবগারি দফতর একযোগে অভিযান চালিয়ে বন্ধ করে দিয়েছিল। প্রশাসনের বক্তব্য, এখানে যে ভেজাল মদ তৈরি হয়, তা শরীরের পক্ষে খুবই ক্ষতিকর। অনেক ক্ষেত্রে শরীরে বিষক্রিয়াও হতে পারে।

এ বিষয়ে রাশ টানতে এর মধ্যেই যৌথ অভিযান চালাতে পুলিশ ও আবগারি দফতরকে নির্দেশ দিয়েছে জেলা প্রশাসন। আবগারি দফতর জানিয়েছে, কিছু দিন আগে প্রায় ১০ হাজার লিটার চোলাই মদ নষ্ট করা হয়েছে। ভাঙা হয়েছে বেশ কিছু বেআইনি ভাটিখানাও। ভোটের আগে এই অভিযান নিয়মিত চলবে।

উত্তর দিনাজপুরের জেলাশাসক আয়েশা রানি বলেন, ‘‘এই বিষয়ে পুলিশকে নজর দিতে বলা হয়েছে।’’ অতিরিক্ত পুলিশ সুপার প্রদীপ যাদব বলেন, ‘‘হোটেলগুলিতেও নজরদারি বাড়ানো হয়েছে।’’

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন