রাজ্যে ভোটপ্রক্রিয়া শুরু হতেই আশপাশের রাজ্য থেকে বহিরাগতদের সন্দেহজনক আনাগোনা শুরু হয়েছে বলে মনে করছেন পুলিশ ও গোয়েন্দারা। সরকারি সূত্রের খবর, ভিন রাজ্য থেকে আসা সন্দেহভাজনদের চিহ্নিত করতে একাধিক নির্দেশ জারি করেছেন রাজ্য পুলিশের ডিজি সুরজিৎ করপুরকায়স্থ। রাজ্য পুলিশের উত্তরবঙ্গের এক শীর্ষকর্তা জানান, ডিজি’র নির্দেশে ভিন রাজ্য লাগোয়া সীমানায় সড়কপথে ক্লোজ্ড সার্কিট ক্যামেরা বসানোর প্রক্রিয়া শুরু হয়েছে।
সম্প্রতি বীরভূমের অনুব্রত মণ্ডল-সহ শাসকদলের কয়েক জন নেতা অভিযোগ করেন, রাজ্যের পঞ্চায়েত ভোটে অস্থিরতা তৈরি করতে বিরোধী দলগুলি বিহার, ঝাড়খণ্ড থেকে দুষ্কৃতী নিয়ে আসছে। তাদের আশঙ্কা, ভোটের দিন ভিন রাজ্যের দুষ্কৃতীদের দিয়ে গোলমাল পাকাতে পারে বিরোধীরা। বিশেষ করে, দু’সপ্তাহ আগে মনোনয়নের দিন রায়গঞ্জে নাইন-এমএম পিস্তল হাতে বিহারের তিনজন বাসিন্দা ধরা পড়ার পর সেই আশঙ্কা আরও জোরদার হয়েছে।
পুলিশ সূত্রের খবর, গত দেড় সপ্তাহে উত্তর দিনাজপুর, পুরুলিয়া, মালদহ, কোচবিহারে ১১ জনেরও বেশি ভিন রাজ্যের বাসিন্দা ধরা পড়েছে। তাই অসম, ঝাড়খণ্ড এবং বিহার লাগোয়া বিভিন্ন জেলার সড়কপথের অন্তত ২০টি জায়গায় ক্যামেরা বসানোর কথা ভাবা হয়েছে। ট্রেনেও নজর দিচ্ছে জিআরপি।
এ ব্যাপারে বিজেপির উত্তরবঙ্গের পর্যবেক্ষক রথীন বসু বলেন, ‘‘ভিন রাজ্যের দুষ্কৃতী যদি ঢুকে হাঙ্গামা করে, তবে তো পুলিশের নজরদারি নিয়ে প্রশ্ন ওঠে!’’ বিজেপির কোচবিহার জেলা সভাপতি নিখিলরঞ্জন দে জানান, রোজ ট্রেনে-বাসে নানা কাজে বহু মানুষ অসম-কোচবিহার যাতায়াত করেন। মানুষের হয়রানির আশঙ্কার পাশাপাশি তাঁর প্রশ্ন, ‘‘ভোটে গোলমাল হলে, দায় এড়ানোর জন্য ভিন রাজ্যের বহিরাগতদের দিকে আঙুল তোলা হচ্ছে না তো?’’
উল্টোদিকে উত্তরবঙ্গ উন্নয়নমন্ত্রী রবীন্দ্রনাথ ঘোষ বলেন, ‘‘ভিন রাজ্য থেকে কারা দুষ্কৃতী আনার ছক কষেছে সেটা বীরভূম, রায়গঞ্জের ঘটনাতেই পরিষ্কার। কাজেই নজরদারি বাড়ানোর বিরোধিতা কেন করা হচ্ছে, তার উদ্দেশ্যটাও এখানে স্পষ্ট।’’