এক আসনে দুই প্রার্থী তৃণমূলের

উত্তর দিনাজপুরের রায়গঞ্জ ব্লকের জেলা পরিষদের ২১ নম্বর আসনে প্রার্থী হওয়া নিয়ে তৃণমূলের গোষ্ঠীদ্বন্দ্ব চরমে উঠেছে।

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

রায়গঞ্জ শেষ আপডেট: ১৩ এপ্রিল ২০১৮ ০১:৩৩
Share:

উত্তর দিনাজপুরের রায়গঞ্জ ব্লকের জেলা পরিষদের ২১ নম্বর আসনে প্রার্থী হওয়া নিয়ে তৃণমূলের গোষ্ঠীদ্বন্দ্ব চরমে উঠেছে। '

Advertisement

ওই আসনে তৃণমূল প্রার্থী করেছে জেলা পরিষদের বিদায়ী সহকারী সভাধিপতি পূর্ণেন্দু দে-কে। তিনি জেলা তৃণমূলের কার্যনির্বাহী সভাপতির পদে রয়েছেন। অথচ ওই আসনে তৃণমূল প্রার্থী হিসেবে মনোনয়নপত্র জমা দিয়েছেন ওই আসনেরই তৃণমূলের বিদায়ী জেলা পরিষদ সদস্যা সামিমা বেগমও। সামিমার স্বামী নজরুল ইসলাম রায়গঞ্জ ব্লক তৃণমূলের কার্যকরী সভাপতির দায়িত্বে রয়েছেন। এই পরিস্থিতিতে ওই আসনে প্রার্থী হওয়া নিয়ে দলের দ্বন্দ্ব প্রকাশ্যে চলে আসায় অস্বস্তিতে জেলা তৃণমূল নেতৃত্ব।

জেলা তৃণমূল সভাপতি অমল আচার্যের দাবি, দলীয় সিদ্ধান্ত অনুযায়ী ওই আসনে পূর্ণেন্দু তৃণমূলের প্রার্থী। দল তাঁকে টিকিট দিয়েছে। সামিমাকে ওই আসনে না দাঁড়ানোর জন্য দলের তরফে নির্দেশ দেওয়া হয়েছিল। কিন্তু তা সত্বেও তিনি দাঁড়িয়ে পড়েছেন। সামিমা ও নজরুলের সঙ্গে আলোচনা করে সমস্যার সমাধানের চেষ্টা চলছে।

Advertisement

তৃণমূলের অন্দরের খবর, দলীয় সিদ্ধান্ত অনুযায়ী সামিমা যাতে মনোনয়নপত্র তুলে নেন, তার জন্য গত বুধবার রায়গঞ্জে দলের জেলা কার্যালয়ে নজরুলকে দীর্ঘক্ষণ বুঝিয়েছেন অমলবাবু। সেখানে পূর্ণেন্দুবাবুও হাজির ছিলেন। কিন্তু এখনও পর্যন্ত স্ত্রীর মনোনয়নপত্র তোলার ব্যাপারে কোনও সিদ্ধান্ত নেননি নজরুল। নির্বাচনে লড়ার সিদ্ধান্তে অনড় রয়েছেন সামিমাও।

নজরুলের দাবি, সামিমা ওই আসনের স্থানীয় বিদায়ী জয়ী সদস্যা। বাসিন্দারা বহিরাগত প্রার্থীকে মানতে পারেননি। তাই তাঁদের ইচ্ছেকে মর্যাদা দিয়ে সামিমা এ বছরও ওই আসন থেকে নির্বাচনে দাঁড়িয়েছেন। তিনি বলেন, ‘‘সামিমা যাতে মনোনয়নপত্র তুলে নেন, সেই ব্যাপারে দলের জেলা নেতৃত্ব আমাকে অনুরোধ করেছেন। সামিমাকেও তাঁরা সেই অনুরোধ করেছেন। দলের জেলা নেতৃত্বের সঙ্গে এখনও বিষয়টি নিয়ে আলোচনা চলছে। এলাকার বাসিন্দা ও স্থানীয় তৃণমূলের নেতা কর্মীদের সঙ্গে আলোচনা করেই আমরা এই বিষয়ে সিদ্ধান্ত নেব।’’

২০১৩ সালের পঞ্চায়েত নির্বাচনে রায়গঞ্জ ব্লকের জেলা পরিষদের ২৩ নম্বর আসন থেকে কংগ্রেসের টিকিটে জয়ী হন পূর্ণেন্দু। সেইসময় জেলা পরিষদের ২১ নম্বর আসন থেকে কংগ্রেসের টিকিটে জয়ী হন সামিমা। ওই বছর জেলা পরিষদের ২৬টি আসনের মধ্যে ১৩টি আসনে জয়ী হয়ে জেলা পরিষদের ক্ষমতা দখল করে বামফ্রন্ট। পরবর্তীতে পূর্ণেন্দু, সামিমা সহ কংগ্রেস ও বামফ্রন্টের সংখ্যাগরিষ্ঠ সদস্যরা তৃণমূলে যোগ দেওয়ায় জেলা পরিষদের ক্ষমতা দখল করে তৃণমূল। পূর্ণেন্দুকে জেলা পরিষদের সহকারী সভাধিপতির দায়িত্ব দেয় তৃণমূল।

এ বছর ২৩ নম্বর আসনটি তফশিলি জনজাতি প্রার্থীদের জন্য সংরক্ষিত হওয়ার কারণে পূর্ণেন্দু সেখান থেকে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করার সুযোগ পাননি। ফলে ২১ নম্বর আসনের বিদায়ী সদস্যা সামিমার বদলে পূর্ণেন্দুবাবুকে প্রার্থী করার সিদ্ধান্ত নেয় তৃণমূল। তাতেই ক্ষোভ ছড়ায় সামিমা ও তাঁর স্বামী নজরুল সহ তাঁদের অনুগামীদের মধ্যে। ফলে সামিমাও তৃণমূল প্রার্থী হিসেবে ওই আসনে মনোনয়নপত্র জমা দেন।

পূর্ণেন্দুর দাবি, দলীয় সিদ্ধান্ত ও নির্দেশ অনুযায়ী সামিমা নিশ্চই মনোনয়নপত্র প্রত্যাহার করে নেবেন বলেই তাঁর আশা।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন