কালিয়াগঞ্জ জুড়ে আতঙ্ক

শুক্রবার রাতে তৃণমূলের রাজ্য সম্পাদক তথা দলের উত্তর দিনাজপুর জেলার প্রাক্তন সভাপতি অসীম ঘোষের বাড়িতে হামলার পরে এমনই আতঙ্ক ছড়িয়েছে এলাকায়।

Advertisement

গৌর আচার্য

কালিয়াগঞ্জ শেষ আপডেট: ০৮ এপ্রিল ২০১৮ ০২:০৬
Share:

হামলা: অসীম ঘোষের বাড়ির পাশে ক্লাবে ভাঙচুর। নিজস্ব চিত্র

রাস্তা সুনসান। বেশির ভাগ বাড়ির দরজা-জানালা বন্ধ। ইতিউতি দু-চারজনকে দেখা গেলেও কথা বলতে চান না কেউ। প্রশ্ন করলেই ঢুকে যাচ্ছেন বাড়ির মধ্যে। গলির ভেতরে। শনিবার কালিয়াগঞ্জের তরঙ্গপুরের দেখা গিয়েছে এমনই আতঙ্কের ছবি। শুক্রবার রাতে তৃণমূলের রাজ্য সম্পাদক তথা দলের উত্তর দিনাজপুর জেলার প্রাক্তন সভাপতি অসীম ঘোষের বাড়িতে হামলার পরে এমনই আতঙ্ক ছড়িয়েছে এলাকায়।

Advertisement

তাই সকাল থেকে অসীমবাবুর বাড়ির সামনে পুলিশ পিকেট বসানো হয়। তরঙ্গপুর এলাকার দিনভর ছিল পুলিশের নজরজারি। তরঙ্গপুর এলাকার বাসিন্দাদের একাংশের দাবি, ১৯৯৮ সালে তৃণমূলের জন্মলগ্ন থেকে অসীমবাবু ওই দলের সঙ্গে যুক্ত। পেশায় সর্ষের তেলকলের মালিক অসীমবাবু এলাকায় নিরীহ ও পরোপকারী বলে পরিচিত। আপদ বিপদ বা চিকিৎসার ব্যাপারে রাজনৈতিক পরিচয় না দেখে তিনি বাসিন্দাদের সাধ্যমতো সহযোগিতা করেন বলে অনেকে মানেন।

অতীতে কোনও রাজনৈতিক বা ব্যক্তিগত গোলমালে তাঁর নাম জড়ায়নি। এই পরিস্থিতিতে অসীমবাবুর বাড়িতে হামলার ঘটনায় অবাক তাঁর প্রতিবেশীরা। অভিযোগ, শুক্রবার রাতে দলীয় কর্মীদের সঙ্গে বৈঠক করে বাড়ি ফেরার পথে বাড়ির সামনেই বিজেপির কর্মীরা তীর, ধনুক, হাঁসুয়া ও তরোয়াল নিয়ে অসীমবাবুর ওপর চড়াও হয়।

Advertisement

কোনও মতে দৌড়ে বাড়িতে ঢুকে প্রাণ বাঁচান তিনি। জেলা পরিষদের আসনে দাঁড়ালে তাঁকে খুন করা হবে বলেও হুমকি দেওয়া হয় বলে অভিযোগ। এর পর বিজেপির কর্মীরা অসীমবাবুর বাড়ির পাশে তৃণমূল প্রভাবিত একটি ক্লাবে চড়াও হয়ে প্লাস্টিকের চেয়ার-টেবিল ভাঙচুর করে। তৃণমূল কর্মীদের তিনটি মোটরবাইকও তারা ভাঙচুর করে বলে অভিযোগ। অসীমবাবু বলেন, ‘‘আড়ালে কে বা কারা আছেন সেটাও জানা দরকার। এলাকাবাসীকে আতঙ্কিত করার চেষ্টা হচ্ছে সেটা বুঝতে পারছি। এতে লাভ হবে না।’’

বিজেপির জেলা সভাপতি নির্মল দামের পাল্টা দাবি, অসীমবাবু দাঁড়ালে কার ক্ষতি হতে পারে সেটা তদন্ত হওয়া দরকার। তিনি বলেন, ‘‘তৃণমূল গোটা রাজ্যে মনোনয়নে বিরোধীদের কী ভাবে বাধা দিচ্ছে তা মানুষ টিভিতে দেখছেন। একতরফা এমন কতদিন চলতে পারে? হয়তো অধৈর্য হয়ে মানুষ প্রতিরোধে নেমেছেন। এটা সব তৃণমূল নেতাদের মাথায় রাখতে হবে।’’

অসীমবাবুর প্রতিবেশী রাজু ঘোষ, বিভু মণ্ডল ও রাজু সাহার দাবি, ভবিষ্যতে যাতে এই ধরণের ঘটনা না ঘটে, তার জন্য পুলিশকে সক্রিয় ভূমিকা নিতে হবে।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন