ছারখার: ধ্বংসস্তূপে পরিণত এলাকা। ফাইল চিত্র
পুড়ে ছাই হল ইসলামপুর শহরের ইসলামচক লাগোয়া চম্পাবাগের ৩০টি বাড়ি। মঙ্গলবার গভীর রাতের ঘটনা। খবর পেয়ে দমকলের তিনটে ইঞ্জিন প্রায় আড়াই ঘণ্টার চেষ্টায় আগুন নিয়ন্ত্রণে আনে। পুলিশও ঘটনাস্থলে যায়। কিন্তু, ঘটনাস্থলে ঢোকার রাস্তা সঙ্কীর্ণ হওয়ায় দমকল পৌঁছনোর আগেই ঘরদোর, আসবাব, জামাকাপড়, মূল্যবান সামগ্রী পুড়ে ছাই হয়েছে। কলেজ উত্তীর্ণ এক ছাত্রী জানান, তাঁর সার্টিফিকেটও পুড়ে ছাই হয়েছে। সব মিলিয়ে কয়েক লক্ষাধিক টাকার ক্ষতি হয়েছে বলে আশঙ্কা স্থানীয়দের।
আগুনে গবাদি পশু, হাঁস-মুরগির মৃত্যু হয়েছে। দমকল দেরিতে পৌঁছেছে বলে অভিযোগ তুলে বাসিন্দারা ক্ষোভে ফেটে পড়েন। যদিও দমকলের দাবি, খবর পেয়েই তারা ঘটনাস্থলে পৌঁছেছে। ওই এলাকার রাস্তাগুলি এতটাই অপ্রশস্ত যে বড় গাড়ি নিয়েই ঢোকা কষ্টকর হয়ে গিয়েছিল।
পুলিশ জানায়, এ দিন গভীর রাতে হঠাৎই এক বাড়ি থেকে আগুন দেখতে পান স্থানীয় বাসিন্দারা। তাঁদের হইচইয়ে সকলে বার হন। মুহূর্তের মধ্যে আগুন ছড়িয়ে পড়ে এলাকা জুড়ে। পর পর ৩০টি বাড়ি পুড়ে য়ায়। ওই বাড়িগুলিতে থাকা দু’টি গ্যাসের ছোট সিলিন্ডার ফেটেও আতঙ্ক তৈরি হয়। বাড়িগুলো বেড়ার ছিল বলে আগুন আরও তাড়াতাড়ি ছড়িয়ে পড়ে বলে দাবি স্থানীয়দের।
বাসিন্দারা জানিয়েছেন, সেখানে ছোট ছোট ঘর ভাড়া করে থাকেন মেয়েরা। ক্ষতিগ্রস্তদের মধ্যেই এক জনের কথায়, ‘‘রাত সাড়ে ১২টা পৌনে একটা হবে। খাওয়ার জন্য ঘুম থেকে উঠেছিলাম। পাশের ঘরে মেয়ে ছিল। অন্য একটি ঘরে কর্মীরা ছিলেন। পোড়া গন্ধ পাই। দরজা একটু ফাঁকা করেই দেখি বাইরে একটি ঘরে আগুন জ্বলছে। চেঁচামেচি করে সবাইকে ঘুম থেকে তুলে পালিয়েছি। মেয়ে শুধু গ্যাসের একটি সিলিন্ডার বের করতে পেরেছে। সমস্ত কিছুই পুড়ে ছাই হয়েছে আমাদের।’’
এ রাতে ঘটনার পেয়ে গোয়ালপোখরের বিধায়ক তথা গ্রামোন্নয়ন মন্ত্রী গোলাম রব্বানি, ইসলামপুরের পুরসভার ভাইস চেয়ারম্যানের স্বামী হাজি সরিফ সহ বিধায়ক প্রতিনিধিরা ঘটনাস্থলে যান। এ দিন দুপুর নাগাদ ইসলামপুর পুরসভার চেয়ারম্যান কানাইয়ালাল অগ্রবালের স্ত্রী তথা ইসলামপুর পুরসভার কাউন্সিলর শকুন্তলা অগ্রবাল এলাকা পরিদর্শন করে বাসিন্দাদের সঙ্গে কথা বলেন। বাসিন্দা মহম্মদ জাকি, বিজলু রায়রা বলেন, ‘‘বিধায়ক অসুস্থ, তাই ওঁর বাড়িতে গিয়েই বিষয়টি নিয়ে আলোচনা করেছি। উনি সহযোগিতার আশ্বাস দিয়েছেন।’’ কানাইয়ালাল বলেন, ‘‘চম্পাবাগে বেশ কিছু বাড়ি আগুনে পুড়ে ছাই হয়ে গিয়েছে। পুরসভার পক্ষ থেকে তাঁদের সহযোগিতা করা হচ্ছে।’’ রাজ্যের মন্ত্রী গোলাম রব্বানি ঘটনাস্থলে গিয়েছিলেন। তিনি বলেন, ‘‘আগুন লাগার খবর পেয়েই এলাকাতে গিয়েছিলাম। প্রশাসন পুরো বিষয়টি দেখছে।’’