ধৃত: জেলের পথে নিয়ে যাওয়া হচ্ছে জন বার্লাকে। নিজস্ব চিত্র
আপাতত জেল হেফাজতে গেলেন বিজেপির জনজাতি নেতা জন বার্লা। ভোটের আগে তিনি মুক্তি পাবেন কি না, তা অনিশ্চিত।
বিজেপির অভিযোগ, পরিকল্পনা করেই মনোনয়ন প্রত্যাহার শুরুর মুখে জনজাতি নেতাকে জেলে পুরে ভোটের ময়দান থেকে সরিয়ে রাখা হল। বিজেপি নেতারা মানছেন, জনের অনুপস্থিতিতে চা বলয়ে দল কিছুটা হলেও দুর্বল হয়ে পড়বে। জন থাকলে এমনকী হুমকি দিয়ে প্রার্থী তোলানোও সম্ভব ছিল না বলে তাঁদের দাবি।
জনের বিরুদ্ধে ২০০৯ সালে জয়গাঁ থানায় গোলমাল, খুনের চেষ্টা এবং ২০১৫ সালে বীরপাড়ায় জাতীয় সড়ক অবরোধ, সরকারি কাজে বাধা দানের মামলা দু’টিতে পরোয়ানা ছিল। সেই পরোযানা দেখিয়েই বুধবার রাতে বানারহাট থেকে তাঁকে গ্রেফতার করে পুলিশ।
জনের গ্রেফতারি নিয়ে বিজেপি যতই অভিযোগ তুলুক না কেন, তৃণমূল নেতৃত্ব কিন্তু বিষয়টিকে আমল দিচ্ছেন না। আলিপুরদুয়ারের বিধায়ক সৌরভ চক্রবর্তী বলেন, “পুলিশ কোন মামলায় কাকে গ্রেফতার করবে, তা আমাদের জানার কথা নয়, বলার কথাও নয়। দল এখন ভোট নিয়ে ব্যস্ত, এ সব নিয়ে মাথা ঘামানোর সময় নেই।”
আলিপুরদুয়ার এবং জলপাইগুড়ি দুই জেলা পরিষদই নিজেদের দখলে রাখতে মরিয়া তৃণমূল। এখানে যে চা বলয় অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ, তা বারবারই বিভিন্ন জায়গায় স্পষ্ট করে দিয়েছেন শাসক দলের নেতারা। পাঁচটি চা বাগান যে খুলতে সাহায্যে করেছে রাজ্য সরকার, সেই বিষয়টি তাঁদের কথায় বারবার ফিরে এসেছে।
২০০৮ সাল চা বলয়ে জনজাতি সমাজ একজোট হয়ে আন্দোলন শুরু করে। তার ধাক্কায় চা বলয় থেকে কার্যত মুছে যায় বামেরা। ডুয়ার্স-তরাইয়ের জনজাতির বাসিন্দাদের একজোট করতে যে দুই নেতা মূলত নেতৃত্ব দিয়েছিলেন, তাঁদের মধ্যে একজনের মৃত্যু হয়েছে। রয়ে গিয়েছেন জন। ২০১৫ সালে তিনি বিজেপিতে যোগ দেন এবং তখন থেকেই চা বলয়ে পদ্ম ফোটা শুরু।
গত বিধানসভা ভোটে মাদারিহাট আসনটি জিতেছে বিজেপি। নাগরাকাটা, কালচিনিতেও ভাল ভোট পেয়েছে। আলিপুরদুয়ারেও সর্বত্র তাদের ভোট বেড়েছে। বিজেপির দাবি, জনই এই উত্থানের কারিগর। বিজেপির সঙ্গে টক্কর দিতে এর মধ্যে তৃণমূলও চা বলয়ে পরিচিত মুখ মোহন শর্মাকে জেলা সভাপতি করেছে।
এ দিন মহকুমা শাসকের দফতর থেকে বের হওয়ার সময়ে জন বলেন, “ভয় পেয়ে তৃণমূল আমাকে গ্রেফতার করালো। কিন্তু তাতেও শেষ রক্ষা হবে না। আমি না থাকলেও, চা বলয়ে আমার বলে দেওয়া প্রার্থীকেই সকলে ভোট দেবে।“