মা বিজেপি প্রার্থী, মার খেল ছেলে

বৈরাগিরহাটের বিজেপির পঞ্চায়েত সমিতির প্রার্থী মহিমাদেবী অভিযোগ করেন, রাত ১০ টার দিকে বাইকে চেপে পঞ্চাশ থেকে ষাট জন তৃণমূল কর্মী তাঁদের বাড়িতে হামলা চালান।

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

কোচবিহার শেষ আপডেট: ২৬ এপ্রিল ২০১৮ ১২:২৪
Share:

মা বিজেপির প্রার্থী হওয়ায় নবম শ্রেণির ছাত্রকে ঘর থেকে বের করে মারধরের অভিযোগ উঠল তৃণমূলের বিরুদ্ধে। মঙ্গলবার রাতে মাথাভাঙা থানার বৈরাগিহাটের তেঁতুলেরছড়া গ্রামে ওই ঘটনায় আতঙ্ক ছড়িয়ে পড়েছে। ওই ছাত্রের নাম ধীরাজ রায়। সে মোহনপুর সাবিত্রী বিদ্যাপীঠে নবম শ্রেণিতে পড়াশোনা করে।

Advertisement

দিন কয়েক আগেই ওই মহকুমার ফুলবাড়িতে বাবলু সরকার নামে এক তৃণমূল কর্মীকে খুন করার অভিযোগ ওঠে বিজেপির বিরুদ্ধে। তারপর থেকেই তেতে উঠেছে গোটা মহকুমা। মঙ্গলবার দুপুরে ওই বাড়িতে যান তৃণমূলের কোচবিহার জেলা সভাপতি রবীন্দ্রনাথ ঘোষ ও বিধায়ক বিনয়কৃষ্ণ বর্মন। বিজেপির অভিযোগ, তৃণমূলের ওই নেতারা ফিরে যাওয়ার পরে ফের নতুন করে গণ্ডগোল শুরু হয়।

রাতে ফুলবাড়ি লাগোয়া উত্তরখেতি এবং কাঁচাখাওয়ায় বিজেপির দুই কর্মী শ্রীদাম বিশ্বাস ও বিনয় সরকারের বাড়ি ভাঙচুর করা হয়। আতঙ্কে ওই পরিবারের সদস্যরা এলাকা ছেড়ে পালিয়ে যান। ওই রাতেই হামলা হয় প্রার্থী মহিমা রায়ের বাড়িতে। এই অবস্থায় কর্মীদের নিরাপত্তার দাবিতে বুধবার দুপুরে কোচবিহার জেলা পুলিশ সুপারের অফিসের সামনে বিক্ষোভ দেখানো হয়। জেলা বিজেপির সভাপতি নিখিলরঞ্জন দে অভিযোগ করেন, মাথাভাঙা ছাড়াও কোচবিহার জেলার একাধিক জায়গায় হামলা চলছে। ওই রাতেই নাটাবাড়ি বিধানসভা কেন্দ্রের হাওড়ারহাটে এক বিজেপি কর্মীর বাড়ি আগুন দিয়ে পুড়িয়ে দেওয়া হয়। তিনি বলেন, “পুলিশ কোনও ব্যবস্থা নিচ্ছে না। উল্টে নির্দোষ বিজেপি কর্মীদের গ্রেফতার করছে। এরপরে আমরা অনশন আন্দোলন শুরু করব।”

Advertisement

তৃণমূল অবশ্য বিজেপির অভিযোগ ঠিক নয় বলে দাবি করেছে। তৃণমূলের দাবি, বিজেপি একাধিক জায়গায় ছক কষে হামলা করেছে। বিশেষ করে বিজেপির রাজ্য সভাপতি দিলীপ ঘোষের হুমকির পরেই ফুলবাড়িতে যুব তৃণমূলের এক নেতাকে কুপিয়ে খুন করা হয় বলে অভিযোগ। তৃণমূলের কোচবিহার জেলা সভাপতি রবীন্দ্রনাথবাবু বলেন, “বিজেপি পরিকল্পিতভাবে সব জায়গায় অশান্তি তৈরির চেষ্টা করছে। আমাদের দলের এক নেতাকে কুপিয়ে খুন করেছে বিজেপি কর্মীরা। এমন অপরাধ করার পরেও মিথ্যে কথা বলছে তাঁরা। এর জবাব সাধারণ মানুষ দেবে।”

বৈরাগিরহাটের বিজেপির পঞ্চায়েত সমিতির প্রার্থী মহিমাদেবী অভিযোগ করেন, রাত ১০ টার দিকে বাইকে চেপে পঞ্চাশ থেকে ষাট জন তৃণমূল কর্মী তাঁদের বাড়িতে হামলা চালান। সেই সময় তাঁরা বাড়ি থেকে সরে যান। কিন্তু তাঁর ছেলে নবম শ্রেণির ছাত্র ধীরাজ পালিয়ে যেতে পারেনি। তাঁকে ধরে খোলা মাঠের দিকে নিয়ে যায় তৃণমূল কর্মীরা। চিৎকার করে কাঁদলেও কেউ শোনেনি। তাঁকে বাঁশ, লোহার রড দিয়ে মারধর করা হয়েছে। এমনকি তাঁকে নদীতে ফেলে দেওয়ার হুমকিও দেওয়া হয়।

মহিমাদেবী বলেন, “এমন আতঙ্কের মধ্যে বেঁচে থাকা কঠিন। বাড়িতে কোনও কিছু আস্ত নেই।” মাথাভাঙা ১ নম্বর ব্লকের তৃণমূল নেতা আবু তালেব আজাদ বলেন, “একদম মিথ্যে অভিযোগ। এমন কোনও ঘটনাই ঘটেনি।”কোচবিহারের পুলিশ সুপার ভোলানাথ পাণ্ডে বলেন, “অভিযোগের ভিত্তিতে সবক্ষেত্রে ব্যবস্থা নিচ্ছে পুলিশ।”

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন