চড়: মন্ত্রীর মার বিজেপি কর্মীকে। নিজস্ব চিত্র
আশঙ্কা ছিলই। সোমবার পঞ্চায়েত ভোটের সকাল থেকে গুলি-বোমার লড়াইয়ে তপ্ত হয়ে উঠল কোচবিহার। ভোটের লাইনেই মৃত্যু হল এক নাগরিকের। গুলিবিদ্ধ হয়েছে ২ জন। বোমার আঘাতে জখম হল অন্তত আরও ১০ জন। এ ছাড়াও রক্তাক্ত হয়েছে কমপক্ষে আরও ১৫ জন। অধিকাংশ ক্ষেত্রেই জখম ব্যক্তিরা বিরোধী দলের। পুলিশ সূত্রের খবর, মৃত ব্যক্তির নাম দুলাল ভৌমিক (৭২)। অভিযোগ, তাঁকে শাসকদলের কর্মীরা মারধর করেন। যদিও শাসক ও পুলিশের দাবি, হৃদরোগে আক্রান্ত হয়ে মৃত্যু হয়েছে ওই বৃদ্ধের। এই অবস্থায় সন্ধের মধ্যে সব মিলিয়ে আশি শতাংশ ভোট পড়ে।
কোচবিহারের জেলাশাসক কৌশিক সাহা বলেন, “প্রয়োজন অনুসারে ব্যবস্থাও নেওয়া হবে।” প্রশাসন সূত্রের খবর, সে ক্ষেত্রে একাধিক বুথে নতুন করে ভোট নেওয়া হতে পারে। ইতিমধ্যে একটি রিপোর্টও রাজ্য নির্বাচন কমিশনে পাঠিয়েছে জেলা। পুলিশ সূত্রের খবর, গোসানিমারি থেকে পিস্তল-সহ এক দুষ্কৃতীকে তো বটেই, জেলার বিভিন্ন প্রান্ত থেকে আরও বেশ কয়েক জনকে গ্রেফতার করা হয়েছে। কোচবিহারের এসপি ভোলানাথ পাণ্ডে বলেন, “সব ক্ষেত্রেই ব্যবস্থা নেওয়া হচ্ছে।”
কোচবিহারের মূলত দুটো ছবি সামনে এসেছে। নাটাবাড়ি, কোচবিহার উত্তর বিধানসভা কেন্দ্র, তুফানগঞ্জ, মাথাভাঙা এবং মেখলিগঞ্জে বিজেপির সঙ্গে টক্কর হয়ে শাসকদলের। দিনহাটা, শীতলখুচি এবং কোচবিহার দক্ষিণ বিধানসভা কেন্দ্রে গোঁজ প্রার্থীদের সঙ্গে লড়াই তীব্র আকার নেয়। ভোটের আগেই দু’পক্ষই আগ্নেয়াস্ত্র মজুত করেছিল বলে অভিযোগ। এ দিন ভোর সকাল থেকে দিনহাটার গীতালদহ, ওকরাবাড়ি, বড় আটিয়াবাড়ি, মাতালহাট থেকে কোচবিহার দক্ষিণ বিধানসভার সুটকাবাড়ি এলাকা বোমা-গুলির লড়াইয়ে উত্তপ্ত হয়ে ওঠে। বিরোধীদের দাবি, বেশির ভাগ এলাকায় ভয়েই পালিয়ে যায় তাদের লোকজন। তাদের বক্তব্য, কাপড়ে মুখ ঢাকা এই দুষ্কৃতীরা তৃণমূলের ঝাণ্ডা নিয়ে এসেছিল। সাবেক ছিটমহলের করলায় বুথ দখলের অভিযোগ ওঠে তৃণমূলের বিরুদ্ধে।
অভিযোগ, সুটকাবাড়িতে সকাল ৮টা নাগাদ হাই মাদ্রাসার সামনে গোঁজ ও তৃণমূলের সমর্থকদের বোমার লড়াই। মর্জিনা বিবি নামে এক মহিলা-সহ ১০ জন জখম হন। গীতালদহেরই নারায়ণগঞ্জে গুলিবিদ্ধ হয় মিজানুর রহমান-১ তৃণমূল সমর্থক।
বিজেপি কোচবিহার জেলা সভাপতি নিখিলরঞ্জন দে বলেন, “পুলিশের সামনে সমস্ত বুথে ছাপ্পা হয়।” সিপিএমের কোচবিহার জেলা সম্পাদক অনন্ত রায় বলেন, “ভোটের নামে প্রহসন।” তৃণমূলের কোচবিহার জেলা সভাপতি রবীন্দ্রনাথ ঘোষ বলেন, “দু-একটি জায়গা ছাড়া সর্বত্র স্বচ্ছ ও শান্তিপূর্ণ নির্বাচন হয়েছে।’’