প্রতীকী ছবি।
পঞ্চায়েত ভোটে বিজেপির ফল চিন্তায় ফেলেছে উত্তর দিনাজপুর জেলা তৃণমূল নেতৃত্বকে। তার উপরে এখনও ৩০টির মতো পঞ্চায়েত ত্রিশঙ্কু অবস্থায় রয়েছে। তার একাংশে বিজেপি আবার সংখ্যা গরিষ্ঠ দল। ফলে বিভিন্ন গ্রাম পঞ্চায়েতে বিক্ষুব্ধ জয়ী নির্দল সদস্যদের দলে ফেরাতে তৎপরতা শুরু হয়েছে তৃণমূল শিবিরে। বিরোধীরাও বসে নেই। তাঁরাও নির্দল জয়ী প্রার্থীদের সঙ্গে আলোচনা শুরু করেছেন।
জেলা প্রশাসন সূত্রে জানা গিয়েছে, গ্রাম পঞ্চায়েতগুলোর মধ্যে রায়গঞ্জ, চাকুলিয়া, গোয়ালপোখর থানা এলাকায় ৫টি করে গ্রাম পঞ্চায়েত, করণদিঘি, ডালখোলা, ইসলামপুর থানা এলাকায় ৪টি করে গ্রাম পঞ্চায়েত ত্রিশঙ্কু অবস্থায় রয়েছে। কলিয়াগঞ্জে তিনটি এবং ইটাহারে ২ টি গ্রাম পঞ্চায়েত ত্রিশঙ্কু রয়েছে। তার মধ্যে রায়গঞ্জের বিন্দোল, বাহিন, মাড়াইকুড়া, হেমতাবাদের বাঙালবাড়ির মতো বিভিন্ন জায়গায় অনেক গ্রাম পঞ্চেয়েতেই তৃণমূল সংখ্যা গরিষ্ঠ হিসেবে রয়েছে। আবার রায়গঞ্জের বরুয়া, কালিয়াগঞ্জের রাধিকাপুর, মুস্তাফনগর, মালগাও, চাকুলিয়ার কানকি, গোয়ালপোখরের সাহাপুর ১-এর মতো বেশ কিছু গ্রাম পঞ্চায়েতে সংখ্যা গরিষ্ঠ দল বিজেপি।
তৃণমূলের জেলা সভাপতি অমল আচার্য বলেন, ‘‘এক দিকে বিক্ষুব্ধ জয়ী নির্দল প্রার্থীদের দলে ফেরানোর কথা জানানো হয়েছে। অনেকেই আমাদের সঙ্গে থাকবেন জানিয়েছেন।’’ বিরোধী দলগুলোর অভিযোগ, তৃণমূল হুমকি দিয়ে, টোপ দিয়ে সদস্যদের দলে টানতে চাইছে। তৃণমূল অবশ্য ওই অভিযোগ উড়িয়ে দিয়েছে।
জেলার করণদিঘি ব্লকের ১৬টি গ্রাম পঞ্চায়েতের মধ্যে আটটি ত্রিশঙ্কু অবস্থায়। ফলে বোর্ড দখল করতে নির্দল বড় ফ্যাক্টর। করণদিঘির তৃণমূল বিধায়ক মনোদেব সিংহ বলেন, ‘‘টিকিট বিলি নিয়ে সমস্যা হওয়ায় তাঁরা নির্দল হয়ে দাঁড়ান। আমরা তাঁদের ফের দলে আহ্বান করেছি।’’ নির্দলদের একাংশ জানান, টিকিট চেয়ে তাঁরা পাননি। দল পাশে থাকেনি। এখন তাঁরা কী করবেন, সে ব্যাপারে ভাবনা চিন্তা করছেন।
বিজেপির দাবি, তৃণমূলের সন্ত্রাসের প্রতিবাদে অনেক নির্দল জয়ী প্রার্থী তাদের সমর্থন করবে। বিজেপির জেলা সভাপতি নির্মল দাস বলেন, ‘‘ত্রিশঙ্কু অবস্থায় থাকা ৭ থেকে ১০টি গ্রাম পঞ্চায়েত আমাদের দখলে আসবে। নির্দল এবং অন্যদের সঙ্গে কথাও চলছে।’’ বাম এবং জেলা কংগ্রেস নেতৃত্বের একাংশ জানান, কয়েকটি গ্রাম পঞ্চায়েতে তাঁদেরও ক্ষমতায় আসার সম্ভাবনা রয়েছে। সেই মতো তাঁরাও আলাপ আলোচনা করছেন। ডালখোলা থানার সুর্দাপুর ২ পঞ্চায়েতে তৃণমূল এবং সিপিএম দু’জনেই ৬টি করে আসন পেয়েছে। বিজেপি এবং নির্দল পেয়েছে ৩টি করে আসন। তেমনই বাজারগাঁও-২ গ্রাম পঞ্চায়েতে বিজেপি, কংগ্রেস, তৃণমূল তিন দলই তিনটি করে আসন পেয়েছে। সিপিএমের ১টি। সিপিএম জেলা সম্পাদক অপূর্ব পাল বলেন, ‘‘কংগ্রেস, নির্দল প্রার্থী যাঁরা জিতেছেন তাদের সঙ্গে কথা বলা হচ্ছে। কিছু পঞ্চায়েতে ক্ষমতায় আসতে আমরাও আশাবাদী।’’