রবীন্দ্রসঙ্গীত রিমেক হয়েছে, পুরনো হিন্দি গানের রিমেক তো আকছার হচ্ছে। এ বারে সেই তালিকায় নাম জুড়ল ভাওয়াইয়ার। যে কোচবিহারে ভাওয়াইয়া শিল্পী আব্বাসউদ্দিন, নায়েব আলি টেপুর জন্ম, সেই জেলা থেকেই ওই গান রিমেক করতে এগিয়ে এসেছেন আর এক শিল্পী। ইতিমধ্যেই অর্ক মহলানবিশ একটি ‘গোয়ালপাড়িয়া’ গানের রিমেক করেছেন। তিনি জানিয়েছেন, প্রতিমা বড়ুয়ার গাওয়া ‘বারো মাসে তেরো ফুল ওঠে’ গানটি তিনি রিমেকের কাজ শেষ করেছেন। সেই সঙ্গে কাজ করছেন ভাওয়াইয়া গান, ‘কোনদিন আসিবেন বন্ধু কয়া যান কয়া যান রে।’
শিল্পীর কথায়, “ভাওয়াইয়া ও গোয়ালপাড়িয়া প্রায় একই গান। দুই-একটি শব্দের হেরফের রয়েছে মাত্র। বাইরে অনেক লোকসঙ্গীত নিয়ে কাজ হলেও উত্তরবঙ্গ ও অসমের এই লোকগান নিয়ে এখনও তেমন কাজ হয়নি। সেই জন্যেই ওই কাজ শুরু করেছি। তা নিয়ে সমালোচনা ও আলোচনা হবে। তবুও একটা চেষ্টা করে যাচ্ছি।” দীর্ঘদিন ধরেই অর্কবাবু সঙ্গীতের জগতে রয়েছেন। আধুনিক গানের সঙ্গে লোকসঙ্গীতের চর্চা তিনি করে আসছেন বহুদিন ধরেই। তিনি বলেন, “গানের আবেদন, কথা ও সুর অটুট রেখেই আমি রিমেক করেছি। যা সাধারণ মানুষের কাছে গ্রহণযোগ্য হবে বলেই মনে করছি।” তিনি জানান, ভবিষ্যতে তাঁর একটি অডিও অ্যালবাম প্রকাশের ইচ্ছে রয়েছে।
উত্তরবঙ্গ তথা কোচবিহারে ভাওয়াইয়া গানের সুরে এখনও মানুষের ঢল নামে। গ্রামে তো বটেই শহরেও সঙ্গীতপ্রেমী মানুষেরা ওই গানের টানে হাজির হন অনেক অনুষ্ঠানেই। কোচবিহারে ভাওয়াইয়া শিল্পী নায়েব আলি টেপুর নামে স্মরণ সমিতি গড়ে ওঠেছে বহু বছর আগে। খোদ উত্তরবঙ্গ উন্নয়ন মন্ত্রী রবীন্দ্রনাথ ঘোষের উদ্যোগেই ওই সমিতি গড়ে ওঠে। মন্ত্রীর সঙ্গেই ওই সমিতিতে রয়েছেন সাংসদ পার্থপ্রতিম রায়। সাংসদের কথায়, “ভাওয়াইয়ার সঙ্গে মাটির যোগ রয়েছে। তা কালজয়ী সঙ্গীত। আধুনিক বয়সের ছেলেমেয়েরা অনেকেই রিমেকের প্রতি আকৃষ্ট হচ্ছে। এটার দরকার নেই তা বলা যাবে না। তবে মূল সঙ্গীতের বিষয়টি অন্যরকম।”
ভাওয়াইয়া গানের শিল্পী নজরুল হক বলেন, “এই ধরনের নতুন চিন্তাভাবনা ভাল। রিমেক সঠিক ভাবে হলে এই গানের প্রচার বাড়বে বলেই আমি মনে করি। ভাওয়াইয়া গান আমরা যারা গাই তারা ওই গান প্রচারের লক্ষ্য নিয়ে কাজ করি। রিমেক হলে মূল গান কখনও নষ্ট হয় না। বরঞ্চ ওই গানের প্রতি টান আরও বাড়বে বলে মনে করছি।” পাশাপাশি তিনি জানান, ভাওয়াইয়া গানের রিমেক এখনও তিনি শোনেননি। তিনি বলেন, “গান রিমেকের কথা শুনেছি। এখনও আমার কাছে পৌঁছয়নি। শুনলে তা নিয়ে আরও ভাল করে বলা যাবে।”