জট: এয়ারভিউ মোড় থেকে মাল্লাগুড়ি পর্যন্ত রাস্তায় দেখা গেল এমনই ছবি। মঙ্গলবার দুপুরে। ছবি: বিশ্বরূপ বসাক
শিলিগুড়ি পুরসভা বামেদের দখলে। শিলিগুড়ি মহকুমা পরিষদও বামেদের দখলে। অথচ, বামেদেরই ট্রেড ইউনিয়নের ডাকা দেশ জুড়ে দু’দিনের ধর্মঘটের প্রথম দিন শিলিগুড়ির রাস্তা প্রায় পুরোপুরি দখল করে মিছিল করল তৃণমূল। একে দলের ‘ব্রিগেড সমাবেশের প্রস্তুতি মিছিল’ বলা হলেও শিলিগুড়িতে লোক টানায় তাঁরা এখন কতটা এগিয়ে, সেটাই যেন বোঝাতে চাইলেন দুই মন্ত্রী অরূপ বিশ্বাস ও গৌতম দেব।
মঙ্গলবারের এই দীর্ঘ মিছিল সামাল দিতে হিমশিমও খেলেন তৃণমূল নেতারা। নজরে পড়ল ধাক্কাধাক্কিতে মন্ত্রী-সহ বেশ কয়েকজনের জুতো খুলে যাওয়ার ছবিও। ক্ষিপ্ত হয়ে এক নেতা সতীর্থকে চড় মারার হুঁশিয়ারি দিয়েছেন বলেও অভিযোগ উঠেছে। অরূপ বিশ্বাসের বক্তব্য, ‘‘কীসের বনধ! মানুষ জানেন, বাংলা কার হাতে নিরাপদ। মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের নেতৃত্ব চাইছে দেশ। তাই ব্রিগেড সমাবেশের প্রস্তুতি মিছিলে মানুষের ভিড় উপচে পড়েছে। মূল সমাবেশে এ বার উত্তরবঙ্গের মানুষের জনস্রোত আছড়ে পড়বে।’’
এ দিন বামেরা বেলা ১১টায় ঝটপট একটি মিছিল সেরে ফেলেন। সিপিএম নেতা অশোক ভট্টাচার্য, জীবেশ সরকাররা পার্টি অফিসে ঢুকে ‘কন্ট্রোল রুম’-এ বসেন। এর ঘণ্টাখানেকের মধ্যেই পথে নামে তৃণমূল। বাঘা যতীন পার্কে বেলা ১২টার মধ্যে জড়ো হয়ে যান নেতা-কর্মীরা। ব্রিগেড ছাড়াও শিলিগুড়িতে গত পুরভোট, লোকসভা ও মহকুমা পরিষদ ভোটে পিছিয়ে থাকার জায়গা থেকে তৃণমূল এগিয়েছে, সেটা বোঝানোও অন্যতম লক্ষ্য ছিল বলে তৃণমূলের অন্দরের খবর। মিছিল শুরুর পরে তা সিপিএমের শিলিগুড়ি জেলা সদর দফতরের সামনে কিছুক্ষণ থামে। সেখানে মিছিল থেকে স্লোগানও ওঠে। দলীয় কার্যালয়ের বারান্দা থেকে তা দেখে কয়েকজন সিপিএম নেতাকে ভিতরে ঢুকে যেতেও দেখা যায়।
তৃণমূলের দার্জিলিং জেলার পর্যবেক্ষক তথা পূর্তমন্ত্রী অরূপ বিশ্বাসের দাবি, ‘‘লোকসভা ভোটে রাজ্যে কী হবে, তা স্পষ্ট। শিলিগুড়িতেও এখন তৃণমূলই মূল শক্তি।’’ তা হলে মিছিলে ধাক্কাধাক্কি কেন? মন্ত্রীর বক্তব্য, ‘‘বড় মিছিলে একটু ধাক্কাধাক্কি হবেই। শবদেহ বহনকারীদের জায়গা দিতে, মিছিলের ল্যাজামুড়ো ঠিক করতে দাঁড়াতে হয়েছে। ঠেলাঠেলি হয়েছে। তবে চড় মারার হুমকির কথা মিথ্যে।’’ সিপিএম নেতা তথা শিলিগুড়ির বিধায়ক অশোক ভট্টাচার্যের কটাক্ষ, ‘‘একে অন্যকে দাবিয়ে রাখার প্রতিযোগিতা কোথায় হয়, সবাই জানে। তৃণমূল নেতারা আগে নিজেদের সামলান। বিশৃঙ্খলা শিলিগুড়ি পছন্দ করে না।’’