পরীক্ষায় চাপ, বন্‌ধের ইঙ্গিত দিলেন গুরুঙ্গ

শিক্ষক এবং প্রধান শিক্ষক সংগঠনের প্রতিনিধিদের ডেকে দ্রুত পাহাড়ের স্কুলগুলির পরীক্ষা শেষ করার আর্জি জানালেন জিটিএ-র চিফ তথা গোর্খা জনমুক্তি মোর্চা সভাপতি বিমল গুরুঙ্গ। পৃথক গোর্খাল্যান্ডের দাবিতে আন্দোলন শুরু হতে চলেছে বলে জানিয়ে গুরুঙ্গ দাবি করেছেন, ছাত্র-ছাত্রীদের যাতে কোনও সমস্যা না হয়, সে কারণেই এই আর্জি।

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

দার্জিলিং শেষ আপডেট: ১২ সেপ্টেম্বর ২০১৬ ০২:১৭
Share:

বিমল গুরুঙ্গ। — নিজস্ব চিত্র।

শিক্ষক এবং প্রধান শিক্ষক সংগঠনের প্রতিনিধিদের ডেকে দ্রুত পাহাড়ের স্কুলগুলির পরীক্ষা শেষ করার আর্জি জানালেন জিটিএ-র চিফ তথা গোর্খা জনমুক্তি মোর্চা সভাপতি বিমল গুরুঙ্গ। পৃথক গোর্খাল্যান্ডের দাবিতে আন্দোলন শুরু হতে চলেছে বলে জানিয়ে গুরুঙ্গ দাবি করেছেন, ছাত্র-ছাত্রীদের যাতে কোনও সমস্যা না হয়, সে কারণেই এই আর্জি।

Advertisement

রবিবার দার্জিলিঙের গোর্খা রঙ্গ মঞ্চে মোর্চা প্রভাবিত শিক্ষক এবং প্রধান শিক্ষক সংগঠনের প্রতিনিধিদের নিয়ে বৈঠক করেছেন গুরুঙ্গ। সেই বৈঠকেই দ্রুত পরীক্ষা শেষ করার আর্জি জানানো হয়েছে। পাহাড়ের সরকারি বেসরকারি সব স্কুলেই নভেম্বর-ডিসেম্বর মাসে বার্ষিক পরীক্ষা হয়। সে পরীক্ষা কবের মধ্যে শেষ করতে হবে, তা নিয়ে অবশ্য এ দিন কিছু জানাননি গুরুঙ্গ। পাহাড়ের রাজনৈতিক নেতাদের দাবি, রাজ্যের ওপর চাপ আরও বাড়াতেই গুরুঙ্গ এই আর্জি জানিয়েছেন। পৃথক গোর্খাল্যান্ডের দাবিতে আন্দোলন গণতান্ত্রিক ভাবে হবে বলে জানালেও, বন্‌ধ হবে কি না, তা নিয়ে ধোঁয়াশা রেখেছেন তিনি।

সম্প্রতি গুরুঙ্গ হুমকি দিয়ে জানিয়েছিলেন, দুই থেকে আড়াই মাসের মধ্যে তিনি জিটিএ-র চিফের পদ ছেড়ে দিয়ে আন্দোলন শুরু করবেন। পৃথক গোর্খাল্যান্ডের দাবিতে যুবকদের অস্ত্র আন্দোলন নিয়ে আলোচনা করার পরামর্শও দিয়েছিলেন তিনি। তারপরেই প্ররোচনামূলক মন্তব্যের অভিযোগে তাঁর বিরুদ্ধে মামলা রুজু করে পুলিশ। সুর নরম করেন গুরুঙ্গরাও। এ দিন বৈঠকের পরে সাংবাদিক বৈঠকে গুরুঙ্গ বলেন, ‘‘আগেই বলেছিলাম আড়াই মাস পরেই আন্দোলন শুরু হবে। সম্পূর্ণ গণতান্ত্রিক রীতি মেনেই আন্দোলন হবে। তাতে ছাত্র-ছাত্রী ও পর্যটকদের সমস্যা হতে পারে ভেবেই দ্রুত পরীক্ষা শেষের আর্জি জানাই।’’

Advertisement

দু’হাজার তিন সালেও গোর্খাল্যান্ডের দাবিতে টানা বন্‌ধ শুরুর আগে স্কুল-কলেজ কর্তৃপক্ষকে পরীক্ষা আগে শেষ করার আর্জি জানিয়েছিল মোর্চা। তবে এ দিন অবশ্য পাহাড়ের স্কুলগুলির মোর্চা সমর্থিত শিক্ষক সংগঠনের প্রতিনিধিদেরই এই আর্জি জানানো হয়েছে। বছর দুয়েক আগে মোর্চা বিবৃতি দিয়ে দাবি করেছিল পাহাড়ে বনধ করে কোনও আন্দোলন হবে না। মোর্চা বনধের পথে হাঁটবে কিনা সে প্রশ্নের জবাবে এ দিন গুরুঙ্গের মন্তব্য, ‘‘বনধ-অবস্থান-ধর্না সবই গণতান্ত্রিক আন্দোলনের অঙ্গ।’’ মাস দুয়েক আগে মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় পাহাড়ে গিয়ে বিভিন্ন সম্প্রদায়ের জন্য আরও পাঁচটি বোর্ড গঠনের ঘোষণা করেন। সেই সফরে রাষ্ট্রপতিও ছিলেন। বোর্ড ঘোষণার পরদিন অন্য একটি সভায় রাষ্ট্রপতির উপস্থিতিতে রাজ্য সরকারের বিরুদ্ধে বিভাজনের রাজনীতির অভিযোগ তোলেন গুরুঙ্গ। সে অনুষ্ঠানে রাষ্ট্রপতি পাল্টা পাহাড়ের বিভিন্ন সম্প্রদায়ের উন্নয়নের জন্য পদক্ষেপ করায় মুখ্যমন্ত্রীর প্রশংসা করেন। রাজ্যকে অস্বস্তিতে ফেলার কৌশল ব্যর্থ হয়। তারপর থেকেই নানা হুমকি দিয়ে রাজ্যের ওপর গুরুঙ্গরা চাপ বাড়াতে শুরু করেছেন বলে পাহাড়ের মোর্চা-বিরোধী দলগুলির দাবি।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন