আলাদা রাজ্য হিসেবে গোর্খাল্যান্ড চাই এই দাবিকে সামনে রেখেই চারটি পুরসভা ভোটে গোর্খা জনমুক্তি মোর্চা লড়াই করবে বলে জানিয়ে দিলেন দলের সভাপতি বিমল গুরুঙ্গ। বুধবার দুপুরে সুকনা উচ্চ মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের নতুন মডেল ভবনের উদ্বোধন করেন গুরুঙ্গ। গুরুঙ্গ জানান, চলতি সপ্তাহে দিল্লিতে এনডিএ বৈঠকেও দাবিটি জানিয়ে এসেছেন।
পাহাড়ে তৃণমূলের ছায়া ক্রমশ বাড়ছে বলেই গুরুঙ্গরা ফের গোর্খাল্যান্ডের দাবি তুলতে শুরু করেছেন বলে মনে করা হচ্ছে। ক্ষমতায় আসার পর মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় নিয়মিত পাহাড়ে গিয়েছেন। একাধিক জাতি-উপজাতির জন্য বোর্ড তৈরি করেছেন। বাড়ি, শৌচালয়, পর্যটন মিলিয়ে নানা ক্ষেত্রে প্রকল্পের কাজ করছে রাজ্য। এতে দলীয় ভাবে পাহাড়ের মহকুমাগুলিতে তৃণমূলের সংগঠন বাড়ছে। জেলার পর্যবেক্ষক অরূপ বিশ্বাসের নেতৃত্বে পাহাড়ে মোর্চায় ভাঙনও ধরেছে। মিরিক, কার্শিয়াং থেকে শুরু করে বিভিন্ন প্রান্তে মোর্চা নেতানেত্রী ঘাসফুলে নাম লিখিয়েছেন। কিছু দিন আগেই বিজনবাড়ি কলেজে ১১টির মধ্যে ১০টি আসনেই তৃণমূল জিতেছে। এর পরে মোর্চার কেন্দ্রীয় নেতৃত্ব একাধিকবার চিন্তন বৈঠকও করেন। তার উপরে কালিম্পঙে প্রাক্তন মোর্চার শীর্ষ নেতা হরকাবাহাদুর ছেত্রী, অমর লামাদের নেতৃত্বে নতুন দল ‘জাপ’-এর জনপ্রিয়তা বেড়েছে। পাহাড়ের রাজনৈতিক নেতারা জানান, এই অবস্থা নিজেদের সংগঠন ধরতে রাখতে মোর্চা সভাপতির কাছে আলাদা রাজ্যের দাবিকে সামনে রাখা ছাড়া কোনও উপায় নেই।
এর মধ্যে, বিজেপি শীর্ষ নেতাদের সায় না থাকায় রাস্তায় নেমেও গুরুঙ্গ আন্দোলন করতে পারছেন না। তেমনই, পাহাড়ের গ্রেফতারি পরোয়ানা থাকা বাসিন্দাদের তালিকা তৈরি শুরু করেছে পুলিশ।
গুরঙ্গ বলেন, ‘‘মুখ্যমন্ত্রী পাহাড়ে বাড়ি, শৌচালয় আর টাকা দিতে ভোটে জিততে চাইছেন।’’ তৃণমূলের পাহাড় কমিটির মুখপাত্র বিন্নি শর্মা বলেন, ‘‘ভোট এলেই ঝুলি থেকে বেড়াল বার হয়। মানুষ জানেন, পাহাড়ের উন্নয়ন কারা করছেন, কারা করতে পারেন।’’
আলিগড়ের বিজেপি’র যুব নেতা যোগেশ ভার্সেনই-এর বক্তব্য প্রসঙ্গে মোর্চা সভাপতি গুরুঙ্গ বলেন, ‘‘অত্যন্ত নিন্দ্যনীয় ঘটনা। রাজনীতিতে স্বপক্ষে, বিরুদ্ধে কথাবার্তা থাকবে, আন্দোলন চলবে। তা বলে কাউকে মারব, মাথা কাটব-এ সব বলাটা একেবারেই সঠিক নয়। আমরা এ সব সমর্থন করি না। ওই যুব নেতা যদি বিজেপির লোক হন, তাহলে বিজেপির ব্যবস্থা নেওয়া দরকার।’’