প্রতীকী ছবি।
জেলা সভাপতির আকস্মিক মৃত্যুতে কিছুটা ব্যাকফুটে বিজেপি। তা-ও সিএবি বা নাগরিকত্ব সংশোধনী বিল পাশ হওয়ার মধ্যেই শহর থেকে গ্রামে বুথভিত্তিক দল গঠন করে প্রচারে নামার প্রস্তুতি নিতে শুরু করেছে দল। ডিসেম্বরের তৃতীয় সপ্তাহের মধ্যেই যাতে রাস্তায় নামা সম্ভব হয়, তা দেখতে রাজ্য নেতৃত্ব নির্দেশ দিয়েছেন জেলাকে।
কী ভাবে প্রচারের ছক সাজিয়েছে বিজেপি? দলীয় সূত্রে খবর, ঠিক হয়েছে বুথভিত্তিক দল তৈরি করে প্রচার করা হবে সর্বত্র। একই সঙ্গে ক্যাম্প অফিস খোলারও পরিকল্পনা নেওয়া হয়েছে। অবাঙালি প্রধান এলাকায় এক দল প্রচার করবে, আবার বস্তি বা কলোনি এলাকায় অন্য দল। পাশাপাশি বাড়ি বাড়ি বিলির জন্য লিফলেট ছাপার প্রক্রিয়াও শুরু হয়ে গিয়েছে। বিজেপি নেতারা ইতিমধ্যেই বলতে শুরু করেছেন, ‘কোনও হিন্দু বা বৌদ্ধ, জৈনদের সমস্যায় পড়তে হবে না। কোনও শরণার্থীর সমস্যা হবে না। কিন্তু দেশে থাকা অনুপ্রবেশকারীদের চিহ্নিত করা হবে। তাদের জন্য তৈরি থাকবে ডিটেনশন ক্যাম্প।’
বিজেপির এই প্রচারের উপরে নজর রাখছে সঙ্ঘও। দলের অন্দরের খবর, বিজেপির কর্মসূচি মূলত সঙ্ঘই ঠিক করে দিচ্ছে। গত কয়েক বছরে সঙ্ঘের পরামর্শে দলের সংগঠন মজবুত হয়েছে বলেই একাংশ নেতারা মনে করেন। নকশালবাড়ির চা বাগান থেকে ফাঁসিদেওয়ার কৃষি বলয় বা শিলিগুড়ির বাঙালি-অবাঙালি প্রধান অঞ্চলে এত দিন সঙ্ঘ নেতাদের পরামর্শ মেনেই এগিয়েছে বিজেপি। দল সূত্রে খবর, সভাপতির পদের জন্য সঙ্ঘ পরিবারের ঘরের লোক বলে পরিচিত এক নেতার নামও উঠে এসেছে। দলের একাংশ মনে করেছে, এমন কেউ দায়িত্বে থাকলে দল ও সঙ্ঘের মধ্যে বোঝাপড়া রেখে সিএবি ও এনআরসি ভাল ভাবে এগনো যাবে। বিজেপি’র সাংগঠনিক জেলার সাধারণ সম্পাদক রাজু সাহা বলেন, ‘‘অভিজিৎ রায়চৌধুরীর মৃত্যু আমরা মেনে নিতে পারিনি। এই ধাক্কা সামলে এনআরসি এবং সিএবি নিয়ে রাস্তায় নামব। ক্যাম্প করে বুথে বুথে লোক গিয়ে মানুষকে সত্যটা বোঝাবে। তৃণমূলের অপপ্রচারের বিরুদ্ধে প্রচার দিয়েই লড়াই করতে হবে।’’
বসে নেই রাজ্যের শাসকদলও। তৃণমূল রোজই অঞ্চল, ওয়ার্ড ধরে ধরে পাল্টা প্রচারের কর্মসূচি শুরু করেছে। সোমবারের পর তাতে আরও গতি আনা হচ্ছে। জেলা সভাপতি রঞ্জন সরকার বলেন, ‘‘মানুষের মধ্যে বিভেদ সৃষ্টিকারী ওই বিল বা এনআরসি আমরা যে কোনও মূল্যে রুখব।’’