TMC Leader Shot Dead

‘আন্তর্জাতিক দুষ্কৃতী’ নিহত তৃণমূল কর্মী, দাবি নিশীথের

মঙ্গলবার দিনহাটার জারিধরলায় তৃণমূল কর্মীদের উপরে হামলার অভিযোগ ওঠে বিজেপির বিরুদ্ধে। পুলিশ জানিয়েছে, সে ঘটনায় বাবু হক নামে এক তৃণমূল কর্মী গুলিবিদ্ধ হয়ে মারা যান।

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

কোচবিহার শেষ আপডেট: ২৯ জুন ২০২৩ ০৭:২৪
Share:

বাবু হক। —ফাইল চিত্র। 

কোচবিহারের দিনহাটার জারিধরলায় মঙ্গলবার গুলিবিদ্ধ হয়ে নিহত তৃণমূল কর্মী বাবু হককে ‘আন্তর্জাতিক দুষ্কৃতী’ বলে দাবি করলেন কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী তথা বিজেপি নেতা নিশীথ প্রামাণিক। নিশীথের দাবি, ওই ব্যক্তির নামে ভারত, বাংলাদেশে দুই দেশেই ভোটার পরিচয় পত্র আছে। তিনি আন্তর্জাতিক দুষ্কৃতী চক্রের সঙ্গে ‘জড়িত’। তৃণমূল অবশ্য বিজেপির দাবি মানতে নারাজ। উত্তরবঙ্গ উন্নয়নমন্ত্রী তথা তৃণমূলের রাজ্য সহ সভাপতি উদয়ন গুহ বলেন, "সীমান্ত সুরক্ষার কাজে ব্যর্থতা স্বীকার করে নিয়েছেন কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী। তাঁর ওই পদে থাকার অধিকার নেই। আসলে এক জন ভারতীয় নাগরিককে খুনের পরে, দৃষ্টি ঘুরিয়ে দিতেই নানা যুক্তি তৈরি করছেন তিনি।"

Advertisement

মঙ্গলবার দিনহাটার জারিধরলায় তৃণমূল কর্মীদের উপরে হামলার অভিযোগ ওঠে বিজেপির বিরুদ্ধে। পুলিশ জানিয়েছে, সে ঘটনায় বাবু হক নামে এক তৃণমূল কর্মী গুলিবিদ্ধ হয়ে মারা যান। ওই ঘটনায় আরও সাত জন গুলিবিদ্ধ হন। নিশীথ বুধবার দাবি করেন, তৃণমূল যাঁকে কর্মী বলে দাবি করছে, সেই বাবু রহমানের ভারতীয় আধার কার্ডে ওই নাম রয়েছে। আবার বাংলাদেশের ভোটার পরিচয় পত্রও রয়েছে ওই ব্যক্তির। সেখানে তাঁর নাম মহম্মদ আব্দুর রহমান। ওই ব্যক্তি আন্তর্জাতিক দুষ্কৃতী চক্রের সঙ্গে জড়িত। দুই দেশের পুলিশ তাঁকে একাধিক বার গ্রেফতার করেছে।

স্বরাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী একটি ভিডিয়ো প্রকাশ করেছেন (আনন্দবাজার সত্যতা যাচাই করেনি)। যেখানে দেখা যাচ্ছে, গ্রেফতার হওয়া এক ব্যক্তি নিজেকে অপরাধী বলে স্বীকার করছে। সীমান্তে কাশির নিষিদ্ধ সিরাপ থেকে শুরু করে গাঁজা পাচারের সঙ্গে সে যুক্ত বলেও স্বীকার করেছে। সে নিজেকে কংগ্রেস কর্মী বলেও জানাচ্ছে। নিশীথ দাবি করেন, ওই ব্যক্তিই বাবু রহমান।

Advertisement

এর পরেই তৃণমূলকে নিশানা করে নিশীথ বলেন, ‘‘এক জন আন্তর্জাতিক দুষ্কৃতীকে তৃণমূল নিজেদের কর্মী বলে দাবি করছে। এক জন আতঙ্কবাদীকে নিজেদের কর্মী বলে রাজনীতি করছে তৃণমূল। পুলিশ সব জেনেও তৃণমূলের হয়ে কথা বলছে। আমরা ছেড়ে কথা বলব না।’’

মঙ্গলবার কোচবিহারের দিনহাটার গীতালদহের বাংলাদেশ সীমান্ত জারিধরলায় তৃণমূল কর্মীদের উপরে হামলার অভিযোগ ওঠে বিজেপির বিরুদ্ধে। তৃণমূল কর্মী বাবু হককে গুলি করে ও কুপিয়ে হত্যার অভিযোগ ওঠে। এ ছাড়া, ওই ঘটনায় আরও সাত জন তৃণমূল কর্মী গুলিবিদ্ধ হন। তাঁরা চিকিৎসাধীন। তৃণমুলঅভিযোগ করে, বাংলাদেশ থেকে দুষ্কৃতীদের ভাড়া করে এনে ওই হামলা চালিয়েছে বিজেপি। যদিও নিশীথ বুধবার দাবি করেছেন, জারিধরলা গ্রামে বিজেপির কোনও সংগঠনই নেই। বিজেপির কোনও নেতা বা তিনি নিজেও কখনও ওই গ্রামে যাননি। ওই গ্রামে অনেকটা এলাকায় কাঁটাতার নেই। সে সুযোগ নিয়েই দুষ্কৃতীদের অবাধ যাতায়াত রয়েছে। কোচবিহারের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার কুমার সানিরাজ বলেন, "গোটা ঘটনার তদন্ত চলছে।" তৃণমূলের মুখপাত্র পার্থপ্রতিম রায় বলেন, "এক জন আন্তর্জাতিক দুষ্কৃতী যদি স্বরাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রীর নিজের জেলায় আশ্রয় নিয়ে থাকেন, তা হলে এত দিন তিনি তা জানতে পারেননি কেন? এই ব্যর্থতা কার? আর অসমের এক জন সাংসদ তো দাবি করেছিলেন, কেন্দ্রীয় প্ৰতিমন্ত্রী নিজেই বাংলাদেশের নাগরিক। সে প্রশ্নের উত্তর তিনি এখনও দেননি।"

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন