বাগান নিয়ে দিল্লিকে চাপ বিজেপিরও

চা বাগানকে কেন্দ্র করেই আলিপুরদুয়ার জেলায় বিজেপির উত্থান।

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

আলিপুরদুয়ার শেষ আপডেট: ০২ জুলাই ২০১৯ ০৪:২১
Share:

উত্তরবঙ্গের চা বাগান। ফাইল চিত্র।

একুশের বিধানসভা নির্বাচনকে লক্ষ্য করে ডুয়ার্সের চা বাগানের উন্নতির প্রশ্নে এ বার কেন্দ্রের উপরেও চাপ সৃষ্টির কৌশল নিল আলিপুরদুয়ার জেলার বিজেপি নেতারা। সেই উদ্দেশ্যেই সোমবার দিল্লি পৌঁছেছেন বিজেপির জেলা সভাপতি গঙ্গাপ্রসাদ শর্মা-সহ দলের দুই নেতা। আজ মঙ্গলবার আলিপুরদুয়ারের সাংসদ জন বার্লাকে সঙ্গে নিয়ে কেন্দ্রীয় বাণিজ্যমন্ত্রীর সঙ্গে দেখা করবেন তাঁরা। দেখা করবেন দলের কেন্দ্রীয় নেতৃত্বের সঙ্গেও। এই দলটির মূল দাবি, একটি বিশেষজ্ঞ কমিটি গড়ে চা বাগানের উন্নতির পরিকল্পনা করুক কেন্দ্রীয় সরকার।

Advertisement

চা বাগানকে কেন্দ্র করেই আলিপুরদুয়ার জেলায় বিজেপির উত্থান। ২০১৬ সালের বিধানসভা নির্বাচনে চা বলয় অধ্যুষিত মাদারিহাট আসনে জয় পায় তার। পরে চা বলয়ে নিজেদের সংগঠনকে আরও মজবুদ করার কাজ শুরু করেন দলের রাজ্য ও জেলা নেতারা। এ বারের লোকসভা নির্বাচনে তার সুফলও পায় বিজেপি। আলিপুরদুয়ার কেন্দ্রে প্রায় আড়াই লক্ষ ভোটের ব্যবধানে জয় পেয়ে সাংসদ হন জন বার্লা। ক্ষমতায় এলে উন্নয়নের প্রতিশ্রুতি দিয়ে এই কেন্দ্রের প্রায় প্রতিটি চা বাগান এলাকায় তৃণমূলকে পিছনে ফেলে দেয় বিজেপি।

খোদ বিজেপির আলিপুরদুয়ার জেলার শীর্ষ নেতাদের একাংশের কথায়, চা বলয়ের ভোট না পেলে এ বারে জয় সহজ হত না। এ বারে তাঁরা চা বলয়ের সেই আস্থা কতটা পূরণ করতে পারবেন, সেটাও দেখতে চান সেখানকার বাসিন্দারা। ওই নেতাদের একাংশ মনে করেন, লোকসভা ভোটের আগে দেওয়া প্রতিশ্রুতি পূরণ করতে না পারলে মানুষ তাঁদের থেকে মুখ ফিরিয়ে নিতে পারেন। দু’বছর পরের বিধানসভা নির্বাচনে তার প্রভাবও দেখা যেতে পারে। তাই এখন থেকেই দলের জেলা শীর্ষ নেতাদের তৎপরতা তুঙ্গে।

Advertisement

বিজেপির জেলা শীর্ষ নেতারা অবশ্য এ কথা মানতে নারাজ। দলের জেলা সভাপতি গঙ্গপ্রসাদ শর্মা বলেন, “নির্বাচনের আগে আমরা চা বাগানের উন্নতির প্রতিশ্রুতি দিয়েছিলাম। চা বাগানের উন্নতিতে রাজ্যের পাশাপাশি কেন্দ্রেরও অনেক দায়িত্ব রয়েছে। কিন্তু রাজ্যের তৃণমূল সরকার কখনওই চা বাগানের উন্নতি করবে না। তাই আমরা বিষয়টি নিয়ে কেন্দ্রের উপরেও চাপ সৃষ্টির সিদ্ধান্ত নিয়েছি। এর সঙ্গে আগামী বিধানসভা নির্বাচনের কোনও সম্পর্ক নেই।”

বিজেপি সূত্রের খবর, গঙ্গাপ্রসাদ ছাড়াও আলিপুরদুয়ার থেকে দলের শ্রমিক সংগঠনের এক নেতা এদিন দিল্লিতে গিয়েছেন। চা বাগানের উন্নতিতে বেশ কিছু দাবি নিয়ে তাঁরা প্রথমে রাজ্য সভাপতি দিলীপ ঘোষের সঙ্গে আলোচনা করবেন। সেই দলে থাকবেন সাংসদ জন বার্লাও। তার পর কেন্দ্রীয় মন্ত্রী ও নেতাদের সঙ্গে দেখা করে বিশেষজ্ঞ কমিটি গঠন করে চা বাগানের উন্নতির দাবি জানাবেন তাঁরা। গঙ্গাপ্রসাদের কথায়, ‘‘চা বাগানের পাশাপাশি আমরা জেলার আদিবাসী মানুষদেরও উন্নতি চাই। মন্ত্রী-নেতাদের কাছে সেই দাবির কথাও তুলে ধরা হবে।’’

বিজেপির এই উদ্যোগ নিয়ে তৃণমূলের জেলা সভাপতি মোহন শর্মা বলেন, ‘‘চা বাগানের উন্নতিকে আমরা সব সময়ই স্বাগত জানাই। কিন্তু বিজেপির নেতাদের বলব, ওঁদের প্রধানমন্ত্রীর মতো ওঁরাও যাতে চা বাগান নিয়ে শুধু ফাঁকা প্রতিশ্রুতি না দেন। চা বাগানের মানুষদের জন্য বাস্তবিক ভাবেই যেন উন্নয়ন করেন।’’

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন