মালদহে বিজেপির কার্যালয়ের সামনে পুড়ে খাক অটো। —নিজস্ব চিত্র।
বিজেপির নির্বাচনী কার্যালয়ে আগুন ধরিয়ে দেওয়ার অভিযোগ উঠেছে তৃণমূল কর্মীদের বিরুদ্ধে। অগ্নিকান্ডের জেরে কার্যালয়ে থাকা একটি অটোও পুড়ে গিয়েছে। বৃহস্পতিবার গভীর রাতে ঘটনাটি ঘটেছে পুরাতন মালদহের ৩ নম্বর ওয়ার্ডের মোকাতিপুর এলাকায়। রাতেই ঘটনাস্থলে যায় পুলিশ। শুক্রবার সকালে সেখানে যান বিজেপি-র জেলা প্রতিনিধিরা। তাঁরা থানায় একটি লিখিত অভিযোগ দায়ের করেন। যদিও তৃণমূল নেতৃত্ব অগ্নিকান্ডের ঘটনাটিকে রাজনৈতিক উদ্দেশ্য প্রণোদিত বলে কটাক্ষ করেছেন। মালদহের পুলিশ সুপার প্রসূন বন্দ্যোপাধ্যায় বলেন, “ঘটনার তদন্ত শুরু হয়েছে।”
পুরাতন মালদহ পুরসভার ৩ নম্বর ওয়ার্ডের মোকাতিপুরে ওয়ার্ড সভাপতির বাড়ির নীচ তলার একটি ঘরে নির্বাচনী ক্যাম্প করেছে বিজেপি নেতৃত্ব। রাত ১২টা পর্যন্ত এই কার্যালয়ে সাংগঠনিক কাজকর্ম করছিলেন কর্মী-সমর্থকেরা। দেওয়াল লিখনের কাজ হচ্ছিল। পরে তাঁরা বাড়ি চলে যান। তাদের এই কার্যালয়ে প্রতিবেশী এক ব্যক্তি অটো রাখেন। এদিনও অটোটি ক্যাম্পেই রাখা ছিল। ঘন্টা দু’য়েক পরে পড়শিরা একটি শব্দ শুনতে পান। ঘর থেকে বার হয়ে গিয়ে দেখেন, অফিসে আগুন জ্বলছে। এলাকার মানুষ নিজেরাই আগুন নেভান।
ঘটনায় এলাকায় ব্যাপক উত্তেজনা ছড়িয়ে পড়ে। বিজেপির ওয়ার্ড সভাপতি বাপ্পা ভট্টাচার্য বলেন, “আমার বাড়ির নীচতলায় নির্বাচনের জন্য অস্থায়ী ভাবে ক্যাম্প করা হয়েছে। কমীরা ভোটের কাজকর্ম করে বাড়ি চলে যান। রাতের দিকে প্রচন্ড শব্দ শুনতে পাই। ঘর থেকে বেরিয়ে দেখি, নির্বাচনী কার্যালয়ে থাকা অটোটি জ্বলছে। অফিসে থাকা দলের পতাকা, ফেস্টুন সবই পুড়ে ছাই হয়ে গিয়েছে। পড়শিদের সাহায্যে আগুন নেভানো হয়েছে।” তাঁর দাবি, “স্থানীয় তৃণমূল কর্মীরা এমন ঘটনা ঘটিয়েছে।”
এই ঘটনায় আগামী দিনে আরও সন্ত্রাসের আশঙ্কা করছেন ওই ওয়ার্ডের বিজেপি প্রার্থী স্বপ্না হালদার। তাঁর আশঙ্কা, “কেবল মনোনয়নপত্র জমা দেওয়া হয়েছে। এখন থেকেই তৃণমূলকর্মীরা অত্যাচার শুরু করে দিয়েছেন। ওয়ার্ডে বিজেপি শক্তিশালী বলে কর্মীদের ক্রমাগত হুমকি দেওয়া হচ্ছে। এমন চলতে থাকলে প্রচারই করতে পারব না। তাই আমরা দ্রুত অপরাধীদের গ্রেফতারের দাবি জানাচ্ছি।”
আগুনে স্থানীয় বাসিন্দা সুশান্ত দাসের অটোটি পুড়ে নষ্ট হয়েছে। তিনি বলেন, “ধার করে অটো কিনেছি। ক্ষতিপূরণ না দিলে বিপদে পড়ব।”
তৃণমূলের ওই ওয়ার্ড সভাপতি চন্দন দে অভিযোগ ভিত্তিহীন বলে উড়িয়ে দিয়েছেন। তাঁর দাবি, “মিথ্যে অভিযোগ করা হচ্ছে। প্রচারের শিরোনামে থাকতে নিজেরাই আগুন লাগিয়েছেন। সঠিক তদন্তের দাবি জানিয়েছি।”