পুরসভায় অর্পিতারা কেন, প্রশ্ন বিজেপির

বর্ষীয়ান নেতা বিপ্লবের দলবদলের হাত ধরে দক্ষিণ দিনাজপুর জেলা পরিষদ এবং তাঁর খাসতালুকে থাকা গঙ্গারামপুর এবং বুনিয়াদপুর দুটি পুরসভার বোর্ডের ক্ষমতা বিজেপির দখলে যাবে বলে দাবি করা হয়।

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

বালুরঘাট শেষ আপডেট: ১৮ জুলাই ২০১৯ ০৪:৫৮
Share:

তৃণমূলের দক্ষিণ দিনাজপুর জেলা সভাপতি অর্পিতা ঘোষ।

বিজেপিতে যোগ দেওয়ার পরে বিপ্লব মিত্রের শিবির থেকে জেলা পরিষদ এবং দু’টি পুরসভার ক্ষমতার রাশ তৃণমূলের পক্ষে ধরে রাখতে সাফল্য দেখিয়েছেন দলের সভানেত্রী অর্পিতা ঘোষ। এ বারে বালুরঘাট পুরসভার প্রশাসক করে তাঁর গুরুত্ব বাড়ান হল। প্রশাসনিক স্তরে প্রাক্তন সাংসদের বিচরণ অবাধ করতে রাজ্যের তৃণমূল সরকারের ওই সিদ্ধান্ত বলে জানা গিয়েছে। বিরোধীরা অবশ্য ওই সিদ্ধান্তের মধ্যে শাসক দলের সংকীর্ণ রাজনীতি দেখছেন। বাম ও বিজেপি নেতাদের অভিযোগ, পুরসভার নির্বাচন না করে নাগরিকদের গণতান্ত্রিক অধিকার কেড়ে নেওয়া হল। এর বিরুদ্ধে তারা আদালতে যাবেন বলে বিজেপির জেলা সভাপতি শুভেন্দু সরকার জানান।

Advertisement

বালুরঘাট লোকসভা আসনে হারের পরে দলের জেলা সভাপতি পদ থেকে বিপ্লববাবুকে সরিয়ে দেওয়া হয়। পরাজিত প্রার্থী অর্পিতাকে করা হয় দক্ষিণ দিনাজপুরের তৃণমূল জেলা সভাপতি। তার পরেই গত ২৪ জুন অনুগামীদের নিয়ে বিপ্লব বিজেপিতে যোগ দেন। তৃণমূলের জন্মলগ্ন থেকে এ জেলায় শাসক দলের সংগঠনের বিস্তার তাঁর হাত ধরেই ক্রমশ মজবুত হয়ে ওঠে। ফলে বর্ষীয়ান নেতা বিপ্লবের দলবদলের হাত ধরে দক্ষিণ দিনাজপুর জেলা পরিষদ এবং তাঁর খাসতালুকে থাকা গঙ্গারামপুর এবং বুনিয়াদপুর দুটি পুরসভার বোর্ডের ক্ষমতা বিজেপির দখলে যাবে বলে দাবি করা হয়। সংখ্যাগরিষ্ঠ সদস্যের সমর্থন দেখিয়ে প্রকাশ্য বিপ্লবের ওই দাবিকে বিশ্বাস করে গেরুয়া শিবিরও উচ্ছ্বসিত হয়ে পড়ে।

কিন্তু এ জেলার শাসক দলের সভানেত্রীর দায়িত্ব পাওয়ার পর মাত্র তিন সপ্তাহের মধ্যে জেলা পরিষদ ও দু’টি পুরসভায় বিপ্লব শিবির থেকে একাধিক সদস্যকে ফের দলে ফিরিয়ে অবস্থান পাল্টে দিতে সক্ষম হন অর্পিতা। ফলে জেলার বাকি থাকা বালুরঘাট পুরসভায় বিপ্লবের প্রভাবমুক্ত করতে শুরুতেই অর্পিতাকে বসিয়ে একাধারে ঘরে-বাইরে সামাল দেওয়ার ইঙ্গিত মিলেছে। দল সূত্রের খবর, বালুরঘাট পুরসভায় পুরপ্রধানের পদ নিয়ে শুরুতে দলীয় কাউন্সিলারদের মধ্যে গোষ্ঠীদ্বন্দ্ব চরম আকার নেয় বলে অভিযোগ। শঙ্কর চক্রবর্তীর অনুগামী চয়নিকা লাহাকে পুরপ্রধানের পদে বসানো হলেও তিনি প্রতিনিয়ত দলের একাংশ কাউন্সিলর দ্বারা হেনস্থা হতে থাকেন বলে অভিযোগ ওঠে। পরবর্তীতে পুরসভার কাজকর্ম ও দুর্নীতির অভিযোগ নিয়েও উত্তাল হয় বালুরঘাট।

Advertisement

ওই পরিস্থিতির মধ্যে তৃণমূল পরিচালিত পুরবোর্ডের মেয়াদ শেষ হয়। গত বছর ২৩ অক্টোবর সদর মহকুমাশাসক ঈশা মুখোপাধ্যায়কে প্রশাসক করে দীর্ঘ প্রায় ৯ মাস ধরে বালুরঘাট পুরসভার প্রশাসক করে চালানো হচ্ছিল। কিন্তু পুরসভা পরিচালনা ও উন্নয়ন কাজকর্ম নিয়ে অনিয়ম ও দুর্নীতির অভিযোগ পিছু ছাড়েনি বলে জেলা কংগ্রেস নেতা স্বপন বিশ্বাস অভিযোগ করেন। বালুরঘাটেও একাংশ কাউন্সিলারের মধ্যে বিদ্যমান বিপ্লব-প্রভাব, শুরুতেই ছেঁটে ফেলতে অর্পিতাকে অন্যতম প্রশাসকের পদে বসান হল বলে মনে করা হচ্ছে। অর্পিতা অবশ্য বলেন, ‘‘এসডিওর সঙ্গে অন্যতম প্রশাসক হিসাবে আমাদের দায়িত্ব দেওয়া হয়েছে। মূল দায়িত্বে এসডিও-ই।’’

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন