সেই ভিডিয়োর থেকে নেওয়া ছবি।
জেলাশাসক কাণ্ডে ফালাকাটা থানার আইসি-র পাশাপাশি আলিপুরদুয়ারের পুলিশ সুপারের ভূমিকা নিয়ে আগেই প্রশ্ন তুলেছিল বিজেপি৷ আর ওই ঘটনার জেরে ফালাকাটা থানার আইসি বদল হতেই জেলার বিজেপি নেতারা এ বার পুলিশ সুপারকেও সরানোর দাবি তুললেন৷ শুধু তাই নয়, আলিপুরদুয়ারের পুলিশ সুপারের বিরুদ্ধে কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্র মন্ত্রকে অভিযোগ জানানোরও সিদ্ধান্ত নিয়েছেন তাঁরা৷ এই ঘটনার সঙ্গে যোগ না থাকলেও আলিপুরদুয়ার থানার আইসি জয়দেব ঘোষের বদলি নিয়েও জোর চর্চা শুরু হয়েছে নানা মহলে।
রবিবার একটি ভিডিয়ো ভাইরাল হয়৷ যাতে দেখা যাচ্ছে ফালাকাটা থানার আইসি-র ঘরে তাঁর উপস্থিতিতে বিনোদকুমার সরকার নামে এক যুবকে বেধড়ক মারছেন আলিপুরদুয়ারের জেলাশাসক নিখিল নির্মল ও তাঁর স্ত্রী নন্দিনী কৃষ্ণন৷ ভিডিয়োটির সত্যতা আনন্দবাজার পত্রিকা যাচাই করেনি৷ ভিডিয়ো ভাইরাল হওয়ায় প্রতিবাদের ঝড় ওঠে৷
এই ঘটনার পরে ছুটিতে পাঠানো হয় জেলাশাসককে। তার পরে বুধবার আইসি সৌম্যজিৎ রায়কে বদলির নির্দেশ দেওয়া হয়। বৃহস্পতিবার জেলাশাসক নিখিল নির্মলকেও বদলি করা হয়। আর এর পরই জেলা পুলিশ সুপার সুনীল যাদবেরও বদলির দাবি তুললেন জেলার বিজেপি নেতারা৷
বিজেপির জেলা সভাপতি গঙ্গাপ্রসাদ শর্মা বলেন, “একে তো জেলার একটি থানার ভিতরে এমন ঘটনা ঘটল। তার পর ফালাকাটার ওই যুবকের উপর চাপ সৃষ্টি করার অভিযোগ ওঠে। পরে অবশ্য উনি ফিরে আসেন। তাঁর পরিবার যখন অভিযোগ দায়ের করতে গিয়েছিলেন, তাঁদেরও দীর্ঘক্ষণ অপেক্ষা করতে হয়। এই সব ঘটনার দায় শুধুমাত্র ফালাকাটা থানার আইসি-র নয়৷ দায় পুলিশ সুপারেরও৷ তাই আমরা চাই, অবিলম্বে পুলিশ সুপারকেও জেলা থেকে সরিয়ে দেওয়া হোক৷’’ তিনি জানান, এই নিয়ে শীঘ্রই তাঁরা কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্র মন্ত্রকে চিঠি পাঠাবেন।
বিজেপির এই দাবি নিয়ে পুলিশ সুপারের সঙ্গে যোগাযোগের চেষ্টা করা হলে তিনি ফোন ধরেননি৷ এসএমএস-এরও উত্তর দেননি৷ জেলা তৃণমূল অবশ্য পুলিশ সুপারের পাশেই রয়েছে৷ দলের এক জেলা শীর্ষ নেতা বলেন, “এই ঘটনার সঙ্গে পুলিশ সুপারের কোনও যোগ নেই৷”
জেলাশাসকের বদলির ঘটনা নিয়ে কিন্তু জেলা তৃণমূলের মধ্যে দু’রকম মত রয়েছে। একটি পক্ষ এখনও নিখিল নির্মলের পাশে রয়েছে। অন্য পক্ষের মতে, দ্রুত এমন সিদ্ধান্ত নিয়ে ভাল কাজই হয়েছে। যদিও বিষয়টি নিয়ে প্রকাশ্যে খুব বেশি কিছু বলতে চাইছেন না কোনও গোষ্ঠীর নেতাই৷ জেলা সভাপতি মোহন শর্মা বলেন, “এটা রাজ্য সরকারের সিদ্ধান্ত৷ আমার কিছু বলার নেই৷”
এই ঘটনার সঙ্গে কোনও যোগ না থাকলেও চর্চা হচ্ছে আলিপুরদুয়ার থানার আইসি জয়দেব ঘোষের বদলি নিয়েও। বিসর্জনে ডিজে বাজানো থেকে শুরু করে দীপাবলিতে শব্দবাজি ফাটা নিয়ে বেশ কিছু দিন থেকেই আলিপুরদুয়ারের পুলিশের সমালোচনায় সরব ছিল বিভিন্ন মহল৷ যদিও বিজেপির অভিযোগ, “শাসকদলের নেতাদের একাংশের কথা শুনে কাজ না করার জন্যই জয়দেববাবুকে বাঁকুড়ায় বদলি করা হয়েছে৷” তৃণমূল বিধায়ক সৌরভ চক্রবর্তী বলেন, “আমার মনে হয় এটা রুটিন বদলি৷” আইসি বলেন, ‘‘আমি পশ্চিমবঙ্গ পুলিশে চাকরি করি৷ পশ্চিমবঙ্গেই আমার বদলি হয়েছে৷’’