নৌকায় প্রচার তৃণমূলের, কটাক্ষ বিরোধীদের

জলপাইগুড়ির করলা নদীর বিপন্ন দশা নিয়ে বিভিন্ন মহলে আলোচনার মাঝেই নদীতে নৌকা ভাসিয়ে অভিনব রবিবাসরীয় প্রচারে নামল তৃণমূল। রবিবার সকালে বাবুঘাট থেকে জোড়া নৌকায় দলীয় পতাকা বেঁধে ও তাকে ফ্লেক্সে সাজিয়ে আবর্জনায় ভরা গেঁজে ওঠা করলার জলে সমর্থকদের নিয়ে প্রচার করেন তৃণমূল প্রার্থী। তৃণমূল আবেদন করে, শহরের ফুসফুস রক্ষার জন্য পুরভোটে তাদের জেতানোর। ওই প্রচার দেখে বিরোধীদের কটাক্ষ, ‘‘ভোট বড় বালাই। তাই শেষ বেলায় শাসকদলের মনে পড়েছে করলা নদীর বেহাল দশার কথা।’’

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

জলপাইগুড়ি শেষ আপডেট: ২০ এপ্রিল ২০১৫ ০২:৩৭
Share:

করলা নদীতে নৌকা নিয়ে তৃণমূলের প্রচার। রবিবার সন্দীপ পালের তোলা ছবি।

জলপাইগুড়ির করলা নদীর বিপন্ন দশা নিয়ে বিভিন্ন মহলে আলোচনার মাঝেই নদীতে নৌকা ভাসিয়ে অভিনব রবিবাসরীয় প্রচারে নামল তৃণমূল। রবিবার সকালে বাবুঘাট থেকে জোড়া নৌকায় দলীয় পতাকা বেঁধে ও তাকে ফ্লেক্সে সাজিয়ে আবর্জনায় ভরা গেঁজে ওঠা করলার জলে সমর্থকদের নিয়ে প্রচার করেন তৃণমূল প্রার্থী। তৃণমূল আবেদন করে, শহরের ফুসফুস রক্ষার জন্য পুরভোটে তাদের জেতানোর। ওই প্রচার দেখে বিরোধীদের কটাক্ষ, ‘‘ভোট বড় বালাই। তাই শেষ বেলায় শাসকদলের মনে পড়েছে করলা নদীর বেহাল দশার কথা।’’

Advertisement

এদিন সকালে বিভিন্ন দলের প্রার্থীরা যখন পদযাত্রা, পথসভায় ব্যস্ত ছিলেন তখন ৫ নম্বর ওয়ার্ডের তৃণমূল শিবিরে জলপথে ভোট প্রচারের তোরজোড় শুরু হয়। চমক দিতে জোড়া নৌকা ঘাসফুল পতাকায় মুড়ে ফেলা হয়। ওয়ার্ডের দলীয় প্রার্থী সন্দীপ মাহাত বলেন, “করলা নদী শহরের বাসিন্দাদের কাছে মায়ের মতো। ওই নদী সংস্কারে আমরা বদ্ধপরিকর। করলার সমস্যা সমাধানের কথা তুলে ধরতে দলের নির্দেশে জলপথে প্রচারের আয়োজন।” একই দাবি ছিল প্রচারের সঙ্গী সমাজ ও নদী বাঁচাও কমিটির মুখপাত্র সঞ্জীব চট্টোপাধ্যায়ের। তিনি বলেন, “শহরে পুরভোটের মুখে আমরা করলার কথা ভুলতে পারি না। নদীকে রক্ষার অঙ্গীকার নিয়ে প্রচারে সামিল হয়েছি।”

শাসক দলের জলপথে প্রচারের আয়োজন দেখে এবং দাবির কথা শুনে মুচকি হাসেন পুরসভার প্রাক্তন চেয়ারম্যান তথা কংগ্রেস প্রার্থী পিনাকী সেনগুপ্ত। তাঁর কথায়, “ঠিক ভোটের মুখে করলা নদীর জন্য দরদ সত্যিই দেখার মতো। এতদিন কি তৃণমূল নেতারা ঘুমচ্ছিলেন!” তিনি জানান, কংগ্রেস পরিচালিত পুরবোর্ডের উদ্যোগে চার বছর আগে প্রায় ৯ লক্ষ টাকা খরচ করে করলা অ্যাকশন প্ল্যান তৈরি করে কেন্দ্রীয় সরকারের কাছে পাঠানো হয়েছে। ওই প্রকল্পে সংরক্ষণ, সৌন্দর্যায়ন ছাড়াও শহরের বিভিন্ন নিকাশি নালার জল শোধন করে নদীতে ফেলার মতো একগুচ্ছ পরিকল্পনা আছে। প্রকল্পটি রূপায়ণের জন্য রাজ্য সরকার কেন এতদিনেও উদ্যোগী হয়নি কংগ্রেস শিবির থেকে এদিন সে প্রশ্ন তোলা হয়।

Advertisement

শহরের বাবুপাড়া, হাকিম পাড়া, হাসপাতাল পাড়া, সমাজ পাড়া, রায়কত পাড়া, দিনবাজার, শিল্পসমিতি পাড়া, রাজবাড়ি পাড়া, মাসকলাইবাড়ি, নেতাজি পাড়া ছুঁয়ে গিয়েছে করলা। কয়েক হাজার ভোটদাতার বসবাস ওই এলাকায়। তাঁরা অন্তত সাত জন প্রার্থীর ভাগ্য নির্ধারণে ভূমিকা নেবেন। ধুঁকতে থাকা করলাকে দেখে তাঁদের মন খারাপ বেশি। নদী সংস্কারের আশ্বাসের উপরে এখন যে বাসিন্দাদের একাংশ আর ভরসা রাখতে পারছেন না সেটা ভাল জানেন বিরোধীরাও। এদিন তৃণমূলের নৌকা যত এগিয়েছে বিরোধীরা ততই জোর গলায় থার্মোকল, নিষিদ্ধ প্লাস্টিক ক্যারিব্যাগের মতো আবর্জনায় ভরা নদীবক্ষ, স্রোত হারানো নদীতে বেড়ে চলা শ্যাওলার সংসারের কথা তুলে ধরেন।

জেলা বিজেপি সম্পাদক বাপি গোস্বামী ৮ নম্বর ওয়ার্ডে দাঁড়িয়ে জানতে চান, “কংগ্রেস ভেঙে তৃণমূল পুরবোর্ড দখল করেছিল। কেন নদী সংস্কারের ব্যবস্থা নিল না ওঁরা! ভোটে প্রশ্ন উঠতে ওঁদের মাথা খারাপ হয়েছে। পরিস্থিতি সামাল দিতে এখন নৌকা নিয়ে দৌড়ঝাঁপ করছেন।”

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন