রাজবাড়িতে বোমাতঙ্ক, গ্রেফতার ছাত্র

উড়ো ফোনে বোমাতঙ্ক ছড়াল কোচবিহার রাজবাড়িতে। শুক্রবার বিকেলে সে খবর শুনে কোচবিহার কোতোয়ালি থানা থেকে বিশাল পুলিশ বাহিনী ঘটনাস্থলে ছুটে যায়।

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

কোচবিহার শেষ আপডেট: ০৯ জুলাই ২০১৬ ০২:০৫
Share:

মেটাল ডিটেক্টারে চলছে তল্লাশি। — নিজস্ব চিত্র

উড়ো ফোনে বোমাতঙ্ক ছড়াল কোচবিহার রাজবাড়িতে। শুক্রবার বিকেলে সে খবর শুনে কোচবিহার কোতোয়ালি থানা থেকে বিশাল পুলিশ বাহিনী ঘটনাস্থলে ছুটে যায়। কোচবিহারের পুলিশ সুপার সুনীল যাদব, অতিরিক্ত পুলিশ সুপার দেবর্ষি দত্ত সহ পদস্থ কর্তারাও রাজবাড়ি এলাকায় যান। বোম স্কোয়াড, স্নিফার ডগ এনেও গোটা রাজবাড়ি চত্বরে চিরুনি তল্লাশি চালান হয়। রাত পর্যন্ত অবশ্য বোমা বা সন্দেহজনক কিছু মেলেনি। কোচবিহারের পুলিশ সুপার সুনীল যাদব বলেন, “উড়ো ফোনের ভিত্তিতে তল্লাশি চালানো হয়।” অতিরিক্ত পুলিশ সুপার দেবর্ষি দত্ত জানান, শেষ পর্যন্ত সন্দেহজনক কিছুই পাওয়া যায়নি। কে ওই ফোন করেছিলেন, তা নিয়ে তদন্ত হচ্ছে। নাটাবাড়ি স্কুলের নবম শ্রেণির এক ছাত্রকে এই ঘটনায় গ্রেফতার করা হয়েছে।

Advertisement

পুলিশ সূত্রেই জানা গিয়েছে, এ দিন বিকেল ৪টা নাগাদ পুলিশ কন্ট্রোল রুমে একটি উড়ো ফোনে রাজবাড়ি চত্বরে বোমা রয়েছে বলে সতর্ক করা হয়। ওই ফোন পেতেই পুলিশের অন্দরে শোরগোল পড়ে যায়। বিশেষ করে বাংলাদেশের ঘটনার জেরে কোনও রকম ঝুঁকি না নিয়ে বোমের খোঁজে বিশাল সংখ্যক পুলিশকর্মী নামান হয়। রাজবাড়ির মূল প্রবেশ ফটকের সামনেও সতর্কতামূলক ব্যবস্থা হিসেবে পুলিশ মোতায়েন করা হয়। রাজবাড়ি ও লাগোয়া চত্বর থেকে উৎসাহী মানুষজনদের সরিয়ে দেয় পুলিশ। আতঙ্কের জেরে লাগোয়া রাজবাড়ি উদ্যান থেকেও তড়িঘড়ি বাড়িমুখো হন বাসিন্দাদের অনেকেই। দিনহাটার কলেজ পড়ুয়া এক যুবক বলেন, “বান্ধবীকে নিয়ে রাজবাড়ি লাগোয়া উদ্যানে সময় কাটানোর জন্য এসেছিলাম। ঢোকার মুখেই বিশাল পুলিশ বাহিনী দেখে ঘাবড়ে যাই। পরে বোমাতঙ্কের কথা জেনে সোজা বাইক নিয়ে বাড়ি ফিরতে হয়।”

কোচবিহার হেরিটেজ সোসাইটির সম্পাদক অরূপজ্যোতি মজুমদার জানান, এ দিনের ঘটনা যাই হোক না কেন রাজবাড়ির নিরাপত্তা নিয়ে প্রশ্ন চিহ্ন রয়েইছে। রাজবাড়ির বহু কর্মী পদ শূন্য, পুলিশ ক্যাম্পের কর্মী সংখ্যাও অপর্যাপ্ত। তা ছাড়া পেছনের দিকের গেট অনেক সময় খোলা থাকায় সেখানে যাতায়াতের প্রবণতাও দেখা গিয়েছে। কিছু দিন আগে বিলিয়ার্ড রুমের একটি বল রহস্যজনক ভাবে উধাও হওয়ার ঘটনাও ঘটেছে। সব মিলিয়ে আমরা মনে করি রাজবাড়ি চত্বর নিরাপত্তার চাদরে মুড়ে দেওয়া উচিত। পুলিশ অবশ্য জানিয়েছে, খোয়া যাওয়া বিলিয়ার্ড বল ঘটনার পরদিনই উদ্ধার করা হয়। বিকল সিসিটিভি’ও মেরামত করা হয়েছে। কিছু ঘরে বিচ্ছিন্ন হয়ে যাওয়া বিদ্যুৎ সংযোগও নতুন করে চালু করা হয়েছে। যদিও রাজবাড়ির বাইরের চারদিকের অপর্যাপ্ত আলোর সমস্যা রয়েছে। বিষয়টি পুরাতত্ত্ব বিভাগের নজরে আনা হবে। রাজবাড়ির এক কর্মী বিনয় দাস বলেন, “এদিন রাজবাড়ির সাপ্তাহিক ছুটি ছিল। আচমকা বোমাতঙ্কের খবর আসায় সেখানে যেতে হয়। যদিও কিছু মেলেনি। আমাদের বিশ্বাস রাজবাড়ির প্রতি সর্ব স্তরের মানুষের আবেগ, শ্রদ্ধা জড়িয়ে রয়েছে। অন্য যে কোন প্রাচীন সৌধের মতো কোচবিহার রাজবাড়ির কেউ ক্ষতিও করবে না।”

Advertisement
(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন