Communal harmony

ভবঘুরে ‘দুর্গা’র শেষকৃত্যে নজির সম্প্রীতির

গ্রামবাসীদের দাবি, শুক্রবার কুকুরের কামড়ে অসুস্থ হয়ে পড়েন ষাটোর্ধ্ব ভবঘুরে। তাঁকে গ্রামবাসী ‘দুর্গা’ নামে ডাকতেন।

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

ইংরেজবাজার শেষ আপডেট: ১৪ নভেম্বর ২০২৩ ১০:১০
Share:

ভবঘুরের শেষকৃত্যে সম্প্রীতির ছবি মালদহের যদুপুর গ্রামে।

কারও মাথায় ফেজ টুপি, কারও গলায় নামাবলি। ভবঘুরের মৃত্যুতে শেষকৃত্যে শামিল মহম্মদ রানাউল ইসলাম, বেচন ঘোষ, নবি শেখেরা। রবিবার, কালী পুজোর রাতে সম্প্রীতির এমনই ছবি দেখা গেল মালদহের ইংরেজবাজারের যদুপুর গ্রামে। ইংরেজবাজার থানার সাদুল্লাপুর মহাশ্মশানে ভবঘুরের দেহ নিয়ে গিয়ে শেষকৃত্য সম্পন্ন করেন গ্রামের দুই সম্প্রদায়ের মানুষ।

Advertisement

গ্রামবাসীদের দাবি, শুক্রবার কুকুরের কামড়ে অসুস্থ হয়ে পড়েন ষাটোর্ধ্ব ভবঘুরে। তাঁকে গ্রামবাসী ‘দুর্গা’ নামে ডাকতেন। তিনি অসুস্থ হয়ে পড়লে, তাঁকে গ্রামবাসীরা মালদহ মেডিক্যালে ভর্তি করান। রবিবার সন্ধেয় তাঁর মৃত্যু হয়। ১৯৯৭ সাল থেকে যদুপুর গ্রামে থাকতে শুরু করেন ওই ভবঘুরে। নিজের নাম দুর্গা বলে জানিয়েছিলেন। হিন্দি ভাষায় কথা বলতেন। তাঁকে গ্রামেই ছোট্ট ঘরও তৈরি করে দেওয়া হয়েছিল। সে ঘরেই তিনি থাকতেন। তাঁর নাওয়া-খাওয়ার দায়িত্ব গ্রামবাসীরা নিজেদের মধ্যে ভাগ করে নিয়েছিলেন।

তাঁর মৃত্যুতে শোকস্তব্ধ গ্রাম। গ্রামে হিন্দু, মুসলিম দুই সম্প্রদায়ের মানুষেরই বাস। কালী পুজোর মাইক বন্ধ করে দেন উদ্যোক্তারা। ভবঘুরের শেষকৃত্য সম্পন্ন করতে উদ্যোগী হন গ্রামবাসী। তাঁর শেষ যাত্রায় শামিল হন গ্রামের হিন্দু, মুসলিম দুই সম্প্রদায়ই। মহম্মদ রবিউল ইসলাম বলেন, “দুর্গা শুধু নিজের নামটুকু বলেছিলেন। পরিচয় জানাতে পারেননি। আমাদের গ্রামেই বছরের পরে বছর ধরে তিনি ছিলেন। গ্রামেরই সদস্য হয়ে উঠেছিলেন তিনি। তাই তাঁর শেষকৃত্যে আমরা শামিল হয়েছি।” অপর এক বাসিন্দা রানাউল বলেন, “দুর্গার পাশে সবাই থাকতাম। তাই শেষ দিনেও শামিল হয়েছি।” বেচন ঘোষ বলেন, “গ্রামে ধর্ম নিয়ে কোনও ভেদাভেদ নেই। পুজো, ইদে আমরা এক সঙ্গে আনন্দ করি। দুঃখের দিনেও সবাই এক সঙ্গে শামিল হই।”

Advertisement
(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন