তেলতা ব্রিজ। ফাইল চিত্র
রাঙাপানি থেকে বোল্ডার নিয়ে মালগাড়ির পৌঁছনোর কথা ছিল তেলতায়। মালগাড়ি পৌঁছনোর পরে পলিথিনের ঢাকনা তুলে দেখা গেল বোল্ডার নেই। সব কটি ওয়াগন খুঁজেও মেলেনি একখানা বোল্ডারও।
বন্যার জলে বিপর্যস্ত হয়ে যাওয়া তেলটা সেতুর ‘অ্যাপ্রোচ রোড’ তৈরির জন্য প্রচুর বোল্ডারের প্রয়োজন হয়েছিল। নিউ জলপাইগুড়ি (এনজেপি) লোগায় রাঙাপানি থেকে মালগাড়ি বোঝাই করে বোল্ডার নিয়ে যাওয়া হয় তেলতায়। সে সময়েই একটি মালগাড়ি ফাঁকাই চলে যায় তেলতায়। ঘটনাটি জানাজানি হওয়ার পরে চাঞ্চল্য ছড়িয়েছে রেলের অন্দরে। সম্প্রতি বিষয়টি নিয়ে তদন্তের নির্দেশও দিয়েছে উত্তর পূর্ব সীমান্ত রেল। কোনও ভুল বোঝাবুঝির কারণে ফাঁকা মালগাড়ি চলে গিয়েছিল নাকি এটি রেলের সরবরাহে জড়িয়ে থাকা বহুচর্চিত দুর্নীতির অভিযোগের একটি নমুনা তা খতিয়ে দেখছে রেল।
উত্তর পূর্ব সীমান্ত রেলের বাণিজ্যিক বিভাগের এক পদস্থ কর্তা বলেন, ‘‘বেশ কয়েকটি বিভাগের জবাব তলব করা হয়েছে। ঠিক কী কারণে ঘটনাটি ঘটেছে তা দেখা হচ্ছে। তার পরে পদক্ষেপ হবে।’’
এক একটি মালগাড়িতে অন্তত ৫ লক্ষ টাকার বোল্ডার থাকে। তেলতা সেতু তৈরির প্রায় দেড় মাস সময়ে ত্রিশটিরও বেশি মালগাড়িতে চাপিয়ে বোল্ডার নিয়ে যাওয়া হয়। সব মিলিয়ে বোল্ডারের জন্যই খরচ হয়েছে কোটি টাকার বেশি। তবে কতগুলি ওয়াগানে বোল্ডার ছিল আর কতগুলি ফাঁকা ওয়াগান তেলটা পৌঁছেছে, তা নিয়ে প্রশ্ন তুলে দিয়েছে এই ঘটনা। যে ওয়াগানগুলিতে বোল্ডার ছিল তাতে পরিমাণ মতো ছিল কি না, তা নিয়েও সংশয় তৈরি হয়েছে। গত সেপ্টেম্বরের মাঝামাঝি ঘটনাটি ঘটেছে বলে জানা গিয়েছে। রেলের এক এক কর্তার দাবি ফাঁকা ওয়াগান পৌঁছনোর ঘটনা নজরে আসার পরেও ধামাচাপা পড়ে যায়।
রেল সূত্রের খবর, যে সময় ওয়াগানটি তেলতায় পৌঁছেছিল তখন সেখানে উত্তর পূর্ব সীমান্ত রেলের কাটিহার বিভাগের রেল কর্তারা উপস্থিত ছিলেন। দিল্লি থেকে আসা রেলের এক প্রতিনিধিও ঘটনাস্থলে ছিলেন। ওয়াগান এসে পৌঁছনোর পড়ে তড়িঘড়ি বোল্ডার নামানোর তোড়জোর শুরু হয়। পলিথিন খুলে দেখা যায় কোনও ওয়াগানেই বোল্ডার নেই। কোনও পদ্ধতিগত ভুলের কারণে এমনটা হয়েছে বলে মনে করে সে সময় আধিকারিকদের কিছু জানানো হয়নি। পরে অবশ্য রেল কর্তাদের কাছে খবর যায়। উপরতলায় খবর পৌঁছতে এ বার তদন্তের নির্দেশও দেওয়া হয়েছে।
রেলের একটি সূত্রের দাবি, বোল্ডার ওয়াগনে বোঝাই করার আগেই মালগাড়ি ছাড়ার নির্দেশ দিয়ে দেওয়াতে এমন বিপত্তি হতে পারে। অথবা গন্তব্য স্টেশনের নাম ভুল লেখা হওয়াতেও বিপত্তি হতে পারে বলে একাংশের দাবি। যদিও রেলকর্তারা দাবি করেছেন, তদন্ত শেষ হলেই বোল্ডার রহস্য উদঘাটন হবে।