সভা: সচেতনতা বাড়াতে। নিজস্ব চিত্র।
নাবালিকা বিয়ে রুখতে পুরোহিত, মুয়াজ্জিনদের সচেতন করার প্রক্রিয়া দক্ষিণবঙ্গে শুরু হয়েছিল। এ বার শুরু হল উত্তরবঙ্গেও। ব্যান্ডপার্টি থেকে ক্যাটারার, রান্না ঠাকুর থেকে ক্ষৌরকার প্রত্যেককেই সামিল করা হল সেই কাজে। সোমবার কোচবিহার জেলার মেখলিগঞ্জ ব্লকে সবাইকে নিয়ে একটি বৈঠক হয়। সেখানেই নাবালিকা বা নাবালক বিয়েতে তাঁরা কেউ অংশ নেবেন না বলে শপথ নেন।
ব্লকের ৭৮টি মসজিদ থেকেও এই প্রচার অভিযান চলবে বলে অঞ্জুমান কমিটির তরফে ঘোষণা করা হল। এর আগে মালদহে প্রশাসন এমন উদ্যোগ নিয়েছিল। এ বার তার ব্যপ্তি আরেকটু বাড়িয়ে সামিল করা হল ব্যান্ড পার্টি, মৌলবী ও পুরোহিতদেরও।
সকলের মিলিত প্রচেষ্টায় মেখলিগঞ্জ ব্লকে নাবালিকা বিয়ে বন্ধের নজির গড়তেই হবে বলে শপথ নিলেন তাঁরা। দিনের শেষে ব্লকের বিডিও বীরুপাক্ষ মিত্র বললেন, ‘‘ব্লকে নাবালিকা বিয়ে একটি উদ্বেগের কারণ হয়ে দাঁড়িয়েছে। নজর না রাখলেই বাচ্চা ছেলেমেয়েগুলির বিয়ে হয়ে যাচ্ছে। তাই বিয়ে বা শাদির সঙ্গে জড়িত সকলকে নিয়েই ময়দানে নামলাম।’’ বিডিও জানান, গত দেড় বছরে ১৭ টা নাবালিকা বিয়ে আটকানো গিয়েছে। তবে তার মাঝেও আরও অন্তত ২০ টি বিয়ে হয়েছে। সকলে কথা দিয়েছেন, টাকার জন্য সামাজিক কর্তব্য থেকে কোনও ভাবে পিছপা হবে না।
বাংলাদেশ সীমান্তে কোচবিহারের মেখলিগঞ্জ ব্লকের ১১৭ কিমি কাঁটাতার বিহীন। প্রায় ১ লক্ষ ৫৬ হাজার সংখ্যালঘু এবং রাজবংশী মানুষের বসবাস সেখানে। ৮টি গ্রাম পঞ্চায়েত রয়েছে ব্লকে। এ দিন ১৪০ জন প্রতিনিধি উপস্থিত ছিলেন। ছিলেন বিভিন্ন মহকুমা আদালতের বিচারকরাও। খোলামাঠে শৌচকর্ম বন্ধ করে ব্লক যেমন রাজ্যে নজর কেড়েছে তেমনিই, এই ক্ষেত্রে তা হবে বলে আধিকারিকদের আশা। মহকুমার অঞ্জুমান কমিটির সম্পাদক ইব্রাহিম মহম্মদ বলেন, ‘‘এ কাজ করে আমাদের নজির গড়তেই হবে।’’ তেমনিই, পুরোহিতদের সংগঠনের পক্ষে কৈলাস দেবশর্মা বলেন, ‘‘আজ থেকে বয়সের নথি দেখে বিয়ে দেওয়া হবে, নইলে নয়।’’
পিছিয়ে ছিলেন না ক্যাটেরার সঞ্জীব সরখেল, বা ক্ষৌরকার নিলু শীল শর্মারাও। তাঁরাও সমস্বরে জানিয়ে দিয়েছেন, ‘‘আগে বায়না নয়, আগে বয়সের নথি দেখব। তার পরে কাজ হবে।’’