জলপাই মোড়ের ল্যাম্প পোস্টে ক্যামেরা। নিজস্ব চিত্র
জাতীয় সড়ক হোক বা রাজ্য সড়ক। কিংবা জেলার কোনও গুরুত্বপূর্ণ রাস্তা। কোনও গাড়ি ট্রাফিক আইন ভাঙলেই সেই গাড়ির নম্বর ও ঘটনার বিভিন্ন মুহূর্তের ছবি সোজা চলে যাচ্ছে পুলিশের কন্ট্রোল রুমে। কারণ শহরের নজরদারি আঁটোসাটো করতে ১০৫টি সিসিটিভি ক্যামেরা বসে গিয়েছে শিলিগুড়ির বিভিন্ন প্রান্তে। মাস খানেক ধরেই পরীক্ষামূলকভাবে এই ব্যবস্থা চলছে।
কেন্দ্রীয়ভাবে তো বটেই, কমিশনারেটের অন্তর্গত প্রতিটি থানাকেই সিসিটিভি নজরদারি নিয়ে পুরোদস্তুর পারদর্শী করে তুলতে চাইছেন পুলিশের শীর্ষকর্তারা। তাই সব থানা থেকে বাছাই করা ৩-৪ জন অফিসারকে দেওয়া হয়েছে এই বিশেষ প্রশিক্ষণ। তা শেষও হয়ে গিয়েছে। এখন উদ্বোধনের অপেক্ষায় শিলিগুড়ি পুলিশের ‘সিটি সার্ভেল্যান্স সিস্টেম’।
পুলিশ সূত্রের খবর, কাল মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের সফরের সময়ই শিলিগুড়ির সিসিটিভি নজরদারি ব্যবস্থার উদ্বোধন করার ভাবনা রয়েছে কর্তাদের।
শিলিগুড়ির পুলিশ কমিশনার সুনীল কুমার চৌধুরী বলেন, ‘‘সিসিটিভি মনিটারিং পুলিশের একটি বিরাট অস্ত্র। শুধু ট্রাফিক নয়, বিভিন্ন অপরাধে তদন্তে তা গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা নেয়। নতুন শতাধিক ক্যামেরা শহর জুড়ে বসে গিয়েছে।’’ কমিশনার জানান, সমস্ত বড় রাস্তায়, গুরুত্বপূর্ণ মোড়ে পুলিশ ক্যামেরা বসেছে। পাশাপাশি বিভিন্ন বহুতল, শপিংমল, দোকানে তাঁদের পক্ষ থেকে সিসিটিভি ক্যামেরা রাখতে বলা হয়েছে। এতে শহরের নজরদারি আরও ভালভাবে করা সম্ভব হবে বলে তাঁর আশা।
নীরজ কুমার সিংহ পুলিশ কমিশনার থাকাকালীন পুলিশ হাউসিং বোর্ডের তরফে ওই কাজ শুরু হয়। বিভিন্ন ধরনের অত্যাধুনিক এবং উচ্চক্ষমতা সম্পন্ন সিসিটিভি ক্যামেরা বসানো হয়েছে। সম্প্রতি হাসপাতাল থেকে শিশু চুরির তদন্তে পুলিশের ভরসা ছিল একটি সিসিটিভি ফুটেজ। যা দেখে তদন্তে এগিয়ে ধূপগুড়ি পৌঁছায় পুলিশ। উদ্ধার হয় শিশু। তেমনিই, বর্ধমান রোডের পেট্রোল পাম্পে লক্ষাধিক টাকার চুরি বা মাটিগাড়ার মদের দোকানে চুরির চেষ্টা সবেতেই পুলিশের প্রথম ভরসা হয়ে দাঁড়ায় সিসিটিভি ফুটেজ।
পুলিশ আধিকারিকদের কথায়, সিসিটিভি ফুটেজ পেলে দুষ্কৃতী বা অপরাধের সম্পর্কে একটি সম্যক ধারণা তৈরি হয়। তা ধরেই এগোয় তদন্ত। যেমন হাকিমাপড়ায় পুলিশ পরিচয়ে রিভলবার দেখিয়ে দিনেদুপুরে এক ব্যক্তিকে তুলে নিয়ে যায় চারজন। কিন্তু ওই এলাকায় কাছাকাছি কোনও হোটেল, দোকানের সিসিটিভি ক্যামেরা না থাকায় অপরাধের কোনওরকম ছবি ধরা পড়েনি। ফলে তদন্তে নেমে বেগ পেতে হয় পুলিশকে। আবার কিছু ক্ষেত্রে ছবি বা রেকর্ডিং মিললেও তা অপরিস্কার, অস্পষ্ট হওয়ায় সেসব ঠিকঠাক করানোর জন্য পাঠাতে হয়। এই পদ্ধতিটাই অফিসারেরা বদলাতে চাইছেন। নির্দিষ্ট সময়ের ছবির ব্যবহার, সফটওয়ারে ছবি পরিস্কার করা অথবা জুম করে গাড়ির নম্বর দেখা অথবা নিমেষে ফুটেজের রেকর্ডিং মোবাইলে নিয়ে তা হোয়াটসঅ্যাপে বিভিন্ন থানার অফিসারদের পাঠানো। সবই রয়েছে এই প্রশিক্ষণে।