আম হাতে আম দরবারে মালদহে প্রার্থীরা

গোপালভোগ, হিমসাগর, ল্যাংড়া। মালদহের বাগানে বাগানে ঝুলছে সেই আম। এখনও রঙ ধরেনি আমগুলোতে। জেলার পাকা আম পেতে অপেক্ষা করতে হবে জ্যৈষ্ঠ পর্যন্ত।

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

মালদহ শেষ আপডেট: ০৯ মে ২০১৮ ০৩:২৬
Share:

প্রতীক: নির্দল প্রার্থী হাতে আম নিয়ে প্রচারে। নিজস্ব চিত্র

কারও হাতে ‘গোপালভোগ’। কেউ আবার হাতে নিয়ে ‘ফজলি’র গুচ্ছ। আম হাতে আমজনতার দরবারে এমনই ভাবে ছুটছেন প্রার্থীরা। তবে ভোটের ভেট দেওয়ার জন্য নয়, তাঁরা আমজনতার কাছে ছুটছেন প্রতীক চেনানোর জন্য। আমের জেলা মালদহে ভোটের বৈতরণী পার হওয়ার জন্য বহু নির্দল প্রার্থীরই প্রতীক ‘আম’। আর সেই আম নিয়েই বাড়ি বাড়ি প্রচার চালাচ্ছেন প্রার্থীরা। দেওয়াল লিখন থেকে শুরু করে ফ্লেক্স। সর্বত্রই আমের ছবি দিয়ে প্রচার চালাচ্ছেন তাঁরা। ফলে জেলার বাগান গুলির মতোই ভোটের ময়দানও হয়ে উঠেছে এখন যেন আমময়।

Advertisement

গোপালভোগ, হিমসাগর, ল্যাংড়া। মালদহের বাগানে বাগানে ঝুলছে সেই আম। এখনও রঙ ধরেনি আমগুলোতে। জেলার পাকা আম পেতে অপেক্ষা করতে হবে জ্যৈষ্ঠ পর্যন্ত। তবে তাতে কি, কাঁচা সবুজ রঙের আম নিয়েই বাড়ি বাড়ি ছুটছেন জেলার বহু নির্দল প্রার্থীই। জ্যৈষ্ঠে যেমন আম পাকবে, তেমনই ওই মাসেই পাকবে ভোটের ফলও। তাই কাঁচা আম হাতেই ভোটারদের কাছে হাজির হবিবপুরের লতিকা সিংহ থেকে শুরু করে শিপুল সাহারা।

কেন আম প্রতীক নিয়ে ভোটে লড়ছেন? হবিবপুরের মধ্যম কেন্দুয়া গ্রামের বাসিন্দা লতিকা সিংহের সটান জবাব, “বিগত দিনে সিপিএমের প্রতীকে জিতে পঞ্চায়েত সদস্য হয়েছিলাম। তবে এখন সিপিএমের প্রতীক মানুষ পছন্দ করছেন না।’’

Advertisement

তিনি জানান, গ্রামের মানুষেরা চান তিনিই আবার ভোটে দাঁড়ান। তিনি বলেন, ‘‘তাই ভেবেছিলাম এমন প্রতীক বেছে নেব, যা সকলের কাছেই পছন্দ। আর আম পছন্দ করে না এমনই মানুষ কি মালদহে আছেন?” তিনি এও বলেন, “ভোটারকে প্রতীক চেনানোর প্রয়োজন পড়ছে না। শুধু মুখে বলতে হচ্ছে আমার প্রতীক এবারে আম।”

লতিকা দেবীর মতোই আম প্রতীক নিয়ে নির্দল হয়ে লড়ছেন আইহোর ১৮৮ নম্বর বুথের বাসিন্দা শিপুল সাহা। তিনি ব্যালাটের নমুনা কিংবা ফ্লেক্স নিয়ে নয়, এক গুচ্ছ ফজলি আম নিয়েই প্রচার চালাচ্ছেন। হাতে আম নিয়ে গিয়ে প্রচারে সুবিধে হচ্ছে বলে জানান তিনি। তিনি বলেন, “এখন আমের মরসুম চলছে। মানুষের বাড়িতে বাড়িতে আম। এই সময়ের আম চিহ্নের থেকে ভাল প্রতীক আর কিছু হয় না।”

জেলা পরিষদে নির্দল প্রার্থী রয়েছেন ৬০ জন। আর পঞ্চায়েত সমিতিতে ৩৯৯ এবং গ্রাম পঞ্চায়েতে নির্দল প্রার্থী রয়েছেন ১৪৭২জন। জেলা পরিষদ কিংবা পঞ্চায়েত সমিতি স্তরে আম নিয়ে নির্দল প্রার্থীর সংখ্যা না থাকলেও গ্রাম পঞ্চায়েত স্তরে বহু নির্দল প্রার্থীর প্রতীক আম। হবিবপুর থেকে বামনগোলা, হরিশ্চন্দ্রপুর থেকে ইংরেজবাজার। পুরাতন মালদহ থেকে বৈষ্ণবনগর। জেলার ১৫টি ব্লকেই প্রায় তিন শতাধিক প্রার্থী এ বারে আম প্রতীক নিয়েই ভোটে লড়ছেন। আর প্রার্থীদের হাতে আম দেখে মুচকি হাসছেন ভোটারেরাও।

রামাপদ সিংহ, বিনোদ সরকারেরা বলেন, “আম হাতে প্রচার কখনও দেখিনি। বাগানের আম সপ্তাহ খানেকের মধ্যেই পেকে যাবে। তবে এই নির্দল প্রার্থীদের আম কতটা পাকল তা সময়েই জানা যাবে।”

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন