পুলিশি হস্তক্ষেপে শিলিগুড়ির একটি আবাসনে শুরু হয় অবৈধ নির্মাণ ভাঙার কাজ। —নিজস্ব চিত্র।
অবৈধ নির্মাণ ভাঙতে গিয়ে আরও একবার বাধার মুখে পড়তে হল পুরকর্মীদের। মঙ্গলবার শিলিগুড়ি পুরসভার ৪৬ নম্বর ওয়ার্ডের চম্পাশরী এলাকায় একটি অবৈধ নির্মাণ ভাঙতে যান পুরকর্মীরা। সেখানেই পুরসভার বিরুদ্ধে ঢাল হয়ে দাঁড়ান খোদ তৃণমূল কাউন্সিলর দিলীপ বর্মণ। পুরকর্মীদের সঙ্গে চলে তুমুল বচসা। দিলীপের দাবি, এই নির্মাণ কোনও ভাবেই ভাঙতে দেওয়া হবে না। ঘটনাকে কেন্দ্র করে উত্তেজনা তৈরি হয়। পরিস্থিতি স্বাভাবিক করতে ঘটনাস্থলে পৌঁছোয় প্রধাননগর থানার পুলিশ। ঘিরে ফেলা হয় গোটা এলাকা। আটকানো হয় দিলীপকেও। শেষমেষ পুলিশি হস্তক্ষেপে শুরু হয় অবৈধ নির্মাণ ভাঙার কাজ।
অভিযোগ, শিলিগুড়ির একটি আবাসনকে ঘিরে একাধিক জায়গায় অবৈধ নির্মাণ রয়েছে। সেই নির্মাণগুলি পরিকল্পনা বহির্ভূত। ওই আবাসনে একাধিক বার পুরসভার তরফ থেকে নোটিস দেওয়া হয়েছে। কিন্তু তার কোনও সদুত্তর না মেলায়, মঙ্গলবার সেই নির্মাণ ভাঙতে যান পুরকর্মীরা। সেখানেই বাধে ঝামেলা। ঢাল হয়ে দাঁড়ান খোদ তৃণমূল কাউন্সিলর। পরে পুলিশি হস্তক্ষেপে শুরু হয় অবৈধ নির্মাণ ভাঙার কাজ।
এই ঘটনার পর মেয়র গৌতম দেব ও ডেপুটি মেয়র রঞ্জন সরকাররের বিরুদ্ধে একের পর এক তোপ দাগেন দিলীপ৷ তাঁর কথায়, “শুধুমাত্র ৪৬ নম্বর ওয়ার্ড কেন? এখান থেকে আমি টাকা তুলে দিই না মেয়র ও ডেপুটি মেয়রকে। সেই কারনেই এই ভাঙা? যে বহুতলের বছর সাতেক আকে এনওসি দেওয়া হয়েছে, আজ তা কী ভাবে অবৈধ হল?” দিলীপের অভিযোগ, “এটা গৌতম ও রঞ্জনের টাকার বিনিময়ে কাজ। ওরা আমাকে খুনও করতে পারে এই ঘোষণা আমি করে দিলাম।” তাঁর হুঁশিয়ারি, “আগামীতে এই ওয়ার্ডবাসীদের নিয়ে কর্পোরেশন দখল করব।”
অন্য দিকে দিলীপের এই আচরণে বেশ অস্বস্তিতে মেয়র ও ডেপুটি মেয়র। গৌতম বলেন, “এ সব ফালতু কথা। যখন যা হবে তখন দেখা যাবে। এ সবের কোনও উত্তর নেই।” রঞ্জন বলেন, “ওঁর প্রশ্নের কোনও উত্তর নেই।”
উল্লেখ্য, মাস দুয়েক আগেও কর্পোরেশনে বোর্ড মিটিং চলাকালীনও দিলীপের আচরণে বেশ অস্ত্বিত্বে পড়তে হয় তৃণমূলকে৷ ভরা সভা থেকে বার করে দেওয়া হয়েছিল দিলীপকে। সেই সময়ও মেয়র ও ডেপুটি মেয়রের বিরুদ্ধে আর্থিক লেনদেনের অভিযোগ তুলে সরব হয়েছিলেন দিলীপ। সেই ঘটনার রেশ কাটতে না কাটতে আবার অবৈধ নির্মাণ ভাঙাকে কেন্দ্র করে একই অভিযোগ।