North Bengal medical College

মেডিক্যালে শিশু বদলের অভিযোগ কর্তৃপক্ষের বিরুদ্ধেই

দম্পতির অভিযোগ, ৭ জানুয়ারি রাতে উত্তরবঙ্গ মেডিক্যালে পুত্রসন্তানের জন্ম হয়। ওই রাতেই সদ্যোজাত অসুস্থ বলে ‘সিক নিউ বর্ন কেয়ার ইউনিটে নিয়ে চিকিৎসা চলছিল।

Advertisement

সৌমিত্র কুন্ডু

শিলিগুড়ি শেষ আপডেট: ১৪ জানুয়ারি ২০২৪ ০৫:৩১
Share:

—প্রতিনিধিত্বমূলক ছবি।

এই নিয়ে এক বছরের ব্যবধানে দুই সদ্যোজাতকে হাসপাতালের ভুলে হারালেন বলে অভিযোগ তুলেছেন দম্পতি। অভিযোগ, প্রথম বার চিকিৎসার ভুলে মারা যায় সদ্যোজাত এক ছেলে। আর দিনকয়েক আগে উত্তরবঙ্গ মেডিক্যালে তাঁদের আর এক ছেলে জন্মায়। অসুস্থ বলে চিকিৎসা চলছিল সদ্যোজাতের। আচমকা ওই শিশুটিও মারা গিয়েছে জানালে দম্পতির অভিযোগ, ওই মৃত শিশু তাঁদের নয়। শিশু বদল করা হয়েছে। তা নিয়ে পুলিশে অভিযোগ জানানোয় শোরগোল পড়ে যায়। গত বছর ফেব্রুয়ারিতে চিকিৎসার ভুলে মারা গিয়েছিল তাদের সদ্যোজাত সন্তান। তা নিয়ে চিকিৎসায় গাফিলতির অভিযোগ তোলেন জলপাইগুড়ি হাসপাতাল এবং উত্তরবঙ্গ মেডিক্যালের বিরুদ্ধে। দিনের পর দিন ঘুরেও তদন্ত রিপোর্ট না দেওয়ায় ‘দিদিকে বলো’য় অভিযোগও করেন। এর পরে ময়নাতদন্তের রিপোর্ট পেলেও ফরেনসিক রিপোর্টের জন্য এখনও ঘুরছেন বলে অভিযোগ।
গত ৭ জানুয়ারি উত্তরবঙ্গ মেডিক্যালে জন্মানো শিশুটির বিষয়ে দম্পতির অভিযোগ পেয়ে দেহ ময়নাতদন্ত করিয়েছে পুলিশ। শিশুর দেহটি সংরক্ষিত রাখা হয়েছে। সেই সঙ্গে বাবা মায়ের ডিএনএ পরীক্ষা করানো হচ্ছে। শনিবার এ জন্য রক্ত দিলেন বাবা। মায়ের রক্তও ইতিমধ্যেই নেওয়া হয়েছে। উত্তরবঙ্গ মেডিক্যালের সুপার সঞ্জয় মল্লিক বলেন, ‘‘মৃত শিশু এই দম্পতিরই। কারণ, শিশুর হাতে ‘নম্বর ট্যাগ’ থাকে, মায়ের হাতেও তা থাকে। শিশুর পায়ের ছাপ রাখা হয়। সে সব দেখেই দেওয়া হয়েছে। তাঁরা অস্বীকার করছেন। সে কারণে প্রক্রিয়া মেনে তদন্ত করতে তাঁদের পুলিশে অভিযোগ করতে বলা হয়েছিল। সেই মতো ব্যবস্থা নেওয়া হচ্ছে। এর আগেও তাঁদের সদ্যোজাত মারা যাওয়া নিয়ে অভিযোগ করেছিলেন শুনেছি।’’ হাসপাতাল সূত্রে জানা গিয়েছে, শিশুটির ওজন কম ছিল। সে জন্য শিশুটির শ্বাসকষ্টের সমস্যা হচ্ছিল।
দম্পতির অভিযোগ, ৭ জানুয়ারি রাতে উত্তরবঙ্গ মেডিক্যালে পুত্রসন্তানের জন্ম হয়। ওই রাতেই সদ্যোজাত অসুস্থ বলে ‘সিক নিউ বর্ন কেয়ার ইউনিটে নিয়ে চিকিৎসা চলছিল। অথচ তা পরে জানানো হয়। বাচ্চার শ্বাসকষ্ট বলে জানানো হয়েছিল। ৯ জানুয়ারি সকালে জানানো হয়, বাচ্চা মারা গিয়েছে। বাবা-মা দু’জনেরই অভিযোগ, ‘‘যে শিশুটিকে আমাদের মৃত সন্তান বলে দেখানো হয় তা আমাদের নয়। আমরা আগে দেখেছি সদ্যোজাত ছেলের পা লম্বা। অথচ এই মৃত শিশুর পা ছোট। আমাদের সন্তানকে অন্যত্র দিয়ে এখন মৃত অন্য শিশু আমাদের দেওয়া হচ্ছে। অভিযোগ করেছি।’’ বাবার অভিযোগ, গত বছর ফেব্রুয়ারিতে জলপাইগুড়ির বাড়িতে স্ত্রী পুত্রসন্তানের জন্ম দেন। পরে এলাকার আশাকর্মীর পরামর্শে কয়েক ঘণ্টা পরে তারা সন্তানকে নিয়ে নাভিরজ্জু কাটাতে জলপাইগুড়ি হাসপাতালে যান। সেখানে শিশুর জন্ডিস আছে জানিয়ে ভর্তি করা হয়। কয়েক দিন পরে জানানো হয়, সন্তানের অবস্থা খারাপ। উত্তরবঙ্গ মেডিক্যালে রেফার করা হচ্ছে। পরে ছেলেকে আর বাঁচানো যায়নি। এর পর তা নিয়ে পুলিশে অভিযোগ করেছিলেন তাঁরা।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন