আসমানি: মন ভোলানো রঙ হলেও এই আবির ব্যবহারে ক্ষতির আশঙ্কা করছেন বিশেষজ্ঞদের। ছবি: মনোজ মুখোপাধ্যায়
বছরের পর বছর ধরে বিহার, ভুটান থেকে সস্তা পাউডার নিয়ে এসে মালদহে তৈরি হচ্ছে নিম্নমানের আবির। সেই আবির ব্যবহারের ফলে ত্বকের ক্ষতির সম্ভাবনা রয়েছে বলে দাবি চর্মরোগ বিশেষজ্ঞদের। তাই দোলে নিজেদেরকে ভেষজ আবির ব্যবহারের পরামর্শ দিচ্ছেন তাঁরা।
জেলা জুড়েই নিম্নমানের আবিরের রমরমা কারবার চললেও নজরদারি নেই প্রশাসনের। যদিও বিষয়টি খতিয়ে দেখে প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ করার আশ্বাস দিয়েছেন মালহের অতিরিক্ত জেলাশাসক আর বিমলা। তিনি বলেন, ‘‘শীঘ্রই রঙের কারখানাগুলিতে অভিযান চালানো হবে।’’
জেলার পুরাতন মালদহের সাহাপুর, ইংরেজবাজারের বিএস রোড, রতুয়া, গাজল ব্লকে রয়েছে রং ও আবির তৈরির কারখানা। ওই কারখানাগুলির অনেকগুলিতেই নিয়ম না মেনে রং ও আবির তৈরি হচ্ছে বলে অভিযোগ। কারখানাগুলি সূত্রে জানা গিয়েছে, বিহার ও ভুটান থেকে নিয়ে আসা হয় বিভিন্ন ধরনের পাথর থেকে তৈরি পাউডার। মাত্র দু থেকে তিন টাকা কেজি দরে সেই পাউডার আনা হয়। তারপর কারখানাগুলিতে লাল, সবুজ ও হলুদ রং মিশিয়ে তৈরি হয় আবির। মেশানো হয় সুগন্ধীও।
পাইকারি বাজারে ১০ থেকে ১৫ টাকা কেজি দরে বিক্রি করা হয় সেই আবির। খোলা বাজারে তা মেলে ৩০ থেকে ৩২ টাকা কেজি দরে। ক্যালসিয়াম পাউডারের আবির তৈরি হলেও তার দাম বেশি বলে বাজারে চাহিদা রয়েছে সস্তার ওই আবিরই। রং ছাড়াও আবিরে নানা রাসায়নিকও মেশানো হয়। প্রস্তুতকারকেরা বলেন, ‘‘দামী আবিরের চাহিদা কম থাকায় আমাদের বাধ্য হয়েই নিম্নমানের সামগ্রী দিয়ে আবির তৈরি হচ্ছে।’’
কম দামে মিললেনও নিম্নমানের আবির ব্যবহারে ত্বক পুড়ে যাওয়ার আশঙ্কা রয়েছে বলে জানিয়েছেন চর্মরোগ বিশেষজ্ঞরা।
মালদহ মেডিক্যাল কলেজ ও হাসপাতালের অধ্যাপক চর্মরোগ বিশেষজ্ঞ কপিলদেব দাস বলেন, ‘‘রং বা আবিরে নানান রাসায়নিক থাকায় ত্বক পুড়ে যায়। ত্বকে কালো ছোপ ছোপ দাগ দেখা যায়। এ ছাড়া অ্যালার্জি ঘটিত রোগও দেখা দেয়। শুধু তাই নয়, কোনওভাবে পেটে গেলে বিষক্রিয়া হওয়ারও সম্ভাবনা রয়েছে।’’